নিজের অনলাইন কোর্স তৈরি করা উচিত কেন?

দিনের পুরোটা সময় নিশ্চয়ই আপনার কাজে ব্যয় হয় না। ঘড়ির কাটার ফাঁক গলিয়ে অবশ্যই আপনার হাতে থাকে বাড়তি কিছু সময়, যার বেশিরভাগ হয়তো আপনি বিশ্রাম করে, কিংবা নিজের পছন্দের কোনো কাজ করে পার করতে ভালোবাসেন। কেমন হয় যদি এই সময়টুকু ব্যয় করে আপনি এমন কিছু করেন যা আপনাকে দেবে সম্পূর্ণ নতুন, উঠতি একটি ইন্ডাস্ট্রির স্বাদ?  শুধু তাই নয়, পাশাপাশি আপনি পাবেন অর্থ উপার্জনেরও সুযোগ – যা কিনা আপনার কাজের ওপর নির্ভর করে প্রতিমাসেই আপনার ব্যাংক একাউন্টে যোগ হবে। ব্যবসা কিংবা শেয়ার মার্কেটের কথা বলছিনা, বলছি আপনার নিজের জ্ঞান ও দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে অনলাইনে নিজের অনলাইন কোর্স তৈরী করার কথা!

সারা বিশ্বে এখন তৈরী হয়েছে এমন অনেক স্টার্টআপ যারা প্রযুক্তির অসীম শক্তির সাহায্যে শিক্ষাকে পৌঁছে দিচ্ছে আগ্রহী শিক্ষার্থীদের একদম দ্বারপ্রান্তে। বিদেশি নানান ওয়েবসাইটে গিয়ে আপনি কয়েক ক্লিকেই ভর্তি হয়ে যেতে পারেন জনপ্রিয় অনেক এক্সপার্টদের অনলাইন কোর্সে, সহজেই শিখে ফেলতে পারেন প্রেজেন্টেশন বানানো, এক্সেল, এমনকি প্রোগ্রামিং এর মতো জটিল জিনিসও। তবে সেই ক্ষেত্রে অনেক সময় ভাষা অনেক বড় একটি বাধা হয়ে দাঁড়ায়। শিক্ষার্থীরা অনেকসময় ইংরেজি ভাষার এই কোর্সগুলো পুরোপুরি বুঝতে পারেন না, যার ফলে কোর্স কিছু অংশ করেই আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। তা ছাড়াও, কোনো জটিল বিষয় আরেকটু ভালো করে বুঝতে চাইলে কোর্স ইন্সট্রাক্টারের কাছ থেকে যে জেনে নিবে – তার সুযোগও নেই। তবে এই কাজগুলো সহজেই করা হয় আমাদের “বহুব্রীহি” ওয়েবসাইটটিতে। 

২০১৮ সালের গোড়ার দিকে বুয়েটের দুই তরুণ উদ্যোক্তার হাত ধরে বহুব্রীহি নামক এই এডটেক স্টার্টআপের যাত্রা শুরু হয়। লক্ষ্য একটাই – কম খরচে বাংলাদেশি ছাত্রছাত্রীদের কাছে বিশ্বমানের অনলাইন কোর্স পৌঁছে দেয়া, যাতে তারা নিজেদের স্কিল বাড়াতে পারে। মাত্র ২ বছরের মাথায় আজ তাদের ওয়েবসাইটে ভর্তি আছে ৬০,০০০ হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী রয়েছে। কম্পিউটার প্রোগ্রামিং, IELTS, GRE, Machine Learning সহ আরো নানা বিষয়ের ওপর তৈরী প্রায় ৩৫টিরও বেশী কোর্স। তো এতসব আয়োজনের মাঝে আপনার গল্পটি কোথায় এসে জোড়া লাগছে? কেনই বা এত আগ্রহী শিক্ষার্থীদের অপরিসীম কৌতূহলকে জয় করার জন্য আপনি নিজের অনলাইন কোর্স তৈরী করবেন? আসুন জেনে নেয়া যাক!  

আপনার দক্ষতার সদ্ব্যবহার করুন

আমরা সবাই কোনো না কোনো কাজে পারদর্শী। ধরুন আপনি অনেক ভালো পাওয়ারপয়েন্ট প্রেজেন্টেশন বানাতে পারেন।  কয়েক মিনিটেই আপনার হাতের ছোঁয়ায় একটি সাদামাটা প্রেজেন্টেশন হয়ে ওঠে একদম প্রফেশনাল, কর্পোরেট একটি প্রেজেন্টেশন। ক্যাম্পাসে কিংবা অফিসে আপনার রয়েছে যথেষ্ঠ নামডাক। আর প্রেজেন্টেশনের দিনগুলোর আগে থেকেই আপনার সামনে সবাই ধরনা দিতে শুরু করে।  তো এই দক্ষতা কে কাজে লাগিয়ে যদি একটি অনলাইন কোর্স তৈরী করেন তাতে ক্ষতি কি? 

কথায় আছে – যে পড়ায়, সেই-ই সবচেয়ে বেশি শিখে।  কথাটি আসলেই সত্য, কারণ শত শত শিক্ষার্থীকে মাথায় রেখে আপনি যখন অনলাইন কোর্স তৈরী করবেন, তখন অবস্যই আপনাকে নতুন করে সব খুঁটিনাটি ঘেঁটে দেখতে হবে, রাখতে হবে আপনার ফিল্ডের নিত্যনতুন সব খবরাখবর। এতে করে আপনি যে শুধুমাত্র চলমান বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলবেন তা নয়, বরং অনেকটা স্বয়ংক্রিয়ভাবেই বাড়বে আপনার নিজের দক্ষতা। তরুণদের কর্মক্ষমতা বাড়াবে বা যা শিখতে তারা আগ্রহী হবে এমন কিছুতে  যদি আপনি পারদর্শী হন, তাহলে দেরি না করে আজই বানিয়ে ফেলতে পারেন নিজের একটি অনলাইন কোর্স!  

নিজের “এরিয়া অফ এক্সপার্টিজ” আরও পাকাপোক্ত করে তুলুন

আপনি কি জানেন যে আইনস্টাইন ভায়োলিন বাজাতে ভালোবাসতেন? হ্যাঁ, মহান এই বিজ্ঞানীর সংগীতের প্রতি ছিল বিশেষ ঝোঁক। তাহলে তিনি তার ভায়োলিন বাজানোর জন্য পরিচিতি না পেয়ে পদার্থবিজ্ঞানের গুটিকয়েক ফর্মুলা আবিষ্কার করে কিভাবে বিশ্বদরবারে পরিচিত পেলেন? কারণ একটাই, কালজয়ী এই বিজ্ঞানী খুব বুদ্ধিমানের মতো তার ‘এরিয়া অফ এক্সপার্টিস’, অর্থাৎ যে বিষয়ে তিনি অনেক দক্ষ তাতে পূর্ণ মনোযোগের সাথে কাজ করেছেন। সময়ের সাথে সাথে পদার্থবিজ্ঞানের শাখায় গড়ে তুলেছেন নিজের আধিপত্য। 

প্রোগ্রামিং বিষয়ে আপনার রয়েছে অনেক জ্ঞান? অন্য কোডার ও প্রোগ্রামারদের মাঝে নিজের নাম পাকাপোক্ত করতে চান? প্রোগ্রামিং বিষয়ে আপনার নিজের অনলাইন কোর্স তৈরী করে সকলের সামনে নিজেকে মেলে ধরতে পারলে তো ভালোই হয়, তাই না?

নিজের অনলাইন কোর্স এর মাধ্যমে ব্যবসা বা স্টার্টআপকে প্রোমোট করুন

আজকের এই যুগে এডভার্টাইজিং মোড় নিয়েছে অন্য দিকে।  নিজের ব্যবসার প্রসার ঘটাতে আজ যে শুধুমাত্র মাইকিং বা পেপার বিজ্ঞাপন দিতে হয়, তা নয়।  বরং, বুদ্ধি খাটিয়ে বের করে নিতে পারেন অভিনব কিছু পদ্ধতি। আপনার অনলাইন কোর্সটিতে সুকৌশলে আপনি নিজের স্টার্টআপের নানান উদাহরণ দিতে পারেন, শিক্ষার্থীদেরকে দিতে পারেন আপনার কোম্পানিরই বিভিন্ন কেইস স্টাডি।  এমনকি ঘুরে দেখার জন্য কোর্সের বিভিন্ন অংশে আপনার প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট লিঙ্কও দিয়ে রাখতে পারেন।  এভাবেই হাজারো মানুষের চোখের সামনে আপনার কোম্পানির নাম চলে আসবে এবং এদের মাঝ থেকেই হয়তো কেউ আপনার কাস্টমারে রূপান্তরিত হবে। 

যেমন EZASSIST নামের একটা চ্যাটবট তৈরির কোম্পানি  ওদের ব্র্যান্ডিং আর ইউজার একুইজিশনের জন্য আমাদের সাথে ডেটা ড্রিভেন মার্কেটিং, কনভার্সেশনাল মার্কেটিং – এসবের উপর কোর্স বানাচ্ছে।  এতে যে শুধু আগ্রহী শিক্ষার্থীরা উপকৃত হয় তা নয়, বরং EZASSIST ও খুঁজে পাচ্ছে তাদের কাস্টমার।

আরও পড়ুনঃ সেলফ-প্রোমোশন নাকি নিজের ঢোল নিজে পেটানো?

সোশ্যাল মিডিয়ায় বাড়ান আপনার পরিচিতি

আপনি চাকরি করেন বা ব্যবসা করেন – দিনশেষে নাম-যশের কিন্তু আলাদা একটা বিশেষত্ব রয়েই যায়।  আপনার সেক্টরের চেনাপরিচিত লোকজনের সঙ্গে খাতির জমিয়ে ফেলতে পারলে শিখতে পারবেন নতুন আরো অনেক কিছু, আগে থেকেই জানতে পারবেন আপনাদের ইন্ডাস্ট্রির গতিবিধি। 

আর সোশ্যাল মিডিয়ার এই যুগে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও লিঙ্কড-ইনে ফ্যান-ফলোয়ার কে না চায়? অনলাইন কোর্স তৈরী করার মাধ্যমে শুধুমাত্র নিজের ইন্ডাস্ট্রির গন্ডির মধ্যে নয়, নতুন আরো অনেকের কাছেই পাবেন পরিচিতি। ফেসবুক, ইউটিউবসহ অন্যান্য সাইটে বহুব্রীহি থেকে যখন আপনার অনলাইন কোর্সটিকে প্রোমোট করা হবে, তখন আস্তে আস্তে করে সকলেই জানতে শুরু করবে আপনার নাম। সেই সাথে জানবে আপনার বিশেষ স্কিল বা গুণ সম্পর্কে। এই খ্যাতিকে কাজে লাগিয়েই আপনি অদূর ভবিষ্যতে সকলের মাঝে আপনার নিজের “পার্সোনাল ব্র্যান্ড” তৈরী  করে নিতে সক্ষম হবেন।

ক্যামেরার সামনে কথা বলার জড়তা কাটিয়ে তুলুন সহজেই

আপনি খুব ভালো করেই জানেন যে ইন্টারনেটের এই যুগে বেশিরভাগ মিটিং ও ক্লাস অনুষ্ঠিত হচ্ছে অনলাইনে।  গুগল মিট হোক কিংবা জুম, আজকাল চেনাপরিচিত মানুষের সাথে দরকারি সকল কাজ বা তথ্য আদানপ্রদান করতে হয় স্ক্রীনের এপার-ওপার থেকে। অনেক সময় দেখা যায় যে অনলাইনে সাবলীলভাবে কথা বলতে বা কোনো কিছু প্রেজেন্ট করতে আমরা একটু জড়তা অনুভব করি।  যেখানে সামনাসামনি অন্যদেরকেও কোনো কিছু বুঝিয়ে দিতে আমরা খুবই পারদর্শী, সেখানে সেই একই জিনিস অনলাইনে বোঝাতে গেলে এক অজানা ভয় এসে মনে বাসা বাঁধে।  

আপনি যদি অনলাইনে নিজের কোর্স তৈরী করেন তাহলে আস্তে আস্তে এই ভয়টুকু কেটে যাবে, এমনকি ক্যামেরার দিকে তাকিয়েও একদম স্বাভাবিকভাবে আপনি কথা বলে যেতে পারবেন।  সুতরাং, নিজের পার্সোনাল ডেভেলপমেন্ট এর কথা চিন্তা করে হলেও অনলাইন কোর্স তৈরী করে দেখতে পারেন। দেখা যাবে, এই জড়তা কাটানোর ফলেই আপনি হয়ে যেতে পারেন আগামীর ইন্টারনেট সেলেব্রিটি!  

সময় ও শ্রম দিন, তবে থাকুন একদম চিন্তামুক্ত

“অনলাইন কোর্স না করিয়ে আমি বরং একটি ফাস্ট ফুডের ব্যবসা কিংবা শেয়ার বাজারে ইনভেস্ট করলে কেমন হয়?” হ্যা, এই ভাবনাটি আপনার মাথায় আসতেই পারে এবং এই ব্যাপারটি চিন্তা করাটা অবশ্যই যৌক্তিক। যেখানে আপনি চাইলেই আপনার হাতের ফ্রি সময়টুকুকে ব্যবহার করে নিজের ছোট ব্যবসা দাঁড় করতে পারেন, বা মুনাফা লাভের আশায় শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করতে পারেন, সেখানে অনলাইন কোর্স তৈরী করে লাভটা কি? লাভ হচ্ছে – শান্তি।  

একটি ব্যবসা শুরু করা মাত্রই আপনি লাভের চেহারা দেখবেন – তা ভাবলে আপনি নিতান্তই আকাশ কুসুম কল্পনা করছেন। আর শেয়ার বাজারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রেও রয়েছে যথেষ্ট ঝুঁকি।  সেই তুলনায়, নিজের অনলাইন কোর্স গুটিয়ে যাবার কোনো সুযোগ নেই আর কখন, কিভাবে আপনার কোর্সটি ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দিবেন, তা নিয়েও ভাবনার প্রয়োজন নেই।  আপনি কেবল আপনার ট্যালেন্ট কাজে লাগিয়ে নিজের অনলাইন কোর্সটি তৈরী করবেন আর এই কোর্সের প্রোমোশন ও আনুষঙ্গিক সকল বিষয়ে বুঝে নিবে বহুব্রীহি।

সুতরাং, নিজের সময় ও শ্রমকে কাজে লাগিয়ে এমন কিছু তৈরী করুন যাতে দুশ্চিন্তা বাড়ার চেয়ে বরং আগের চেয়ে একটু কমে যায়। তারচেয়েও বড় কথা, বহুব্রীহিতে সাথে অনলাইন কোর্স তৈরী করার সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে যে আপনি একবার কোর্স তৈরী করে ফেললে সেই কোর্সের ডিস্ট্রিবিউশনের মাথাব্যথাটি সম্পূর্ণভাবে বহুব্রীহির। নিজের কোর্স প্রোমোট করার জন্য আপনার বারবার লাইভে এসে ক্লাস নিতে হবেনা।  একবারের খাটনিতেই বাকী পথ মসৃণ!    

বিশ্বসেরা অনলাইন ট্রেইনারদের কাতারে যোগ দিন

ইউটিউব কিংবা ফেসবুক একটু ঘাটলেই দেখবেন রবিন শর্মা, গ্যারি ভেইনারচাক বা টনি রবিন্সকে – যারা তাদের নিজেদের অনলাইন কোর্সসমূহ তৈরী করে পৌঁছে গিয়েছেন সাফল্যের চূড়ান্তে। আজ তাদের একেকটি  অনলাইন কোর্সে প্রি-বুকিং করে কয়েক হাজার মানুষ। কয়েক লক্ষ মানুষ নিয়ে কয়েকদিন ব্যাপী সেমিনারের আয়োজন করেন তারা এবং তাদের কাছ থেকেই পরামর্শ নেন বিশ্বের নামকরা খেলোয়াড়, মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাগণ এমনকি হরেক দেশের মন্ত্রীরাও!

এই সাবজেক্ট ম্যাটার এক্সপার্টরাও কিন্তু এরকম অনলাইন কোর্স তৈরী করে আগে নিজেদের নাম ফুটিয়েছেন, নিজেদের দেশের সীমানার বাইরে তাদের কাজের প্রসার ঘটিয়েছেন আর তার ফলে আজ গড়ে তুলেছেন লক্ষাধিক ফ্যান-ফলোয়িং। যেহেতু বহুব্রীহি আপনাকে নিজের অনলাইন কোর্স তৈরী করার সুযোগ করে দিচ্ছেই, তাহলে আপনার এরকম একটি চেষ্টা  করে দেখতে ক্ষতি কি?

আরও পড়ুনঃ পার্সোনাল ব্র্যান্ডিং: বর্তমান দশকের প্রস্তুতি

নিজের অনলাইন কোর্স করে গড়ে তুলুন প্যাসিভ ইনকামের সুবর্ণ সুযোগ

অনলাইন কোর্স করে গড়ে তুলুন প্যাসিভ ইনকামের সুবর্ণ সুযোগ

বার্কশায়ার হ্যাথেওয়ের চেয়ারম্যান ওয়ারেন বাফেট বিশ্বের অন্যতম ধনী ও প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তিদের মধ্যে একজন। ওমাহা শহরের ওরাকল খ্যাত এই বিনিয়োগকারী আমেরিকান শীর্ষ ধনীদের মধ্যে একজন।  বলা হয় তার মোট সম্পদের পরিমান প্রায় ৮০ বিলিয়ন ডলার।  বিশ্বজুড়ে সমাদৃত এই ধনকুব প্রায় সময়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অর্থ-সম্পদ উপার্জন করা নিয়ে নানা মূল্যবান উপদেশ দিয়ে থাকেন, যার মধ্যে এই বচনটি অন্যতম

“তুমি যদি ঘুমের মাঝেও অর্থ না উপার্জন করতে পারো, তাহলে তোমাকে মৃত্যুর আগে পর্যন্ত কাজ করে যেতে হবে।”

তার কথাটি অত্যন্ত রুক্ষ ও অবাস্তব শোনালেও, দিনশেষে কথাটি কিন্তু আসলেই সত্য। আপনাকে যদি প্রতিদিন কাজ করার মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করে যেতে হয়, তাহলে যেদিন আপনি অবসর গ্রহণ করবেন সেদিন থেকেই আপনার অর্থ উপার্জনের সকল উৎস বন্ধ হয়ে যাবে।  এমতাবস্থায়, আপনি কি করবেন? নিরুপায় হয়ে দারিদ্রের জীবন বেছে নিবেন? আফসোস করবেন ও ভেবে দেখবেন যে ফেলে আসা দিনগুলোতে কি করেছেন? এত বছর কাজ করার ফলে আপনার হাতে তখন হয়তো কিছু সঞ্চিত অর্থ থাকবে। তবে কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা ব্যক্তিগত যেকোনো কারণে যদি আপনার জমানো সে অর্থ যদি শেষ হয়ে যায়, তখন কি করবেন? 

সেই কারণেই বিশ্বের সকল প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তিরা অর্থ উপার্জনের জন্য কখনোই একটি উৎসের ওপর নির্ভরশীল থাকেন না।  বরং তারা অর্থ উপার্জনের জন্য একাধিক উৎস তৈরী করে সেগুলোকে লালনপালন করেন, যাতে করে কোনো কারণে একটি উৎস বন্ধ হয়ে গেলেও তারা অন্য উৎসের ওপর নির্ভর করতে পারেন। উপরন্তু, তাদের অনেক উৎস থাকে যেগুলোকে খুব বেশি লালনপালন করতে হয় না। যেমন ধরুন চাকরি থেকে টাকা আয় করতে হলে আপনাকে অবশ্যই চাকরি করতে হবে, তবে ব্যাংকের জমানো টাকার ওপর ইন্টারেস্ট পেতে হলে আপনাকে স্রেফ জমানো অর্থটুকু ব্যাংকে ডিপোজিট করতে হবে, বাকিটা ব্যাংকের দায়িত্ব। 

এ সকল যেই অর্থ উপার্জনের ক্ষেত্রসমূহ রয়েছে যেখানে আপনার নিজের খুব বেশি জড়াতে হয়না, তবে মাস শেষে আপনি ঠিকই আপনি অর্থ উপার্জন করছেন, সেগুলোকে বলা হয় প্যাসিভ ইনকামের কাজ। নিজের অনলাইন কোর্স তৈরী করার ফলে আপনি যেই অর্থটি উপার্জন করবেন, তা হবে আপনার প্যাসিভ ইনকাম।

আপনি নিজের শ্রম ও মেধা কাজে লাগিয়ে  একবার কোর্সটি তৈরী করবেন, এবং এরপর সেই কোর্সটি ছাত্রছাত্রীদের হাতে তুলে দেয়া হচ্ছে বহুব্রীহির দায়িত্ব। অথচ প্রতি মাসে যে সকল ছাত্রছাত্রীরা আপনার অনলাইন কোর্সটি করছে, তাদের দেয়া কোর্স ফি-র অংশটুকু চলে আসছে আপনার কাছে। মজার বিষয় হচ্ছে আপনি কিন্তু সময়, শ্রম ও মেধা – সবকিছু ব্যবহার করছেন একবার।  তবে প্রতি মাসেই এই কোর্সটি বিক্রি করার ফলে আপনি আয় করে  যাচ্ছেন। চাকরির মতো বেঁধে দেয়া সময়ের মধ্যে আপনার অর্থ উপার্জন করার বিষয়টি এখানে একদমই নেই। কোনো একটি নির্দিষ্ট জায়গায় বসে আপনার অর্থ উপার্জন করতে হচ্ছে না।  ইন্দোনেশিয়ার বালিতে বসে আপনি আরাম করে লেবুর শরবত খাচ্ছেন, আর ঢাকায় কোনো এক উৎসুক কলেজছাত্র হয়তো বসে অনলাইনে করছে আপনার কোর্স।

বহুব্রীহির সাথে অনলাইন কোর্স তৈরি করে অর্থ উপার্জন করুন!

বিশ্বের যেকোনো জায়গায়, যেকোনোভাবে বসেই আপনি আয় করতে পারবেন বহুব্রীহিতে অনলাইন কোর্স তৈরি করার মাধ্যমে। নিজের মনমতো কোর্স আউটলাইন সাজিয়ে নিতে পারবেন এবং কোর্স প্রাইজ ঠিক করে দিতে পারবেন। একবার কোর্স তৈরি করে এর ডিস্ট্রিবিউশনের দায়িত্ব পুরোটাই বহুব্রীহির। পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তে বসে আপনি কোর্স পারচেজ রিপোর্ট পেয়ে যাবেন এবং আপনার কমিশন পৌছে যাবে আপনার একাউন্টে।

বহুব্রীহির সাথে অনলাইন কোর্স তৈরি করে আপনি যেকোনো দুই উপায়ে অর্থ উপার্জন করতে পারেন। 

নিজের অনলাইন কোর্স তৈরি করুন বহুব্রীহির সাথে

বিস্তারিত দেখুন এখানে

চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সাথে সাথে বদলে যেতে শুরু করেছে আমাদের চারপাশের সবকিছু। শিক্ষার্থীরা আজ বইয়ের পাতা থেকে বের হয়ে ইন্টারনেটের সাহায্যে কয়েক ক্লিকেই বিশ্বের সব প্রান্তের খবরাখবর জানতে পারছে, আর শিক্ষকদেরও  আজ পড়ানোর জন্য ক্লাসরুমের সেই চিরচেনা চার দেয়ালের গন্ডির মাঝে আবদ্ধ হতে হয় না।  ইন্টারনেটের সাহায্যে আজ আপনিও চাইলে খুব সহজে নিজের একটি কোর্স তৈরী করতে পারেন, এবং তা পৌঁছে দিতে পারেন কৌতূহলী অনেক ছাত্রছাত্রীর হাতের মুঠোয়।  আর একই সাথে গড়ে তুলতে পারেন মাস শেষে বাড়তি আয়ের এক অতুলনীয় সুযোগ। সোশ্যাল মিডিয়া থেকে শুরু করে বাস্তব জীবনেও বাড়বে আপনার পরিচিতি, অন্যকে আপনার দক্ষতার বিষয়টিও জানাতে পারবেন খুবই সহজে।  সেখান থেকে হয়তো ডাল -পালা গজাবে আপনার ব্যবসার, কিংবা চাকরির সিঁড়ি বেয়ে আপনি সাবলীলভাবে উঠে যাবেন সফলতার শিখরে   ।    

একদিনেই হয়তো আপনি অনলাইন কোর্স তৈরি করায় একদম পটু হয়ে যাবেন না।  তবে রোমের মতো এতো বড় সাম্রাজ্য যেখানে একদিনে তৈরী হয়নি, সেখানে আমার এবং আপনারও সামনে এগোনোর জন্য দরকার হবে অফুরন্ত ইচ্ছাশক্তি ও একটুখানি চেষ্টা। বাধা পেরোবার সাহস থাকলেই এগিয়ে যাওয়া যাবে সামনে, আর হয়তো এই অনলাইন কোর্স তৈরী করেই আপনি ঘুরিয়ে ফেলতে পারেন জীবনের চাকা।  আপনার অনলাইন কোর্স তৈরী করা নিয়ে যেকোনো প্রশ্ন বা মতামত থাকলে নির্দ্বিধায় যোগাযোগ করতে পারেন বহুব্রীহি টিমের সাথে।  

আমরাও অধীর রইলাম আপনার অনলাইন কোর্সের অপেক্ষায়! হয়তো আপনার তৈরী করা অনলাইন কোর্সের মাধ্যমেই বদলে যাবে একদল তরুণ-তরুণীর জীবন।  নিজেদের দক্ষতা বাড়িয়ে কোনো একদিন তারাই হয়তো এগিয়ে নিয়ে যাবে আমাদের বাংলাদেশকে!  

শেয়ার করুন

1 thought on “নিজের অনলাইন কোর্স তৈরি করা উচিত কেন?”

Leave a Comment