ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে কী কী শিখবেন

ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে কী কী শিখতে হয়?

ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে আপনাকে মূলত ৪টি বিষয় শিখতে হবে:

  • ডিজিটাল মার্কেটিং স্ট্রাটেজি
  • ডিজিটাল মার্কেটিং টুলগুলোর ব্যবহার
  • কন্টেন্ট কোয়ালিটি সম্পর্কে ধারণা
  • ডিজিটাল মার্কেটিং অ্যানালিটিক্স

এ ৪টি বিষয় আয়ত্ত করতে পারলে আপনি যেকোনো ধরনের ডিজিটাল মার্কেটিং ক্যাটাগরিতে কাজ করার কনফিডেন্স পাবেন।

ডিজিটাল মার্কেটিং স্ট্রাটেজি

প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের যেকোনো প্রোমোশনাল ক্যাম্পেইন থেকে ভালো রেজাল্ট পেতে আপনার ডিজিটাল মার্কেটিং স্ট্রাটেজি দরকার হবেই। এ স্ট্রাটেজি ঠিক করে দেবে:

  • ক্যাম্পেইন থেকে আপনি কেমন রেজাল্ট চান
  • আপনি কোন ধরনের কাস্টমারদের কাছে ক্যাম্পেইন চালাবেন
  • আপনি কত দিনের মধ্যে ক্যাম্পেইন থেকে কাঙ্ক্ষিত রেজাল্ট চান
  • কাস্টমারদের কাছে ক্যাম্পেইন চালাতে আপনি কোন মার্কেটিং চ্যানেলে ফোকাস করবেন
  • ক্যাম্পেইনের জন্য কতটুকু বাজেট বরাদ্দ থাকবে
  • ক্যাম্পেইনে কী কী কন্টেন্ট ব্যবহার করবেন

ডিজিটাল মার্কেটিং স্ট্রাটেজি বানানোর জন্য:

  • আপনাকে কাস্টমারদের সমস্যা খুব ভালোভাবে বুঝতে হবে
  • কাস্টমারদের সমস্যাকে আপনার প্রোডাক্ট বা সার্ভিস কীভাবে সমাধান করছে, সে ব্যাপারে পরিষ্কার ধারণা থাকতে হবে
  • আপনার প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের সাথে মিল থাকা মার্কেটের অন্যান্য প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের ব্যাপারে জানা থাকতে হবে

অর্থাৎ, আপনার ডিজিটাল মার্কেটিং স্ট্রাটেজির মূল ফাউন্ডেশন হচ্ছে মার্কেট ও অডিয়েন্স রিসার্চ। তাই ডিজিটাল মার্কেটিং শেখার শুরুতেই স্ট্রাটেজির বেসিকস জানুন।

ডিজিটাল মার্কেটিং টুলগুলোর ব্যবহার

ডিজিটাল মার্কেটিং স্ট্রাটেজিকে আপনি অ্যাপ্লাই করবেন বিভিন্ন টুলের সাহায্যে। ক্যাটাগরি অনুযায়ী টুলের ব্যবহার আলাদা হবে। যেমন, শুধু ফেসবুক মার্কেটিং করতে আপনার জানা দরকার:

  • কীভাবে ফেসবুক পেইজ চালাতে হয়
  • কীভাবে ফেসবুক গ্রুপ চালাতে হয়
  • কীভাবে ফেসবুক শপ চালাতে হয়
  • কীভাবে ফেসবুক পিক্সেল ব্যবহার করতে হয়
  • কীভাবে ফেসবুক অ্যাডস ম্যানেজার ব্যবহার করতে হয়

ব্যাপার হলো, ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের টুলগুলো ডায়নামিক। অর্থাৎ, এগুলোতে প্রতিনিয়ত কোনো না কোনো আপডেট আসে। আবার সময়ের সাথে টুলের ডিমান্ডও বদলে যায়। তাই আপনি যখনই কোনো ডিজিটাল মার্কেটিং টুল শিখবেন, টুলটির বেসিকস খুব ভালোভাবে আয়ত্ত করুন। তাহলে নতুন কোনো ফিচার আসলে তাড়াতাড়ি নিজেকে আপডেটেড রাখতে পারবেন।

কন্টেন্ট কোয়ালিটি সম্পর্কে ধারণা

সাধারণত ক্যাম্পেইনের কন্টেন্ট বানানোর জন্য কোম্পানি ও ব্র্যান্ডগুলোর নির্দিষ্ট টিম থাকে। ডিজিটাল মার্কেটার হবার জন্য আপনাকে কন্টেন্ট ডেভেলপমেন্টে এক্সপার্ট হতে হবে না। কিন্তু কন্টেন্টের কোয়ালিটি যাচাই করার স্কিল দরকার আপনার। কারণ কন্টেন্টের কোয়ালিটি কম হলে সেটা কাস্টমারদের কাছে বাজে ইমপ্রেশন দেয়। আর বাজে ইমপ্রেশন থেকে ভালো ক্যাম্পেইন রেজাল্ট আনা অসম্ভব।

এটা ঠিক যে, কন্টেন্ট কোয়ালিটি সরাসরি মাপা যায় না। তবে ফরম্যাট চিন্তা করলে বেসিক কিছু ব্যাপার ধরে পড়ে। যেমন, একটা ভিডিওতে ঠিকভাবে যদি সাউন্ড না আসে, আপনি কি সেটাকে ভালো কোয়ালিটির ভিডিও বলবেন? অবশ্যই না।

এ ধরনের আরো উদাহরণ রয়েছে। যেমন:

  • ফেসবুক পেইজে দেয়া ছবির সাইজ বেখাপ্পা দেখানো
  • ভুল বানান আর কঠিন ভাষায় লেখা ব্লগ পোস্ট
  • ফেসবুক অ্যাড টাইটেলের গুরুত্বপূর্ণ অংশ কাটা পড়া

কন্টেন্ট কোয়ালিটি যাচাই করার স্কিল ভালো করতে:

  • ইমেজ, ভিডিও, ব্লগ পোস্টসহ বিভিন্ন ফরম্যাটের কন্টেন্ট নিয়ে নিয়মিত ঘাঁটাঘাঁটি করুন
  • কোনো কন্টেন্টের কোয়ালিটি আপনার পছন্দ হলে চিন্তা করুন কী কী কারণে সেটা পছন্দ হয়েছে
  • কোনো কন্টেন্টের কোয়ালিটি অপছন্দ হলে চিন্তা করুন কীভাবে সে কন্টেন্টের কোয়ালিটি ভালো করা যেতো

সবচেয়ে ভালো হয় কন্টেন্ট ডেভেলপমেন্টে আপনার নিজেরই যদি বেসিক লেভেলের স্কিল থাকে – বিশেষ করে লেখালেখির উপর। কারণ শুধু লেখালেখির স্কিল দিয়ে আপনি কয়েক ফরম্যাটের কন্টেন্ট যাচাই করার কনফিডেন্স পাবেন। যেমন:

  • সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টের ক্যাপশন
  • অ্যাডের ক্যাপশন বা কপি
  • ল্যান্ডিং পেইজের কপি
  • ওয়েবসাইটের ব্লগ পোস্ট
  • ভিডিওর স্ক্রিপ্ট

আপনি যদি নিজের ওয়েবসাইট বা অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং থেকে ইনকাম করতে চান, তাহলে আপনাকে আর্টিকেল লেখায় ভালো হতে হবে। পাশাপাশি গ্রাফিক ডিজাইনের বেসিকস জানতে হবে ইমেজ বানানোর জন্য। অবশ্য বাজেট থাকলে কন্টেন্ট ডেভেলপমেন্টের কাজ অন্য কাউকে দিয়ে করাতে পারেন।

ডিজিটাল মার্কেটিং অ্যানালিটিক্স

ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে বিভিন্ন ধরনের ডেটা নিয়ে আপনাকে কাজ করতে হবে। যেমন:

  • আপনার ওয়েবসাইটের ল্যান্ডিং পেইজে কতজন ভিজিটর আসছেন
  • ল্যান্ডিং পেইজের কল-টু-অ্যাকশন (Call-to-action) বাটনে কতজন ভিজিটর ক্লিক করেছেন
  • ফেসবুকে ভিউয়াররা আপনার ভিডিও কতক্ষণ প্লে করেছেন

ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের ডেটা দেখে বোঝা সম্ভব আপনার ক্যাম্পেইন বা কন্টেন্টের পারফরম্যান্স সম্পর্কে। ক্যাম্পেইন বা কন্টেন্ট আপডেট করার জন্যও ডেটা কাজে দেয়। এ কারণে ডিজিটাল মার্কেটিং অ্যানালিটিক্স স্কিল থাকা জরুরি।

ডিজিটাল মার্কেটিং অ্যানালিটিক্সে স্কিলড হবার জন্য আপনাকে জানতে হবে মার্কেটিং মেট্রিক (Marketing Metrics) সম্পর্কে। পাশাপাশি Microsoft Excel বা Google Sheets-এর ফাংশন দিয়ে এসব মেট্রিক হিসাব করার উপায়ও শিখতে হবে। এসব ডেটা পয়েন্ট ক্যাম্পেইন রিপোর্টিংয়ে ব্যবহার করতে হবে আপনাকে।

বেসিক লেভেলের অ্যানালিটিক্স স্কিল থাকলেই আপনি ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের কাজ শুরু করতে পারবেন। তবে মার্কেটিংয়ের অন্যতম চ্যালেঞ্জ হলো, ডেটা অ্যানালিসিসের মাধ্যমে সফল স্ট্রাটেজি ডিজাইন করা। এ কাজটি ১ সপ্তাহ বা ১ মাসে শেখা সম্ভব নয়। বরং রিয়েল-লাইফে প্র্যাকটিস করতে করতে স্কিলটি আপনার আয়ত্তে আসবে। তাই শুরুতেই এতে ফোকাস না করলেও চলবে। 

শেয়ার করুন

1 thought on “ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে কী কী শিখবেন”

  1. আমি ডিজিটাল মার্কেটিং এর উপর কাজ শিখতে চাই এবং কাজ শিখার পরে ফ্রিল্যান্সিং করতে চাই।এই বিষয় নিয়ে আপনার নিকট সহযোগিতা আশা করছি। আশা করছি আপনি আমাকে সহযোগিতা করবেন ইনশা আল্লাহ।

    Reply

Leave a Comment