যেসকল ছেলে-মেয়েরা দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণ করে এই ভালো ভালো উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে স্থান করে নেয়, তাদের প্রায় সবাই নিজেদের বার বছরের স্কুল-কলেজ জীবনে যথেষ্ট মনোযোগ দিয়েই পড়াশোনা করে। অনেককে বইয়ের পোকা বললেও ভুল বলা হবে না। পড়াশোনার পিছনে এত বেশি পরিশ্রম করে মেধাটাকে কাজে লাগিয়েছে বলেই, আজ তারা দেশসেরা প্রতিষ্ঠানে পড়তে পারছে। পরিশ্রম না করলে একজন ছাত্র যতই মেধাবী হোক না কেন, তার পক্ষে কখনোই ভালো ফলাফল করা সম্ভব নয়।
উচ্চশিক্ষা স্তর প্রকৃতপক্ষে এতদিনের এই জ্ঞানকেই আরো বৃদ্ধি করা বা এই জ্ঞানের প্রায়োগিক দিকগুলো নিয়ে কাজ শিখার সুযোগমাত্র। সুতরাং, এখানেও যদি কেউ তার পড়াশোনার কাজগুলো নিয়ে পরিশ্রম চালিয়ে যায়, তবে সে নিঃসন্দেহে অনেক বেশি এগিয়ে যাবে।
কিন্তু দুঃখজনক হচ্ছে, উচ্চশিক্ষায় এসে আমরা কে কত বেশি পড়ছি, তা তো দূরের কথা, বরং কে কার চেয়ে কত কম পড়াশুনা করেছি – সেটা প্রমাণে ব্যস্ত থাকি। আমরা যখন আমাদের এক বন্ধুকে সারাদিন অনেক পড়াশুনা করতে দেখি, আমরা তার এই পরিশ্রমের প্রশংসা তো করিই না, বরং তাকে সবাই মিলে হেয় করতে শুরু করি। এর ফলে ভার্সিটিগুলোতে, এমনকি কোন কোন ক্ষেত্রে কলেজগুলোতেও, একটি পড়াশুনাবিরোধী ট্রেন্ড গড়ে উঠে। অনেকে বিভ্রান্ত হয়ে পড়াশুনা থেকেই দূরে সরে যায়। অনেকক্ষেত্রে দেখা যায়, কেউ কেউ বাইরে বলে বেড়ায় – পড়াশুনা করি না, সে লুকিয়ে পড়াশুনা করে ঠিকই ভালো ফলাফল করে। আর তার আরেক বন্ধু যে প্রথমজনের কথা বিশ্বাস করে নিজে হেলাফেলা করে কম পড়ে, সে খারাপ করে।
আমার মনে হয়, আমাদের এই ভয়াবহ লুকোচুরির সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে আসা উচিত। আমরা অবশ্যই উচ্চশিক্ষা নিতেই ভার্সিটিতে এসেছি, অন্যসব সামাজিক কার্যক্রমের পাশাপাশি লেখাপড়াটাও আমাদেরকে অবশ্যই করতে হবে। রেজাল্ট যাই হোক না কেন, নিজের ডিপার্টমেন্ট related জ্ঞান তো অবশ্যই অর্জন করতে হবে। তাই শিক্ষালাভের ইচ্ছাকে অবশ্যই স্বাগত জানাতে হবে। নাহলে দেশই অজ্ঞানতায় ডুবে যাবে।
আরও পড়ুনঃ Caveman Syndrome: আধুনিক যুগের জন্য আমরা প্রস্তুত নই
- ভর্তি পরীক্ষার মৌসুমে মানসিক প্রস্তুতি - March 18, 2017
- ক্রমশ ছোট হয়ে আসা পাঠ্যপুস্তক… - March 18, 2017
- বেশি পড়ালেখা করলেই ‘আঁতেল’? - March 18, 2017