পার্সোনাল ব্র্যান্ড তৈরি করার ৭টি গোল্ডেন রুল

পার্সোনাল ব্র্যান্ড সম্পর্কে অ্যামাজনের প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোস বলেছিলেন,

“আপনার অনুপস্থিতিতে লোকেরা আপনাকে নিয়ে যা বলে তাই হচ্ছে আপনার ব্র্যান্ড।”

আপনি যা, যে কাজ করেন এবং যেভাবে করেন তার সবকিছু মিলেই আপনার পার্সোনাল ব্র্যান্ড। এটি এমন কিছু নয় যা আপনি অন্যেরটা হুবহু নকল করতে পারেন।

আপনি যদি সঠিক পন্থা অনুসরণ করেন তবে আপনার পার্সোনাল ব্র্যান্ড আপনাকে সব মানুষের ভিড়ে আলাদা করে তুলবে, আপনার দক্ষতার উপর আলোকপাত করবে এবং আপনার কাজের মান বাড়িয়ে তুলবে। এটি আপনাকে সবার মনোযোগ আকর্ষণেও সহায়তা করবে।

কীভাবে তৈরি করবেন পার্সোনাল ব্র্যান্ড? 99designs.com এ প্রকাশিত ‘Personal branding secrets: 7 steps to building an outstanding personal brand’ আর্টিকেলের লেখক Anna Lundberg এর মতে নিচের সাতটি ধাপে এ প্রশ্নের উত্তর পাওয়া সম্ভব।

১ম ধাপঃ আপনি কেন পার্সোনাল ব্র্যান্ড তৈরি করছেন তা বুঝুন

এটা পরিষ্কার যে আপনি সফল হতে চাইলে আপনার পার্সোনাল ব্র্যান্ড-এর প্রয়োজন। কিন্তু কীভাবে তা আপনাকে সাহায্য করবে? আপনি কী কী কারণে একটি শক্তিশালী ব্র্যান্ড তৈরি করতে চাচ্ছেন? অথবা, আপনি আপনার ব্র্যান্ডের মাধ্যমে কোন লক্ষ্য অর্জন করার চেষ্টা করছেন সে সম্পর্কে যদি আপনার পরিষ্কার ধারণা থাকে, তাহলে আপনি সহজেই সে লক্ষ্য অর্জন করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপগুলো ঠিক করতে পারবেন।

একজন ফ্রিলান্সারের জন্য পার্সোনাল ব্র্যান্ড-এর বিকল্প নেই। ধরুন আপনি একজন ফ্রিলান্সার। আপনার পার্সোনাল ব্র্যান্ড এমন হতে হবে যাতে সম্ভাব্য কাস্টমাররা আপনার ব্র‍্যান্ডের মাধ্যমে আশ্বস্ত হয়। তারা যেন নিজেরাই যেকোনো কাজে আপনাকে খুঁজে বের করে।

আবার আপনি কোনো ব্যবসায়ের মালিক হলে, আপনার পার্সোনাল ব্র্যান্ড এমন হতে হবে যাতে করে আপনার সম্ভাব্য গ্রাহকরা আপনাকে দেখে আপনার পণ্যের মান সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারে এবং আপনি প্রতিযোগীদের থেকে আলাদা থাকতে পারেন। ব্যবসায় বা পেশাদার জীবনে অসফলতা আসলেও যেন পার্সোনাল ব্র্যান্ড-এর কারণে আপনার ইম্প্রেশন ঠিক থাকে, এমন শক্তভাবেই নিজের পার্সোনাল ব্র্যান্ড তৈরি করতে হবে। এ কারণেই পার্সোনাল ব্র্যান্ড-এর শুরুতেই আপনার উদ্দেশ্য ঠিক করে নেয়া জরুরি।

২য় ধাপঃ পিআইই ঠিক করুন

দুর্ভাগ্যক্রমে, পেশাদার জীবনে উপরে উঠতে, শুধু কঠোর পরিশ্রম করাই আজকাল যথেষ্ট না। এর পাশাপাশি আপনাকে আপনার পিআইই নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। পিআইই হচ্ছে পারফরম্যান্স, ইমেজ এবং এক্সপোজার। ক্যারিয়ারে উন্নতি করতে হলে, এই তিনটি বিষয় নিয়ন্ত্রণ করা আবশ্যক।

সবকিছুর মূলেই হচ্ছে পারফরম্যান্স। আপনার কাজের ক্ষেত্রে সবসময় আপনাকে ইতিবাচক ফলাফল সরবরাহ করার চেষ্টা করতে হবে। 

ইমেজ হচ্ছে অন্যান্য লোকেরা আপনাকে নিয়ে কী ভাবে – এটাই আপনার পার্সোনাল ব্র্যান্ড। 

সবশেষে, এক্সপোজার এর মাধ্যমে আপনি কে এবং আপনার উদ্দেশ্য কী তা সবার কাছে পৌঁছানো সম্ভব।

এই ৩ ক্ষেত্রের মাঝে কোথায় নিজেকে উন্নত করার সুযোগ আছে তা বোঝার চেষ্টা করুন। আপনি কি কাজের ভাল ফলাফল পাচ্ছেন কিন্তু আপনার ইমেজ দুর্দান্ত নয়? আপনার ইমেজও ঠিক আছে কিন্তু আপনি এক্সপোজারের অভাব বোধ করছেন? সেরা ফলাফলের জন্য আপনাকে তিনটি দিকেই মনোযোগ দিতে হবে।

৩য় ধাপঃ আপনার পার্সোনাল ব্র্যান্ড-এর কাঠামো ঠিক করুন

একটি পার্সোনাল ব্র্যান্ড-এর কাঠামোতে বেশ কয়েকটি মূল উপাদান থাকে:

পার্সোনাল ব্র্যান্ড – এর উদ্দেশ্যঃ

আপনার সামগ্রিক উদ্দেশ্য কী? আপনি কেন রোজ সকালে উঠে কাজে যান? আপনি কী অর্জন করতে চূড়ান্ত চেষ্টা করছেন? (সেটা পেশাদার ক্ষেত্রে হতে পারে আবার আপনার পণ্য বা পরিষেবা দিয়ে অন্যকে সহায়তা করাও হতে পারে।)

পার্সোনাল ব্র্যান্ড – এর অন্তর্নিহিত উদ্দেশ্যঃ

আপনার ব্যক্তিগত এবং পেশাদার জীবনে কোন জিনিসগুলোকে আপনি সবচেয়ে মূল্যবান হিসেবে বিবেচনা করেন? সৃজনশীলতা নাকি নতুনত্ব? আন্তরিকতা নাকি শ্রদ্ধা? শৃঙ্খলা নাকি নির্ভরতা? এরকম মোটামুটি ৫টি পয়েন্ট ঠিক করুন।

আপনার কথায় বিশ্বাসের কারণগুলিঃ

আপনার স্কিলগুলো কী কী? আপনার মধ্যে এমন কোন পারদর্শিতাগুলো আছে যা অন্যান্যদের মাঝে নেই? কিসের সাহায্যে আপনি মানুষের বিশ্বাস অর্জন করবেন?

এখন, আপনি নিজেকে নিয়ে যা যা দাবি করছেন, তা প্রমাণ করার জন্য আপনার পুরষ্কার, সার্টিফিকেট, ডিগ্রী, বিশেষ মিডিয়া উপস্থিতি এবং আপনার কাজের মূল উদাহরণগুলোর একটি তালিকা তৈরি করুন।

৪র্থ ধাপঃ অজান্তেই আপনি কীভাবে পার্সোনাল ব্র্যান্ড করে যাচ্ছেন তা দেখুন

সর্বপ্রথম দেখুন, গুগল আপনার সম্পর্কে কী বলে? যুক্তরাজ্যের ফ্যাশন ইউনাইটেড ম্যাগাজিনের সাংবাদিক মার্জোরি ভ্যান এভলিনের এক আর্টিকেল মোতাবেক, ৭০% নিয়োগকর্তা আপনার সম্পর্কে জানতে গুগল ব্যবহার করেন আবার ৭০% নিয়োগের প্রাথমিক প্রক্রিয়ার অংশ হিসাবে আপনার সোশ্যাল মিডিয়ার প্রোফাইলগুলো পর্যালোচনা করা হয়।

আপনার নাম লিখে খুঁজলে গুগলে প্রথমে কী আসে? আপনার ব্যক্তিগত ফেসবুক বা আপনার লিঙ্কডইন প্রোফাইল? গুগল ইমেজ ট্যাবে ক্লিক করুন, আপনি যে ছবিগুলি দেখছেন, সেগুলো কি আপনি একটা পেশাদার প্লাটফর্মে দেখাতে চান? আবার এমন না তো যে, গুগলে আপনাকে একেবারেই দেখা যাচ্ছে না বরং একই নামের অন্য কাউকে দেখাচ্ছে?

গুগল আপনার যেরকম ইম্প্রেশন সৃষ্টি করে, তা যদি আপনি আপনার পেশাদার জীবনে না চান তাহলে এখনই পার্সোনাল ব্র্যান্ড-এর কাজ শুরু করতে হবে।

এবারে দেখুন আপনি আপনার সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইলে নিজেকে কীভাবে উপস্থাপন করছেন।

ফেসবুক আমরা অনেকটা খুব খেয়ালীভাবে ব্যবহার করি। যেকোনো কিছু নিয়ে বিরক্ত প্রকাশ, রাজনৈতিক কথাবার্তা, নিজের ক্যাজুয়াল সেলফি কিংবা হাস্যরসাত্মক কোনো লেখনী, সবই আমরা ফেসবুকে খুব অকপটে পোস্ট করে ফেলি। সম্ভাব্য গ্রাহক, অংশীদার, বিনিয়োগকারী বা নিয়োগকারীরা যখন এই ছবিগুলো এবং আপডেটগুলো দেখে কী চিন্তা করে তা ভাবার সময় এসেছে। কিন্তু যেহেতু ফেসবুক আসলে ক্যাজুয়ালিটি বাদ দিয়ে ব্যবহার করা কঠিন তাই পেশাদার জীবনের জন্য আলাদা একটা অ্যাকাউন্ট রাখতে পারেন।

এরপর আসে লিংকডইন। আপনার প্রোফাইল কি আপ-টু-ডেট আছে? কী ধরনের পোস্টে কী ধরনের কমেন্ট করছেন আপনি? নিষ্ক্রিয় এবং নেতিবাচক লিংকডইন প্রোফাইল অনেক খারাপ ইম্প্রেশনের সৃষ্টি করে।

কোনো সম্ভাব্য নিয়োগকর্তা বা গ্রাহক আপনাকে অনলাইনে খুঁজলে কী পান? তার ভিত্তিতে আপনাকে কী ভাবেন? এটা চিন্তা করুন এবং আপনি যে যে পরিবর্তন করতে চান তা নোট করুন।

অফলাইনে অন্যরা আপনাকে কীভাবে দেখছে তা নির্ধারণ করা কিছুটা কঠিন। আপনার সহকর্মী, বন্ধুবান্ধব, ব্যবসায়িক সহযোগী এবং প্রাক্তন গ্রাহকদের জিজ্ঞাসা করার চেষ্টা করুন তারা কীভাবে অন্যের কাছে আপনাকে বর্ণনা করে। দেখুন যে আপনি আপনার যেসব বৈশিষ্ট্যে জোর দিতে চান, সেগুলো তারা উল্লেখ করছে কিনা। তবে এ ক্ষেত্রে সবসময় সৎ থাকুন। কারণ আপনি নিজে যেমন না, তেমনভাবে নিজেকে উপস্থাপন করার চেষ্টা করলে মানুষ বেশিরভাগ সময়ই তা বুঝতে পারে।  এই ব্যাপারটা খুব ইতিবাচকভাবে নেয়া হয় না।

অফলাইনে শারীরিক উপস্থাপনাও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সবসময় অগোছালো থাকলে কিংবা দৃশ্যমান ট্যাটু বা এধরনের কিছু থাকলে অনেকেই তা ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখে না। মানুষ স্বাভাবিকভাবেই প্রথমে চোখের দেখায় একটা মানুষকে বিচার করে আর পরে তার গুণ দেখে।

৫ম ধাপঃ সবাইকে নিজের গল্পটা বলুন

পূর্ব ধাপে যে জিনিসগুলো নোট করেছেন, সেগুলোর বাস্তবায়ন করতে হবে এই ধাপে। এখানে আপনি শুধু কী বলছেন তাই না, আপনি কিভাবে আর কোথায় বলছেন তাও ঠিক রাখা জরুরী।  

বর্তমানে অনেক সোশ্যাল মিডিয়া থাকলেও পেশাদার জীবনে লিংকডইনই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। লিংকডইনে নিজেকে ইতিবাচকভাবে উপস্থাপন করতে হলে যে বিষয়গুলো অনুসরণ করা যায়;

প্রোফাইলে ফর্মাল ছবি রাখুনঃ

পরিষ্কার ব্যকগ্রাউন্ড আর রেজ্যুলেশনের উপস্থাপনযোগ্য ছবি লিংকডইনে রাখা বাঞ্ছনীয়। ফেসবুক বা ইন্সটাগ্রামে আমরা যেসব ছবি রাখি তা এখানে না রাখাই শ্রেয়। আর ছবি আপলোড করার আগে ফাইলের নাম পরিবর্তন করে আপনার নিজের নামে রিনেম করে নিলে আপনাকে সহজেই খুঁজে পাওয়া যাবে। (যেমন, Sadia-Tasmia.jpg)

হেডলাইন কাস্টমাইজ করুনঃ

লিংকডইনে আপনার নামের নিচে একটা হেডলাইন থাকে যা লিংকডইন অটোম্যাটিকালি দিয়ে দেয় কিন্তু আপনি চাইলে তা কাস্টমাইজ করে নিতে পারবেন। এখানে শুধু “ফ্রিলান্সার” বা এধরণের কিছু না লিখে বরং আপনার কী কী স্কিল আছে তা লিখুন। আপনি যদি একজন চাকরিজীবী হোন, তবে আপনার পদবীর সাথে আপনার দায়িত্বগুলোও লিখে দিন। মূলত এখানে আপনার ‘এলেভেটর পিচ’ টি ব্যবহার করুন।

আকর্ষনীয় সংক্ষিপ্ত বিবরণ লিখুনঃ

হেডলাইনের নিচেই এই বিবরণী থাকে। এটাও লিংকডইনে অটোম্যাটিকালি দেয়া থাকে কিন্তু আপনি নিজের মতো করে লিখতে পারবেন। এখানে আপনার সম্পর্কে কিছু কথা লিখে আপনি কী করেন, কী করতে পারেন, কী করেছেন, কী করতে আগ্রহী এসব সংক্ষেপে লিখুন। আপনার অর্জনগুলোও এখানে লিখুন। সবকিছু ফার্স্ট পারসনে লেখার চেষ্টা করুন তাতে আপনাকে অ্যাপ্রোচেবল মনে হয়। কোনো বিশেষ কিছু বলার থাকলেও এখানে বলুন। সবশেষে আপনার সাথে সহজে যোগাযোগের একটা মাধ্যম দিয়ে দিন, যেমন ই-মেইল অ্যাড্রেস।

কাজের অভিজ্ঞতার বিস্তারিত বর্ণনা দিনঃ

কাজের বিবরণ দেয়ার জায়গায় শুধুতে কোথায় কাজ করেছেন তা না লিখে বরং কী করেছেন, আপনি সেখানে কী ইতিবাচক পরিবর্তন এনেছেন এবং আপনি কী কী শিখেছেন আর অর্জন করেছেন তা লিখুন।

আপনার স্কিলগুলো যুক্ত করুনঃ

আপনার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্কিলগুলো এখানে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে কি না তা নিশ্চিত করুন। আপনি স্কিলগুলো আপনার পছন্দ মত সাজাতে পারবেন। আপনার সবচেয়ে জরুরী স্কিল যেন সবার আগে নজরে পড়ে তার দিকে লক্ষ্য রাখুন।

অতীত নিয়োগকারীদের ও সহকর্মীদের কাছ থেকে এন্ডোর্সমেন্ট নিনঃ

পরিচিত মানুষদের আপনার প্রোফাইল রেকমেন্ড করতে ও স্কিল এন্ডোর্স করতে বলতে দ্বিধাবোধ করবেন না। কারণ আপনি না চাইলে লিংকডইনে নিজে থেকে কেউ এসব করবে না।

সব সোশ্যাল মিডিয়ায় সমানভাবে সক্রিয় থাকার সময় না থাকাটাই স্বাভাবিক। তাই সাবধানতার সাথে আপনার পছন্দের সোশ্যাল মিডিয়াটি নির্বাচন করুন এবং পার্সোনাল ব্র্যান্ড-এর উদ্দেশ্যে সেগুলো সাজান।

টুইটারঃ

আপনার ফর্মাল ছবি ব্যবহার করার চেষ্টা করুন এখানে। আপনার টুইটার বায়ো আপনাকে ঠিকমত বর্ণনা করছে কিনা তা নিশ্চিত করুন। আপনার টুইটগুলিও সামঞ্জস্যপূর্ণ রাখুন। যাচ্ছেতাই টুইট না করে কিছুটা ব্যক্তিত্ব বজায় রাখুন। একটি পিনড টুইট রাখতে পারেন যাতে মানুষ আপনার প্রোফাইলে ঢুকে সবার আগে সেটা দেখে।

ফেসবুকঃ

যদি আপনি নিজের ব্যক্তিগত জীবনকে ব্যক্তিগত রাখতে চান, তবে পেশাদার জীবনের পরিচিত মানুষগুলোর জন্য একটি আলাদা ফেসবুক অ্যাকাউন্ট তৈরি করা যেতে পারে। এখানেও আপনার বায়োগ্রাফিটি সম্পূর্ণ এবং ব্যক্তিত্বপূর্ণ রাখুন। আপনার ওয়েবসাইট বা কাজের পোর্টফোলিও এখানে সংযুক্ত করতে পারেন।

ইন্সটাগ্রামঃ

আপনি যদি একজন সৃজনশীল ব্যক্তি হন বা যদি খাবার, সৌন্দর্য অথবা ফ্যাশনে আগ্রহী হন তবে ইন্সটাগ্রাম আপনার জন্য। ইনস্টাগ্রামের মতো একটি ভিজ্যুয়াল প্ল্যাটফর্ম আপনার পার্সোনাল ব্র্যান্ড-কে দৃষ্টিনন্দন উপায়ে তুলে ধরার করার ভালো সু্যোগ হতে পারে। এখানেও ফেসবুক আর টুইটারের মত সাধারণ বিষয়গুলো মাথায় রাখুন।

প্রয়োজনে আপনি নিজের একটি ওয়েবসাইটও তৈরি করতে পারেন। এক্ষেত্রে একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে ই-মেইলের জন্য সবসময় জিমেইল ব্যবহার করা শ্রেয়। কারণ, জিমেইলকে বেশিরভাগ প্রফেশনাল কাজে ব্যবহার করা হয়, সব ক্ষেত্রে এর গ্রহনযোগ্যতা রয়েছে এবং ভালো ইম্প্রেশন তৈরির সুযোগ করে দেয়। তাছাড়া, আজকাল বেশিরভাগ কাজই গুগল ড্রাইভের মাধ্যমে হয় যা ব্যবহার করতে জিমেইল অ্যাড্রেস আবশ্যক।

৬ষ্ঠ ধাপঃ অনলাইনে নিজের উপস্থিতিকে আরো আকর্ষণীয় করুন

কষ্ট করে এতো সব কিছু করার পরে আপনি যদি নিষ্ক্রিয় হয়ে যান তাহলে সব বিফলে যাবে। তাই সক্রিয় থাকতে নির্দিষ্ট সময় পর পর আপনার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ ভাল লেখা বা ভিডিও আপলোড করতে থাকুন।

এই পুরো প্রক্রিয়া জুড়ে, পরিচিতি মানুষদের সাথে যোগাযোগে বজায় রাখুন। বিভিন্ন ইভেন্টে গিয়ে অপরিচিত ব্যক্তির সাথে কথা বলুন এবং নিজের পরিচিতি প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করুন। অনেকে নেটওয়ার্কিং করতে অস্বস্তি বোধ করে, কিন্তু যখন খেয়াল করবেন যে মানুষের সাথে একটু কথা বললেই জড়তা কেটে যাচ্ছে, তখন আর অস্বস্তি লাগবে না। চেষ্টা করুন অন্যদের সাহায্য করার, এতে মানুষও আপনাকে সাহায্য করবে।

৭ম ধাপঃ পার্সোনাল ব্র্যান্ডিং করার জন্য একটি সুনির্দিষ্ট কৌশল অবলম্বন করুন

সবশেষে, আপনি যেখানেই (অনলাইন, অফলাইন) বা যেভাবেই পার্সোনাল ব্র্যান্ড করেন না কেন, মাথায় রাখবেন যাতে আপনার সব পোস্ট আপনাকে নিয়ে একই বার্তা প্রেরণ করে।

নিজ নিজ প্রয়োজন মোতাবেক, বিভিন্ন উপায়ে সুগঠিত পার্সোনাল ব্র্যান্ড তৈরি করা যেতে পারে তবে এই সাতটি ধাপ অনুসরণ করলে প্রক্রিয়াটি অনেক সহজ হয়ে যায় এবং এর কার্যকারিতার সম্ভাবনাও বেড়ে যায়।

পার্সোনাল ব্র্যান্ড-এর ধারণাটি যখন একদম নতুন এবং যখন মানুষের এ নিয়ে ধারণা কম ছিল, তখন ব্র‍্যান্ডিং করতে গিয়ে সবাই বিভিন্ন বাধার সম্মুখীন হয়েছে। এমন অনেক বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব রয়েছেন যারা পার্সোনাল ব্র্যান্ড তৈরি করার উদ্দেশ্যে বছরের পর বছর অনেক সময় এবং শ্রম দিয়ে সফল হয়েছে। কিন্তু এখন সময় পাল্টেছে, চাইলেই আপনি অন্যের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে সহজেই নিজের ব্র‍্যান্ডিং করে ফেলতে পারেন। আর আপনাকে সাহায্য করার জন্য সাতটি ধাপ তো আছেই। তবে আর দেরি কেন? শুরু করে দিন নিজেই নিজের ব্র‍্যান্ড তৈরি করা!

সোর্স আর্টিক্যাল: ‘Personal branding secrets: 7 steps to building an outstanding personal brand’ by Anna Lundberg published in 99designs.com

ইমোশনাল ইনটেলিজেন্স অনলাইন কোর্স!

বর্তমান দশকের কর্মক্ষেত্রে সবচেয়ে প্রয়োজনীয় দশটি দক্ষতার একটি হলো ইমোশনাল ইন্টেলিজেন্স। বহুব্রীহির সংক্ষিপ্ত এই অনলাইন কোর্সের মাধ্যমে ইমোশনাল ইন্টেলিজেন্স এবং এর সাথে সংশ্লিষ্ট দক্ষতাগুলো সম্পর্কে জানুন, ব্যক্তি ও কর্মজীবনে সেগুলো প্রয়োগ করতে চেষ্টা করুন এবং নিজের ও আশেপাশের মানুষের সাথে সম্পর্ক সুদৃঢ় করুন!


এখানে ক্লিক করুন

ইমোশনাল ইন্টেলিজেন্স

শেয়ার করুন

1 thought on “পার্সোনাল ব্র্যান্ড তৈরি করার ৭টি গোল্ডেন রুল”

Leave a Comment