IQ নাকি EQ? কোনটি বেশি গুরুত্বপূর্ণ?

আমরা সবাই রোবট সম্পর্কে নিশ্চয় জানি। রোবটের মধ্যে ইন্টেলিজেন্স বা বুদ্ধিমত্তার কোন অভাব নেই। এই বুদ্ধিমত্তাকে বলা যায় IQ (Intelligence Quotient)। গণিত, জটিল কোন হিসাব নিকাশ, বিশ্লেষণী ক্ষমতা, প্রবলেম সলভিং স্কিল- এগুলো হল IQ সক্ষমতা। অন্যদিকে রোবট কিন্তু আমাদের ইমোশন বা আবেগ পড়তে পারে না। ফলে সে অনুযায়ী সিদ্ধান্ত গ্রহণেও সে অপারগ।

এই ইমোশন বা আবেগ বুঝে সিদ্ধান্ত গ্রহণের যে সক্ষমতা তাকে বলা হয় EQ (Emotional Quotient)। আসুন এই পুরো ব্লগে আমরা এ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিই।

প্রতিনিয়ত নিজেকে উন্নত করা বা স্কিল বাড়ানোর কাজে আমরা সবাই নিয়োজিত আছি। নিজেকে উন্নত করা বা স্কিল বাড়ানোর এই প্রক্রিয়া নির্ভর করে মানুষের সক্ষমতা ও বুদ্ধিমত্তার উপর। বিংশ শতাব্দীর একদম শুরুতে আমাদের বুদ্ধিমত্তা পরিমাপ করার জন্য যে মেথড তৈরি করা হয়েছিল তাকে আইকিউ (IQ) বা Intelligent Quotient বলা হয়।

আমরা মোটামুটি সবাই এই আইকিউ সম্পর্কে জানি। অনেকে হয়ত আইকিউ টেস্টও দিয়েছি। তবে কিছু বছর আগে এমন এক থিওরি আসে যা আমাদের চিন্তাভাবনাকে অনেকটা বদলে দিয়েছে। নতুন এই থিওরিটিকে বলা হয় EQ (Emotional Quotient)। এটি আপনার ইমোশন বা আবেগ সম্পর্কিত বুদ্ধিমত্তাকে পরিমাপ করে। এই IQ এবং EQ একদমই ভিন্ন দুই থিওরি। এ নিয়ে মানুষের মধ্যে বেশ বিভ্রান্তি দেখা যায়। পুরো আলোচনায় আমরা IQ vs EQ, অর্থাৎ এই দুইটিকে আলাদাভাবে জানবো এবং এদের মধ্যকার সম্পর্ক বোঝার চেষ্টা করব। 

IQ vs EQ

IQ বা Intelligence Quotient কী?

বিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে (১৯০৪ সালে) আইকিউ টেস্টের এই পরিমাপকটি ডেভেলপ করা হয়। এটি ছিল আলাদা কিছু টেস্টের সমন্বিত রূপ বা ফলাফল যা মানুষের বুদ্ধিমত্তাকে মাথায় রেখে তৈরি করা হয়। আইকিউ টেস্টের একটি উল্লেখযোগ্য দিক হচ্ছে এটির চূড়ান্ত ফলাফল আপনার বয়স এবং টেস্টের ফলাফলের আনুপাতিক হার বিবেচনা করে দেওয়া হয়।

যেমন একটি ১০ বছরের বাচ্চার আইকিউ মার্ক যদি ৪০ আসে, আর একজন ৩০ বছর বয়স্ক ব্যক্তির আইকিউ (IQ) মার্ক যদি ১৪০ হয়, তবে তাদের আইকিউ (IQ) সমান! এই টেস্ট পৃথিবীতে এতো জনপ্রিয় হয় যে পরবর্তীতে এর আপডেটেড ভার্সন নিয়ে আসা হয়। 

আমরা যদি এই সময়ের কথা বিবেচনা করি তাহলে এই আইকিউ (IQ) টেস্টে স্থান করে নিয়েছে বেশ কিছু বিষয়। এগুলো হলোঃ

  • গণিত 
  • লজিক বা যুক্তিবিদ্যা 
  • রিজনিং বা কারণ অনুসন্ধান 
  • প্যাটার্ন রিকগনিশন 
  • প্রবলেম সলভিং স্কিল

এই বিষয়গুলো ছাড়াও রয়েছে আরও বেশকিছু ফ্যাক্টর যা এই আইকিউ টেস্ট করার কাজে প্রাধান্য পায়। মূলত সংক্ষেপে বললে আইকিউ (IQ) যাচাই করে কীভাবে আপনি একটি বিষয় পড়েন, বোঝেন এবং তা লজিক্যালি প্রয়োগ করেন। 

আরও পড়ুনঃ গ্রোথ মাইন্ডসেটঃ আপনার ব্রেইনকে কীভাবে পরিবর্তন করবেন?

EQ বা Emotional Quotient কী?

অনেকে মনে করেন EQ (Emotional Quotation), IQ (Intelligence quotient) এর একদম বিপরীত। ব্যাপারটা আসলে তা নয়। এই দুই থিওরিতে খানিকটা ভিন্নতা রয়েছে। আইকিউ (IQ) টেস্টে বোঝা যায় আমাদের পড়ার, বোঝার ও তা লজিক্যালি প্রয়োগ করার সক্ষমতা। অন্যদিকে EQ সেই জ্ঞান বা সক্ষমতা যা আমরা ইমোশনাল ইন্টেলিজেন্স বা আবেগীয় বুদ্ধিমত্তা কীভাবে প্রয়োগ করি তা তুলে ধরে। 

EQ বা আবেগীয় বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন একজন ব্যক্তি নিজের এবং অন্যের আবেগকে সহজে বুঝতে ও পড়তে পারে। সে আপনার আচরণ ও আপনার কাজকে প্রভাবিত করতে পারে। আমাদের EQ মূলত আমাদের ৫টি বৈশিষ্ট্যকে বহন করে চলে। এগুলো হলঃ 

  • আত্ম-সচেতনতা (Self Awareness) 
  • স্ব-নিয়ন্ত্রণ ( Self Regulation) 
  • সহানুভূতি (Empathy)  
  • সামাজিক দক্ষতা (Social Skill) 
  • প্রেরণা (Motivation)

Emotional Intelligence

এই বৈশিষ্ট্যগুলো যার যত বেশি তিনি তত EQ সম্পন্ন। একজন আত্ম-সচেতন, স্ব-নিয়ন্ত্রিত ও সহানুভূতিশীল ব্যক্তির পক্ষে সব ধরণের কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলা করে সাফল্য আনা সম্ভব। সেই সাথে তিনি সামাজিক দক্ষতা সম্পন্ন হয়ে থাকেন এবং অন্য দশজন মানুষকে অনুপ্রাণিত করার ক্ষমতা রাখেন। 

IQ vs EQ: তুলনা রেখাচিত্র (Comparison Chart)

EQ (EMOTIONAL QUOTIENT)

সংজ্ঞা: EQ সক্ষমতা হচ্ছে নিজের, অন্যের বা পুরো একটি গ্রুপের আবেগ বুঝতে পারা এবং সে অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিতে পারা।

সক্ষমতার বিষয়সমূহ: নিজস্ব কিংবা অন্যের আবেগ চিহ্নিত করা, নিয়ন্ত্রণ করা, অন্যের আবেগ উপলব্ধি করা ইত্যাদি।

কর্মক্ষেত্রে বৈশিষ্ট্য: দলগত কাজ, সফল সম্পর্ক, সার্ভিস ওরিয়েন্টেশন, উদ্যোগ, সহযোগিতা ইত্যাদি।

যাদের মাঝে বৈশিষ্ট্যগুলো পাওয়া যায়: নেতৃত্বমূলক অবস্থানে যারা থাকেন কিংবা সামাজিক বিভিন্ন প্রতিবন্ধতা নিয়ে যারা কাজ করেন।

অরিজিন বা মূল:১৯৮৫ সালে প্রকাশিত ওয়েন পেইনের ডক্টরাল থিসিস ‘অ্যা স্টাডি অফ ইমোশনঃ ডেভেলপিং ইমোশনাল ইন্টেলিজেন্স’

১৯৯৫ সালে প্রকাশিত পপুলার এডিশন ড্যানিয়েল গোলম্যানের ‘Emotional Intelligence-Why It Can Matter More Than IQ’

জনপ্রিয় টেস্টসমূহ: মায়ার-সালোভে-কারুসো পরীক্ষা (emotion-based problem solving tasks); ড্যানিয়েল গোলম্যান মডেল স্কোর ( based on emotional competencies)

IQ (INTELLIGENT QUOTIENT)

সংজ্ঞা: IQ হচ্ছে গণিত, কঠিন হিসাব নিকাশ, বিশ্লেষণী দক্ষতা, লজিক্যাল জ্ঞান সম্পর্কিত স্কিল।

সক্ষমতার বিষয়সমূহ: গাণিতিক দক্ষতা, বিশ্লেষণী ক্ষমতা, বিমূর্ত ও স্থানিক চিন্তাভাবনা ইত্যাদি।

কর্মক্ষেত্রে বৈশিষ্ট্য:চ্যালেঞ্জিং কাজ করার সক্ষমতা, বিশ্লেষণী সক্ষমতা, গবেষণা ইত্যাদি।

যাদের মাঝে বৈশিষ্ট্যগুলো পাওয়া যায়:মানসিক চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত, দক্ষ ও প্রতিভাধর ব্যক্তি।

অরিজিন বা মূল: ১৮৮৩ সালে প্রকাশিত ইংরেজ পরিসংখ্যানবিদ ফ্র্যান্সিস গ্যালটনের পেপার ‘ইনকুয়াইরি ইন্টু হিউম্যান ফ্যাকাল্টি এন্ড ইটস ডেভেলপমেন্ট’ 

১৯০৫ সালে ফরাসি মনোবিদ অ্যালফ্রেড বিনেটের প্রস্তাবিত টেস্ট যা ফ্রান্সের স্কুল শিশুদের উপর পরীক্ষা করে তৈরি করা হয়। 

জনপ্রিয় টেস্টসমূহ:স্ট্যানফোর্ড-বিনেট টেস্ট; ওয়েসলার; উডকক- জনসন টেস্ট অফ কগনেটিভ অ্যাবিলিটিস।

IQ vs EQ: কোনটি বেশি গুরুত্বপূর্ণ ?

IQ + EQ = Success
IQ + EQ = Success

গুরুত্বের প্রসঙ্গে বলতে গেলে আবারও বিষয় দুটি একটু ঝালিয়ে নেওয়া দরকার। IQ প্রকাশ করবে আপনার প্রবলেম সল্ভিং-এর দক্ষতা কিংবা যুক্তি বিশ্লেষণের ক্ষমতা। অন্যদিকে EQ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে এক গবেষক বলেন ২০ শতাংশ মানুষের সফলতা আসে IQ এর জন্য। আর বাকি ৮০ শতাংশ মানুষ EQ এর উপর নির্ভর করে। EQ মানুষের নিয়ন্ত্রণ শক্তি, ইভালুয়েশন এবং আবেগকে সঠিক পথে চালিত করে। তাই ৯৫ শতাংশ নম্বর নিয়েও কর্মক্ষেত্রে গিয়ে আপনি আপনার কাজকে যদি সঠিকভাবে উপস্থাপন করতে না পারেন, তাহলে সবই বৃথা যাবে। 

একটা কথা আমরা প্রায়ই শুনি, একজন ভালো স্টুডেন্ট ভালো শিক্ষক হতে পারেন না! এখানে বুদ্ধিমত্তার আবেগীয় প্রায়োগিক ফ্যাক্টরটা কাজ করে। কারণ আপনি হয়তো ভালো মার্কস তুলে শিক্ষকতা পেশায় আসলেন। কিন্তু আপনি ভালো শিক্ষক হতে পারলেন না, ছাত্রছাত্রীদের সাথে ইমোশনাল বন্ডিং তৈরি করতে পারলেন না। এর অর্থ দাঁড়াবে আপনি ভালো IQ সম্পন্ন হলেও EQ লেভেলে পিছিয়ে আছেন। 

উল্লেখিত আলোচনার মতো করে ভাবলে, EQ এর গুরুত্ব বেড়ে যায় IQ থেকে। বর্তমানে অনেক বিজ্ঞ গবেষকও EQ সক্ষমতাকে IQ থেকে বেশি প্রাধান্য দিয়ে আসছেন। তবে সামগ্রিকভাবে বিবেচনা করলে সক্ষমতা পরিমাপক এই দুইটি বিষয়ই কিন্তু আমাদের জীবনে সমানভাবে দরকার। শুধুমাত্র  EQ দিয়ে আর শূন্য লজিক্যাল জ্ঞান নিয়ে আপনি আসলে কিছুই করতে পারবেন না।

তাই এই EQ আর IQ – এই দুই সক্ষমতা পরিমাপক টার্মকে একে অন্যের পরিপূরক হিসেবে ভেবে নিয়ে আমরা যদি আগাতে পারি তাহলেই পরিপূর্ণভাবে সফল হতে পারবো। 

আরও পড়ুনঃ আপনার অনুভুতিগুলো আপনি কতটুকু বুঝতে পারেন?

EQ এবং IQ পরিমাপের পরীক্ষা

যদিও EQ পরিমাপ করা খুব বিষয়গত বা সাবজেক্টিভ ব্যাপার, তবুও এই EQ পরিমাপ করার জন্য বেশ কয়েকটি পরীক্ষা রয়েছে। এর মধ্যে মেয়ার-সালোভে-কারুসো পরীক্ষা একটি। এই পরীক্ষায় সংবেদনশীল বুদ্ধিমত্তা পরিমাপের জন্য পরীক্ষার্থীকে পরীক্ষামূলকভাবে সংবেদন-ভিত্তিক সমস্যার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। গোলম্যানের EQ পরিমাপের মডেলটিও ইমোশনাল দক্ষতার নিরুপনে আরেকটি উল্লেখযোগ্য টেস্ট।  

তাত্ত্বিকরা আইকিউ পরীক্ষাকে উদ্দেশ্যমূলক বা অবজেক্টিভ করার চেষ্টা করেছেন। স্ট্যানফোর্ড-বিনেট পরীক্ষাটি সর্বপ্রথম আইকিউ টেস্ট ছিল। এর স্কোর পরীক্ষার্থীর মানসিক বয়সের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছিল।

আমেরিকান মনোবিজ্ঞানী ডেভিড ওয়েসলার তিনটি আইকিউ পরীক্ষা তৈরি করেছিলেন; একটি প্রাক-স্কুল এবং প্রিস্কুলের শিশুদের জন্য, একটি বয়সে আরেকটু বড় বাচ্চাদের এবং একটি প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য। এর স্কোর মূলত ফ্যাক্টর বিশ্লেষণের ভিত্তিতে তৈরি। আর একটি সাধারণভাবে ব্যবহৃত পরীক্ষা হল উডকক-জনসন পরীক্ষা। এই পরীক্ষায় আমাদের জ্ঞানীয় ক্ষমতাগুলো মূল্যায়ন করা হয়।

বিজনেস দুনিয়ার সাথে EQ এবং IQ এর সম্পর্ক

ব্যবসায়িক বিশ্ব তাদের কর্মীদের উন্নতির জন্য সঠিকভাবে EQ ব্যবহার করার বিষয়টি বোঝার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ১৯৯৫ সালে গোলম্যান এই শব্দটি প্রথম ব্যবহার করার পর থেকে অনেক ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান এই EQ বিবেচনায় নিয়েছে। তাঁর বই প্রকাশের পর থেকে, তিনি বিশ্বজুড়ে ভাল নেতারা কীভাবে উচ্চ EQ রাখতে পারে তা নিয়ে বক্তব্য রেখেছেন। 

ট্র্যাভিস ব্র্যাডবেরি, ইমোশনাল ইন্টেলিজেন্স ২.০ বইটির সহযোগী লেখক, ফোর্বসের একটি নিবন্ধে  লিখেছেন যে উচ্চ EQ আমাদের বাণিজ্যিক সংগঠনগুলোর নেতৃবৃন্দকে সফল করে তোলে এবং সহানুভূতিশীল ও অন্তর্দৃষ্টিসম্পন্ন মানুষ হিসেবে গড়ে তোলে।

EQ হল পারফরম্যান্সের শক্তিশালী ভবিষ্যদ্বাণী; ব্র্যাডবেরির স্টাডিতে আরও বলা হয় যে টপ পারফর্মারদের ৯০ শতাংশেরই  EQ অনেক বেশি। এমনকি উচ্চ EQ সম্পন্ন ব্যক্তি সাধারণ আইকিউ (IQ) অধিকারী হয়েও সফল হন। 

শেষ কথা!

সর্বোপরি, জীবনে সফলতা পাওয়া কিংবা সফল হওয়ার বিষয়টি বেশকিছু ফ্যাক্টরের স্বমন্বয়ে হয়ে থাকে। স্বাস্থ্য, আর্থিক স্বচ্ছলতা ইত্যাদি ফ্যাক্টর যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি EQ এবং IQ এর ব্যাপারটিও এ ক্ষেত্রে সমানভাবে উচ্চারিত হয়ে আসছে। তাই কোন ফ্যাক্টর কতটা গুরুত্বপূর্ণ সেদিকে মনোনিবেশ না দিয়ে সবারই উচিত হবে দক্ষতা বৃদ্ধির এই বিষয়গুলো নিয়ে প্রতিনিয়ত কাজ করে যাওয়া।

ইমোশনাল ইনটেলিজেন্স অনলাইন কোর্স!

বর্তমান দশকের কর্মক্ষেত্রে সবচেয়ে প্রয়োজনীয় দশটি দক্ষতার একটি হলো ইমোশনাল ইন্টেলিজেন্স। বহুব্রীহির সংক্ষিপ্ত এই অনলাইন কোর্সের মাধ্যমে ইমোশনাল ইন্টেলিজেন্স, IQ vs EQ এবং এর সাথে সংশ্লিষ্ট দক্ষতাগুলো সম্পর্কে জানুন, ব্যক্তি ও কর্মজীবনে সেগুলো প্রয়োগ করতে চেষ্টা করুন এবং নিজের ও আশেপাশের মানুষের সাথে সম্পর্ক সুদৃঢ় করুন!


এখানে ক্লিক করুন

ইমোশনাল ইন্টেলিজেন্স

শেয়ার করুন

Leave a Comment