কর্মীদের জন্য এক্সেল ট্রেনিং কোম্পানিতে কীরকম প্রভাব ফেলে?

অফিশিয়াল কাজের জন্য সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত সফওয়্যারগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে মাইক্রোসফট এক্সেল। কিন্তু বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানেই এক্সেলে সত্যিকার অর্থে দক্ষ মানুষের অভাব রয়েছে। এক্সেলকে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানে কেবল একটি ডাটা-এন্ট্রি সফটওয়্যার হিসেবে দেখা হয়, শুধু ডাটা এন্ট্রির জন্যেই ব্যবহার করা হয়! এতে করে আসলে এক্সেলের কেবল সার্ফেস লেভেলে বিচরণ করা হচ্ছে; পর্যাপ্ত ট্রেনিং ও দক্ষতা না থাকায় সুযোগের সঠিক ব্যবহার করা যাচ্ছে না। এক্সেল এবং এক্সেল ব্যবহারকারী কর্মীর কাছ থেকে সর্বোচ্চ আউটকাম পেতে হলে সবার আগে জানতে হবে এক্সেল দিয়ে কি কি করা সম্ভব, এর ব্যাপ্তি ও প্রভাব ঠিক কতটুকু!  

তো, কর্মীদের মাইক্রোসফট এক্সেল বিষয়ক দক্ষতা কোম্পানিতে কীভাবে প্রভাব ফেলে?

  • প্রচুর সময় বেঁচে যায়
  • ব্যবহারযোগ্য ডাটা খুঁজে পাওয়া ও ভুল কমানো
  • ডাটা থেকে Trend ও Insight খুঁজে বের করা যায়
  • রিপোর্টিং আর প্রেজেনটেশন খুব সহজ হয়ে যায়
  • দ্রুত ও সঠিকভাবে সিদ্ধান্ত নেয়া সহজ হয়
  • কোম্পানির অপারেশনাল প্রসেস অপটিমাইজ করা যায়
  • সবকিছু অর্গানাইজড থাকে
  • প্রোডাক্টিভিটি বাড়ে, খরচ কমে
  • কোম্পানির IT টীমের উপর নির্ভরশীলতা ও চাপ কমে

Need Excel Training for 10 or more people? Check our corporate eLearning services.

প্রচুর সময় বেঁচে যায়

যেকোন সফটওয়্যার ব্যবহার করার অন্যতম উদ্দেশ্য হল অল্প সময়ে বেশি কাজ শেষ করা। Excel ভালভাবে জানা থাকলে ডাটা সংক্রান্ত অনেক কাজ খুব দ্রুত করে ফেলা যায়, যেগুলো ম্যানুয়ালি করতে গেলে বা Excel এ তুলনামূলক কম দক্ষ মানুষ দিয়ে করিয়ে নিতে কয়েকগুন সময় লেগে যেত। এখন, Excel ভাল জানার কারনে একজন এমপ্লয়ী যদি দিনে ৩০ মিনিট সময়ও সাশ্রয় করেন, তাহলে সবাই মিলে প্রতিদিন কত সময় বাঁচিয়ে দিচ্ছেন !!

ব্যবহারযোগ্য ডাটা খুঁজে পাওয়া যায়, ভুল কমে যায়

যেকোন কাজেই Human Error বলে একটা ব্যাপার থাকে। এক্সেলের বিভিন্ন টুলস ব্যবহার করে এই ভুল এড়ানো যায়। Unstructured ডাটা কে Structured ফরম্যাটে নিয়ে আসা যায়। বিভিন্ন ডাটা ক্লিন্সিং মেথড ব্যবহার করে অপ্রয়োজনীয় বা ভুল ডাটা বাদ দিয়ে দেয়া যায়। এতে এনালাইসিস সঠিক হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে। সুতরাং এমপ্লয়ীরা এক্সেলে দক্ষ হলে, তাদের কাজের সঠিকতা বাড়ে এবং অন্য এমপ্লয়ীদের জন্য এনালাইসিসের বাকি কাজগুলো করা সহজ হয়ে যায়!

ডাটা থেকে Trend ও Insight খুঁজে বের করা যায়

প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানে অনেক এমপ্লয়ী থাকেন যারা এক্সেল ভাল না জানার কারনে প্রতিদিনের সাধারণ কাজ করার পর বিভিন্ন Trend বা গুরুত্বপূর্ণ Insight খুঁজে বের করার সময় পান না। এর ফলে সেই কাজগুলো করার জন্য আলাদা এমপ্লয়ী রাখতে হয়। অথচ এক্সেল ব্যবহারে দক্ষ হলে ডাটা দ্রুত এনালাইসিস এবং Visualize করা যায়। এভাবে বিভিন্ন Trend এবং Insight বেরিয়ে আসে, যেগুলো বিজনেস আরও উন্নত করতে সহায়ক হতে পারে।

যেমন, আপনি যদি কোনো Clothing Brand এর মালিক/ম্যানেজার হয়ে থাকেন, তাহলে সেলস ডাটা থেকে খুব সহজেই বোঝা সম্ভব কোন প্রোডাক্ট এর চাহিদা কেমন, কোন প্রোডাক্ট বেশি বিক্রি হচ্ছে, কোন সেলস চ্যানেল থেকে বেশি লাভ হচ্ছে, কোন এমপ্লয়ী ভাল পারফর্ম করছেন ইত্যাদি।

দ্রুত ও সঠিকভাবে সিদ্ধান্ত নেয়া সহজ হয়

শুধু এনালাইসিস আর Insight বের করলে তো চলবে না! ইনসাইটগুলো থেকে Decision নিতে হবে, যাতে সেই এনালাইসিস কাজে লাগিয়ে বিজনেস আরও উন্নত করা যায়। এক্সেলে Sensitivity এবং Scenario Simulation এর মত Advanced ফিচার আছে, যেগুলো ব্যবহার করে Decision-Making অনেক দ্রুত এবং সঠিকভাবে করে ফেলা যায়। এগুলো জানা থাকলে Mid-level এমপ্লয়ী/ম্যানেজাররা খুব দ্রুত সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। তাদের জন্য ভবিষ্যৎ কর্ম-পরিকল্পনা তৈরি করা সহজ হয়ে যায়!   

ফ্রী অনলাইন কোর্স করে বেসিক এক্সেল শিখতে এখানে ক্লিক করুন

রিপোর্টিং আর প্রেজেনটেশন খুব সহজ হয়ে যায়

মাইক্রোসফট এক্সেলের মাধ্যমে খুব সহজে ডাটা এনালাইসিস এবং Visualization করা যায়; এবং এগুলো সরাসরি রিপোর্টে বসিয়ে দেয়া যায়। এক্সেল থেকে Powerpoint কিংবা Word এ চার্ট, গ্রাফ, টেবিল ইত্যাদি সরাসরি নিয়ে আসা যায়; এমনকি লিংক ও করে দেয়া যায়। এতে এনালাইসিসের রেজাল্ট Effectively দেখানো এবং বোঝানো যায়। এক্সেলের এই কাজগুলো জানা থাকলে এমপ্লয়ীরা তাদের নিজদের ভিতর কমুনিকেট করতে এবং ম্যানেজারদের সামনে নিজেদের এনালাইসিস প্রেজেন্ট করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। এর মাধ্যমে পুরো টীমের Productivity এবং Efficiency বাড়ে!

কোম্পানির অপারেশনাল প্রসেস অপটিমাইজ করা যায়

অপটিমাইজেশন যেকোন বিজনেসের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বিজনেস প্রসেসে অনেক ভ্যারিয়েবল থাকে, এ কারনে ম্যানুয়ালি অপটিমাইজ করা খুবই সময়সাপেক্ষ এবং ব্যয়বহুল। কোথায় কোন রিসোর্স বা সময় কতটুকু খরচ করলে যাথাযথ ফলাফল পাওয়া যাবে (Meeting the Target), সেটা এক্সেল দিয়ে ক্যালকুলেট করা যায়। কর্মীরা এক্সেলের মাধ্যমে এই কাজগুলো দক্ষভাবে করতে পারলে খুব দ্রুত এনালাইসিস এবং Decision making শেষ করে Implementation এর দিকে যাওয়া সম্ভব হয়!

সবকিছু অর্গানাইজড থাকে

কোম্পানির ইন্টারনাল এবং এক্সটারনাল ডাটা গুছিয়ে রাখার ক্ষেত্রে এক্সেল খুবই কার্যকরী টুল। ফোন নাম্বার, তারিখসহ বিভিন্ন ডাটা Efficiently সেইভ করে রাখা যায় Excel এর মাধ্যমে। এমপ্লয়ীরা এ ব্যাপারে দক্ষ হলে জরুরী জিনিস স্বল্প সময়ে খুঁজে বের করতে পারে। এছাড়া কর্মীরা এক্সেলের মাধ্যমে একাধিক জায়গা থেকে ডাটা এক জায়গায় নিয়ে খুব সহজে এনালাইসিস করতে পারেন।

প্রোডাক্টিভিটি বাড়ে, খরচ কমে

এক্সেলে অনেক কাজ দ্রুত করা যায় এবং ম্যানুয়াল কাজের পরিমাণ করে আসে। সুতরাং অল্প মানুষ দিয়ে অনেক বেশি পরিমাণ কাজ সম্পন্ন করা যায়। বেঁচে যাওয়া সময়ে কর্মীরা অন্য আরও গুরুত্বপূর্ণ কাজ করতে পারেন, যে কাজগুলো সময়ের অভাবে বা লোকবলের অভাবে করা সম্ভব হচ্ছিল না। এতে কোম্পানির দক্ষতা আর প্রোডাক্টিভিটি বাড়ে; নতুন কর্মী নিয়োগ দেয়ার খরচ কমে।

কোম্পানির IT টীমের উপর নির্ভরশীলতা ও চাপ কমে

এক্সেল না জানার কারনে অনেক ছোটখাটো ব্যাপারে প্রতিষ্ঠানের টেকনিক্যাল স্টাফদের ডাকতে হয়। অথচ এগুলোর ভিতর অনেক কাজই এমপ্লয়ীরা নিজেরাই করতে পারেন যদি Excel জানা থাকে। এতে IT টীমের উপর চাপ কমে এবং আইটি ডিপার্টমেন্ট অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ টেকনিক্যাল কাজে বেশি সময় দিতে পারে।

কর্মী এবং এক্সেল উভয়ের পটেনশিয়াল অনুযায়ী সর্বোচ্চ আউটকাম পেতে এক্সেলের এডভান্সড টুলস আর টেকনিকগুলো কাজে লাগাতে হবে; উদ্যোগী হয়ে ট্রেনিং এর ব্যবস্থা করতে হবে! এক্সেলকে যত দ্রুত কোম্পানির প্রাতিষ্ঠানিক কালচারের অংশ করে নেয়া যাবে; এক্সেলের এডভান্সড টেকনিকগুলোর ব্যাপারে কর্মীদের যত বেশি দক্ষ করে তোলা যাবে; প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্য অর্জনও তত  সহজ ও দ্রুত হবে।

এক্সেলের এক্সপার্ট হয়ে উঠুন!

মাইক্রোসফট এক্সেল নিয়ে বহুব্রীহি-তে একটি পূর্ণাংগ অনলাইন কোর্স রয়েছে। সেখানে Data Cleansing, Logic functions, Data Visualization, Statistical Functions, Sensitivity Analysis, Financial Decision-making সহ প্রয়োজনীয় সবকিছু শিখতে পারবেন খুব সহজেই!


এক্সেলের কমপ্লিট কোর্সটি করুন

শেয়ার করুন

11 thoughts on “কর্মীদের জন্য এক্সেল ট্রেনিং কোম্পানিতে কীরকম প্রভাব ফেলে?”

  1. এখানে তো শুধু মাত্র গাণিতিক ব্যবহারগুলোর কথা বলা হলো কিন্তু এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের কাজ এক্সেলে করা যায়।
    একটু উদাহরণ দেই।

    ১. ফটোশপের মতো ছবি এডিট করা যায়। চাইলে যে কোন প্রোগ্রামের জন্য সহজেই সার্টিফিকেট তৈরী করা যায়।

    ২. এক্সেলে ডাটা সাজিয়ে ওয়েবসাইট তৈরী করা যায়। উল্লেখ্য থাকে htm ফরম্যাট নয়। অন্যান্য ওয়েবসাইটের মতো।

    ৩. এন্ডোয়েড অ্যাপ্লিকেশন তৈরী করা যায়।

    ৪. অটোক্যাড ফরম্যাটের কাজ করা যায়।

    ৫. বিভিন্ন সুপারশপে বিল তৈরীর জন্য যে সকল সফটওয়্যার থাকে এগুলো সহজেই তৈরী করা যায় এক্সেলে।

    ৬. ভিডিও গেম তৈরী করা যায়।
    বর্তমানে লুডু কিং নামের গেম খুব জনপ্রিয়। এই ধরনের গেম সহজে তৈরী করা যায়।

    ৭. যে কোন ধরনের আবেদনপত্র এক্সেলে তৈরী করলে খুব সহজে ফর্মের মাধ্যমে সবার জন্য কাস্টমাইজ করা যায়।

    ৮. সিভি তৈরী সাথে সার্টিফিকেট সংযুক্ত করা।
    আমার এক্সেলে বানানো।

    বিঃদ্রঃ অনেকেরই মনে হবে বিষয়গুলি পাগলামো।
    নিজেরা চেষ্টা না করে দেখলে আসলেই পাগলামো মনে হবে। জানেনই তো, ” পাগল ছাড়া দুনিয়া চলে না “

    Reply

Leave a Comment