ডিজিটাল মার্কেটিং বেসিকস

ডিজিটাল মার্কেটিং কী?

ডিজিটাল মাধ্যমে কোনো প্রোডাক্ট, সার্ভিস ও ব্র্যান্ডের প্রোমোশন চালানোই হলো ডিজিটাল মার্কেটিং। যেমন, আপনি ফেসবুক চালানোর সময় স্পন্সরড পোস্ট দেখতে পান। এ পোস্টগুলো ডিজিটাল মার্কেটিং ক্যাম্পেইনের অংশ।

অবশ্য শুধু অ্যাডভার্টাইজিংয়ের মধ্যে ডিজিটাল মার্কেটিং সীমাবদ্ধ নয়। আপনি যখন গুগলে কোনো কিছু সার্চ করেন, তখন রেজাল্ট পেইজে যে লিংকগুলো দেখা যায়, সেগুলো ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের মাধ্যমেই সম্ভব হয়।

ডিজিটাল মার্কেটিং কেন দরকার?

  • প্রোডাক্ট ও সার্ভিসের সেলস বৃদ্ধি করতে
  • প্রোডাক্ট, সার্ভিস ও ব্র্যান্ডের প্রোমোশন করতে

দরকার অনুযায়ী ছোট, মাঝারি ও বড় সাইজের ব্যবসাগুলো বিভিন্ন ডিজিটাল মার্কেটিং চ্যানেলে নিজেদের প্রোমোশন চালায়। এর বাইরে অন্যান্য ব্র্যান্ড, প্রতিষ্ঠান ও পার্সোনালিটি নিজেদের অনলাইন প্রেজেন্স ঠিক রাখতে ডিজিটাল মার্কেটিং ব্যবহার করেন। 

ডিজিটাল মার্কেটিং কত ধরনের?

ডিজিটাল মার্কেটিংকে মূলত ৭টি ক্যাটাগরিতে ভাগ করা যায়:

  • সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং
  • সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন বা এসইও (SEO)
  • পে-পার-ক্লিক (Pay-per-click) অ্যাডভার্টাইজিং
  • কন্টেন্ট মার্কেটিং
  • অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং
  • ইমেইল মার্কেটিং
  • মোবাইল মার্কেটিং

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং

Facebook, Instagram, Twitter-সহ বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া চ্যানেলে প্রোডাক্ট, সার্ভিস ও ব্র্যান্ডের প্রোমোশন চালানো হলো সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং। কম সময়ে ও খরচে কাস্টমারদের কাছে প্রোমোশন করতে সোশ্যাল মিডিয়া চ্যানেলগুলো অত্যন্ত জনপ্রিয়। আমাদের দেশের অধিকাংশ ব্র্যান্ড ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের জন্য এখনো সোশ্যাল মিডিয়ার উপর নির্ভর করে বেশি।

সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন

Google, Bing, Yahoo-সহ বিভিন্ন সার্চ ইঞ্জিনের রেজাল্টে কোনো প্রোডাক্ট, সার্ভিস বা ব্র্যান্ডের র‍্যাংকিং ভালো করার জন্য সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (Search Engine Optimization) বা এসইও (SEO) দরকার হয়।

ইন্টারনেট ইউজাররা প্রতিনিয়ত সার্চ ইঞ্জিনে কোনো না কোনো সার্চ করেন। এসব সার্চ রেজাল্টের একেবারে প্রথম দিকে যেন আপনার প্রোডাক্ট, সার্ভিস বা ব্র্যান্ডের নাম চলে আসে, এসইওর মাধ্যমে সেটাই নিশ্চিত করতে পারবেন আপনি।

পে-পার-ক্লিক (PPC) অ্যাডভার্টাইজিং

সার্চ ইঞ্জিনের রেজাল্টে কোনো প্রোডাক্ট, সার্ভিস বা ব্র্যান্ডের র‍্যাংকিং সবসময় ভালো নাও হতে পারে। সেক্ষেত্রে সার্চ ইউজারদের কাছে সরাসরি বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে প্রোমোশন চালাতে পারবেন পে-পার-ক্লিক অ্যাডভার্টাইজিং দিয়ে। সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং (Search Engine Marketing) বা এসইএম (SEM) নামেও এটি পরিচিত।

কন্টেন্ট মার্কেটিং

ব্র্যান্ডগুলো অনেক সময় এমন সব কন্টেন্ট ব্যবহার করে, যেগুলো প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের সাথে সরাসরি সম্পর্কিত নয়। বরং কাস্টমার ও ইউজারদের আস্থা অর্জনের জন্য এমন কন্টেন্ট কাজে দেয়। এ আস্থাই পরবর্তীতে প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের সেলস বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। কন্টেন্টের এমন স্ট্রাটেজিক ব্যবহারই কন্টেন্ট মার্কেটিং হিসাবে পরিচিত। বাইরের ব্র্যান্ডগুলো, বিশেষ করে বিজনেস-টু-বিজনেস (B2B) ব্র্যান্ডগুলো, এমন মার্কেটিংয়ের জন্য বড় বাজেট রাখে।

ইমেইল মার্কেটিং

ইমেইলের মাধ্যমে প্রোডাক্ট, সার্ভিস বা ব্র্যান্ডের প্রোমোশন চালানোকে ইমেইল মার্কেটিং বলে। বাইরের দেশগুলোতে কাস্টমার বা ইউজারদের কনফিডেন্স অর্জনের জন্য এর ব্যবহার অনেক। তবে আমাদের দেশের ব্র্যান্ডগুলো এখনো ইমেইলের উপর কম জোর দেয়।

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং

অন্য কারো প্রোডাক্ট, সার্ভিস বা ব্র্যান্ডের প্রোমোশনে সাহায্য করে অর্থ উপার্জন করা যায়। এ ধরনের মার্কেটিংই অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং (Affiliate Marketing)। যেমন, Amazon তাদের প্রোডাক্টগুলোর জন্য Amazon Associates নামে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং প্রোগ্রাম চালায়। এর বাইরে অন্য অনেক প্রোডাক্ট আর সার্ভিস কোম্পানিও সেলস কমিশন শেয়ার করে মার্কেটারদের সাথে।

মোবাইল মার্কেটিং

মোবাইল ডিভাইসে প্রোডাক্ট, সার্ভিস ও ব্র্যান্ডের প্রোমোশন চালানোই হলো মোবাইল মার্কেটিং। কাস্টমারের অ্যাপে পুশ নোটিফিকেশন বা নাম্বারে এসএমএস পাঠিয়ে মোবাইল মার্কেটিং চালানো সম্ভব। স্মার্টফোনের জনপ্রিয়তার সাথে সাথে মোবাইল মার্কেটিংয়ের ব্যবহারও বেড়েছে।

ডিজিটাল মার্কেটিং করতে কী কী লাগে?

ডিজিটাল মার্কেটিং করতে আপনার সাধারণত দরকার হবে:

  • পার্সোনাল কম্পিউটার
  • ইন্টারনেট কানেকশন
  • সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট
  • ডিজিটাল মার্কেটিং টুলস
  • স্মার্টফোন

পার্সোনাল কম্পিউটার

ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে আপনাকে প্রায় সময় টেক্সট, ইমেজ, ভিডিও ও অন্যান্য ধরনের কন্টেন্ট ব্যবহার করতে হবে। পাশাপাশি দরকার হবে কয়েকটি টুল। তাই ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের জন্য পার্সোনাল কম্পিউটারই সবচেয়ে ভালো অপশন।

ইন্টারনেট কানেকশন

ব্রডব্যান্ড কানেকশন থাকলে ভালো। তবে মোবাইলের ইন্টারনেট ভালো হলেও কাজ চালাতে পারবেন।

সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট

দরকার অনুযায়ী বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়াতে অ্যাকাউন্ট থাকতে হবে আপনার। যেমন, ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থাকলে একই সাথে ইন্সটাগ্রাম আর হোয়াটসঅ্যাপেও মার্কেটিং করা সম্ভব।

ডিজিটাল মার্কেটিং টুলস

প্রয়োজন অনুসারে আপনাকে বিভিন্ন ডিজিটাল মার্কেটিং টুল ব্যবহার করতে হবে। যেমন:

  • ফেসবুক, ইন্সটাগ্রাম, মেসেঞ্জার ও হোয়াটসঅ্যাপে মার্কেটিং করার জন্য Meta Business Suite
  • ওয়েবসাইটের ইউজার অ্যানালিটিক্স দেখার জন্য Google Analytics
  • ওয়েবসাইটের সার্চ র‍্যাংকিং দেখার জন্য Google Search Console
  • ইমেইল মার্কেটিং সফটওয়্যার (উদাহরণ: Mailchimp)
  • এসএমএস মার্কেটিং সফটওয়্যার

স্মার্টফোন

অধিকাংশ কাস্টমার এখন স্মার্টফোন ব্যবহার করেন। তাদের ডিভাইসে আপনার প্রোমোশন ঠিকভাবে যাচ্ছে কি না, সেটা যাচাই করার জন্য আপনার নিজের স্মার্টফোন থাকা জরুরি। 

ডিজিটাল মার্কেটিং কেন শিখবেন?

  • ভালো উপার্জন করতে
  • কাজের সুযোগ অনেক
  • শেখার সুযোগ অনেক

ভালো উপার্জন করতে

ফ্রিল্যান্সার হিসাবে, বা ডিজিটাল মার্কেটার হিসাবে জব করলে, বা নিজের ব্যবসায় ডিজিটাল মার্কেটিং দিয়ে আপনি ভালো উপার্জন নিশ্চিত করতে পারবেন।

কাজের সুযোগ অনেক

আপনি ফ্রিল্যান্সিং করুন বা ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের জবে যান, কাজ করার প্রচুর সুযোগ পাবেন প্রত্যেক ক্যাটাগরিতেই। এ কারণে অনেকে ১-২ ক্যাটাগরিতে আগে স্কিলড হয়ে অন্য ক্যাটাগরিতে শিফট করেন।

আপনার যদি নিজের ব্যবসা থাকে, তাহলে ডিজিটাল মার্কেটিং শিখে প্রোমোশন স্ট্রাটেজিতে পরিবর্তন আনতে পারবেন।

শেখার সুযোগ অনেক

ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে এত ক্যাটাগরি রয়েছে যে, সব ক্যাটাগরিতে সমানভাবে স্কিল ডেভেলপমেন্ট করা যথেষ্ট সময়ের ব্যাপার। কিন্তু ক্যাটাগরিগুলো নিয়ে স্পষ্ট ধারণা থাকলে আপনি যেকোনো ক্যাটাগরির কাজ আয়ত্ত করতে পারবেন।

ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে কী কী শিখতে হয়?

ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে আপনাকে মূলত ৪টি বিষয় শিখতে হবে:

  • ডিজিটাল মার্কেটিং স্ট্রাটেজি
  • ডিজিটাল মার্কেটিং টুলগুলোর ব্যবহার
  • কন্টেন্ট কোয়ালিটি সম্পর্কে ধারণা
  • ডিজিটাল মার্কেটিং অ্যানালিটিক্স

এ ৪টি বিষয় আয়ত্ত করতে পারলে আপনি যেকোনো ধরনের ডিজিটাল মার্কেটিং ক্যাটাগরিতে কাজ করার কনফিডেন্স পাবেন।

ডিজিটাল মার্কেটিং স্ট্রাটেজি

প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের যেকোনো প্রোমোশনাল ক্যাম্পেইন থেকে ভালো রেজাল্ট পেতে আপনার ডিজিটাল মার্কেটিং স্ট্রাটেজি দরকার হবেই। এ স্ট্রাটেজি ঠিক করে দেবে:

  • ক্যাম্পেইন থেকে আপনি কেমন রেজাল্ট চান
  • আপনি কোন ধরনের কাস্টমারদের কাছে ক্যাম্পেইন চালাবেন
  • আপনি কত দিনের মধ্যে ক্যাম্পেইন থেকে কাঙ্ক্ষিত রেজাল্ট চান
  • কাস্টমারদের কাছে ক্যাম্পেইন চালাতে আপনি কোন মার্কেটিং চ্যানেলে ফোকাস করবেন
  • ক্যাম্পেইনের জন্য কতটুকু বাজেট বরাদ্দ থাকবে
  • ক্যাম্পেইনে কী কী কন্টেন্ট ব্যবহার করবেন

ডিজিটাল মার্কেটিং স্ট্রাটেজি বানানোর জন্য:

  • আপনাকে কাস্টমারদের সমস্যা খুব ভালোভাবে বুঝতে হবে
  • কাস্টমারদের সমস্যাকে আপনার প্রোডাক্ট বা সার্ভিস কীভাবে সমাধান করছে, সে ব্যাপারে পরিষ্কার ধারণা থাকতে হবে
  • আপনার প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের সাথে মিল থাকা মার্কেটের অন্যান্য প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের ব্যাপারে জানা থাকতে হবে

অর্থাৎ, আপনার ডিজিটাল মার্কেটিং স্ট্রাটেজির মূল ফাউন্ডেশন হচ্ছে মার্কেট ও অডিয়েন্স রিসার্চ। তাই ডিজিটাল মার্কেটিং শেখার শুরুতেই স্ট্রাটেজির বেসিকস জানুন।

ডিজিটাল মার্কেটিং টুলগুলোর ব্যবহার

ডিজিটাল মার্কেটিং স্ট্রাটেজিকে আপনি অ্যাপ্লাই করবেন বিভিন্ন টুলের সাহায্যে। ক্যাটাগরি অনুযায়ী টুলের ব্যবহার আলাদা হবে। যেমন, শুধু ফেসবুক মার্কেটিং করতে আপনার জানা দরকার:

  • কীভাবে ফেসবুক পেইজ চালাতে হয়
  • কীভাবে ফেসবুক গ্রুপ চালাতে হয়
  • কীভাবে ফেসবুক শপ চালাতে হয়
  • কীভাবে ফেসবুক পিক্সেল ব্যবহার করতে হয়
  • কীভাবে ফেসবুক অ্যাডস ম্যানেজার ব্যবহার করতে হয়

ব্যাপার হলো, ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের টুলগুলো ডায়নামিক। অর্থাৎ, এগুলোতে প্রতিনিয়ত কোনো না কোনো আপডেট আসে। আবার সময়ের সাথে টুলের ডিমান্ডও বদলে যায়। তাই আপনি যখনই কোনো ডিজিটাল মার্কেটিং টুল শিখবেন, টুলটির বেসিকস খুব ভালোভাবে আয়ত্ত করুন। তাহলে নতুন কোনো ফিচার আসলে তাড়াতাড়ি নিজেকে আপডেটেড রাখতে পারবেন।

কন্টেন্ট কোয়ালিটি সম্পর্কে ধারণা

সাধারণত ক্যাম্পেইনের কন্টেন্ট বানানোর জন্য কোম্পানি ও ব্র্যান্ডগুলোর নির্দিষ্ট টিম থাকে। ডিজিটাল মার্কেটার হবার জন্য আপনাকে কন্টেন্ট ডেভেলপমেন্টে এক্সপার্ট হতে হবে না। কিন্তু কন্টেন্টের কোয়ালিটি যাচাই করার স্কিল দরকার আপনার। কারণ কন্টেন্টের কোয়ালিটি কম হলে সেটা কাস্টমারদের কাছে বাজে ইমপ্রেশন দেয়। আর বাজে ইমপ্রেশন থেকে ভালো ক্যাম্পেইন রেজাল্ট আনা অসম্ভব।

এটা ঠিক যে, কন্টেন্ট কোয়ালিটি সরাসরি মাপা যায় না। তবে ফরম্যাট চিন্তা করলে বেসিক কিছু ব্যাপার ধরে পড়ে। যেমন, একটা ভিডিওতে ঠিকভাবে যদি সাউন্ড না আসে, আপনি কি সেটাকে ভালো কোয়ালিটির ভিডিও বলবেন? অবশ্যই না।

এ ধরনের আরো উদাহরণ রয়েছে। যেমন:

  • ফেসবুক পেইজে দেয়া ছবির সাইজ বেখাপ্পা দেখানো
  • ভুল বানান আর কঠিন ভাষায় লেখা ব্লগ পোস্ট
  • ফেসবুক অ্যাড টাইটেলের গুরুত্বপূর্ণ অংশ কাটা পড়া

কন্টেন্ট কোয়ালিটি যাচাই করার স্কিল ভালো করতে:

  • ইমেজ, ভিডিও, ব্লগ পোস্টসহ বিভিন্ন ফরম্যাটের কন্টেন্ট নিয়ে নিয়মিত ঘাঁটাঘাঁটি করুন
  • কোনো কন্টেন্টের কোয়ালিটি আপনার পছন্দ হলে চিন্তা করুন কী কী কারণে সেটা পছন্দ হয়েছে
  • কোনো কন্টেন্টের কোয়ালিটি অপছন্দ হলে চিন্তা করুন কীভাবে সে কন্টেন্টের কোয়ালিটি ভালো করা যেতো

সবচেয়ে ভালো হয় কন্টেন্ট ডেভেলপমেন্টে আপনার নিজেরই যদি বেসিক লেভেলের স্কিল থাকে – বিশেষ করে লেখালেখির উপর। কারণ শুধু লেখালেখির স্কিল দিয়ে আপনি কয়েক ফরম্যাটের কন্টেন্ট যাচাই করার কনফিডেন্স পাবেন। যেমন:

  • সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টের ক্যাপশন
  • অ্যাডের ক্যাপশন বা কপি
  • ল্যান্ডিং পেইজের কপি
  • ওয়েবসাইটের ব্লগ পোস্ট
  • ভিডিওর স্ক্রিপ্ট

আপনি যদি নিজের ওয়েবসাইট বা অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং থেকে ইনকাম করতে চান, তাহলে আপনাকে আর্টিকেল লেখায় ভালো হতে হবে। পাশাপাশি গ্রাফিক ডিজাইনের বেসিকস জানতে হবে ইমেজ বানানোর জন্য। অবশ্য বাজেট থাকলে কন্টেন্ট ডেভেলপমেন্টের কাজ অন্য কাউকে দিয়ে করাতে পারেন।

ডিজিটাল মার্কেটিং অ্যানালিটিক্স

ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে বিভিন্ন ধরনের ডেটা নিয়ে আপনাকে কাজ করতে হবে। যেমন:

  • আপনার ওয়েবসাইটের ল্যান্ডিং পেইজে কতজন ভিজিটর আসছেন
  • ল্যান্ডিং পেইজের কল-টু-অ্যাকশন (Call-to-action) বাটনে কতজন ভিজিটর ক্লিক করেছেন
  • ফেসবুকে ভিউয়াররা আপনার ভিডিও কতক্ষণ প্লে করেছেন

ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের ডেটা দেখে বোঝা সম্ভব আপনার ক্যাম্পেইন বা কন্টেন্টের পারফরম্যান্স সম্পর্কে। ক্যাম্পেইন বা কন্টেন্ট আপডেট করার জন্যও ডেটা কাজে দেয়। এ কারণে ডিজিটাল মার্কেটিং অ্যানালিটিক্স স্কিল থাকা জরুরি।

ডিজিটাল মার্কেটিং অ্যানালিটিক্সে স্কিলড হবার জন্য আপনাকে জানতে হবে মার্কেটিং মেট্রিক (Marketing Metrics) সম্পর্কে। পাশাপাশি Microsoft Excel বা Google Sheets-এর ফাংশন দিয়ে এসব মেট্রিক হিসাব করার উপায়ও শিখতে হবে। এসব ডেটা পয়েন্ট ক্যাম্পেইন রিপোর্টিংয়ে ব্যবহার করতে হবে আপনাকে।

বেসিক লেভেলের অ্যানালিটিক্স স্কিল থাকলেই আপনি ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের কাজ শুরু করতে পারবেন। তবে মার্কেটিংয়ের অন্যতম চ্যালেঞ্জ হলো, ডেটা অ্যানালিসিসের মাধ্যমে সফল স্ট্রাটেজি ডিজাইন করা। এ কাজটি ১ সপ্তাহ বা ১ মাসে শেখা সম্ভব নয়। বরং রিয়েল-লাইফে প্র্যাকটিস করতে করতে স্কিলটি আপনার আয়ত্তে আসবে। তাই শুরুতেই এতে ফোকাস না করলেও চলবে। 

ডিজিটাল মার্কেটিং শিখতে কত দিন লাগে?

ডিজিটাল মার্কেটিং শিখতে আপনার কমপক্ষে ৪ – ৬ মাস লাগবে। তবে প্র্যাকটিক্যাল অ্যাপ্লিকেশন ভালোভাবে আয়ত্তে আনতে ১ বছর পর্যন্তও সময় দরকার হতে পারে। মূলত আপনি কী কী শিখবেন আর শেখার জন্য কতটা সময় দেবেন, তার ভিত্তিতে হিসাব আলাদা হবে। এ কারণে ৪ – ৬ মাসকে একটা আনুমানিক টাইমলাইন হিসাবে দেখুন।

ডিজিটাল মার্কেটিং শেখার সাথে সময়ের সম্পর্কটা উদাহরণ দিয়ে বোঝা যাক।

কনসেপ্টভিত্তিক ডিজিটাল মার্কেটিং কোর্স করতে যেমন সময় দরকার

আগেভাগে একটা বিষয় শেয়ার করি। ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে সাফল্য পেতে মার্কেটিংয়ের কিছু গুরুত্বপূর্ণ কনসেপ্ট সম্পর্কে জানা জরুরি। কিন্তু কনসেপ্ট বা থিউরির উপর বেশি ফোকাস দেয়া হয়েছে, এমন কোর্স বা লার্নিং ম্যাটেরিয়াল ডিজিটাল মার্কেটিং শেখার জন্য সবসময় উপযুক্ত নয়।

অনলাইন কোর্স প্ল্যাটফর্ম edX-এ একটি প্রফেশনাল সার্টিফিকেট কোর্স প্রোগ্রাম রয়েছে ডিজিটাল মার্কেটিং ফান্ডামেন্টালসের উপর। ইউনিভার্সিটি অফ এডিনবরার প্রোগ্রামে মূলত ডিজিটাল মার্কেটিং স্ট্রাটেজি নিয়ে শেখানো হয়। ২ কোর্সের এ প্রোগ্রামের মেয়াদ ৪ মাস। প্রতি সপ্তাহে ৩ – ৫ ঘণ্টা সময়ের হিসাব করা হয়েছে এর জন্য।

edX-এর অন্য একটি প্রোগ্রামে প্র্যাকটিক্যাল স্কিলের উপর বেশি ফোকাস রয়েছে। কার্টিন ইউনিভার্সিটি পরিচালিত প্রোগ্রামটি ৫টি কোর্স কাভার করে। প্রতি সপ্তাহে ৭ – ৯ ঘণ্টার হিসাবে মেয়াদ ধরা হয়েছে ১ বছর।

উপরের ২টি প্রোগ্রামের একটা বড় অংশ হলো মার্কেটিংয়ের বিভিন্ন কনসেপ্ট। যেহেতু প্রোগ্রামগুলো ভার্সিটির কোর্সের মতো করে বানানো, সেহেতু সিলেবাসও সেভাবে সাজানো। এ ধরনের কোর্স করলে তাই সময় বেশি লাগবে।

প্র্যাকটিক্যাল কাজভিত্তিক ডিজিটাল মার্কেটিং কোর্স করতে যেমন সময় দরকার

ডিজিটাল মার্কেটিং থেকে ইনকাম করতে চাইলে প্র্যাকটিক্যাল কাজভিত্তিক ডিজিটাল মার্কেটিং কোর্সগুলো ভালো অপশন।

Udemy-এর একটি ডিজিটাল মার্কেটিং কোর্স সিলেবাসে মার্কেট রিসার্চের মতো বেসিক কনসেপ্ট যেমন রাখা হয়েছে, তেমনি ইমেইল মার্কেটিং, এসইও আর সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিংয়ের মতো প্র্যাকটিক্যাল কাজও শেখানো হয়। সব মিলিয়ে ২২ ঘণ্টা ৪৩ মিনিটের ভিডিও কন্টেন্ট আছে এতে। লেকচারের সংখ্যা ২৪৭।

ধরা যাক, আপনি কোর্সটিতে এনরোল করেছেন। প্রতি দিন আধা ঘণ্টা করে সময় দিলে ভিডিও দেখা শেষ করতে আপনার সময় লাগবে ১ মাস ১৫ দিন। অন্যদিকে ঘণ্টার হিসাব ছাড়াই প্রতি দিন ১টা লেকচারে ফোকাস করলে ২৪৭ দিন বা ৮ মাস ৭ দিন সময় দরকার হবে আপনার।

Udemy-এর অন্য একটি কোর্সে আছে ৪২ ঘণ্টা ৪৮ মিনিটের ভিডিও কন্টেন্ট। লেকচারের সংখ্যা ৪০০। আগের হিসাব অনুযায়ী শুধু ভিডিও কন্টেন্ট শেষ করতে সময় প্রয়োজন হবে ৮৬ দিন বা ২ মাস ২৬ দিন। ১ লেকচারের হিসাবে সময় ১ বছর ১ মাস ৫ দিন।

একটা ব্যাপার এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন। উপরের হিসাবে আপনার নতুন কিছু শেখার স্কিল, অ্যাসাইনমেন্ট, সাপোর্ট আর পোর্টফোলিও বানানোর সময় বিবেচনায় আনা হয়নি। অর্থাৎ, ডিজিটাল মার্কেটিং শিখতে হলে বাস্তবে কমপক্ষে ২ মাসের বেশিই সময় লাগবে। ব্যাপারটি মাথায় রেখে বহুব্রীহি’র কমপ্লিট ডিজিটাল মার্কেটিং ক্যারিয়ার ট্র্যাক প্রোগ্রামে সময় রাখা হয়েছে ৬ মাস।

শেয়ার করুন

Leave a Comment