নিজেকে পর্যালোচনা করা
ভার্সিটি চার-পাঁচ বছরে আমাদের অজান্তেই কিছু স্কিল ডেভেলপ হয়ে যায়, যেগুলো ভবিষ্যতের কর্মজীবনে কাজে লাগবে। সেই স্কিল গুলো আমাদের খুঁজে বের করতে হবে। কারণ ক্লাসে শিক্ষকরা সবাইকে সেগুলো পয়েন্ট আউট করে দেয়ার মত সময় ও সুযোগ পান না।
যেমন ধরা যাক, ভার্সিটির প্রতিটি সেমিস্টারে একসাথে অনেকগুলো কোর্স নিয়ে লেখাপড়া করতে গিয়ে অনেক ল্যাব, ক্লাস, এসাইনমেন্ট, রিপোর্ট, টেস্ট, প্রজেক্ট নিয়ে একসাথে চিন্তা ভাবনা করতে হয়। অনেকগুলো দিক একসাথে সামাল দিতে হয়। এই চাপ নেয়া আর সামাল দেয়ার স্কিল টা আমাদের ভেতরে তৈরি হয়ে যায় যা পেশাদার জীবনে অনেক কাজে লাগে। এভাবে নিজের ভেতরের অন্যান্য স্কিলগুলো নিজেকেই খুঁজে বের করতে হবে।
ভলান্টিয়ার হিসেবে কাজ করা
ভলান্টিয়ারিং অভিজ্ঞতা রেজিউমির জন্য চমৎকার সাপ্লিমেন্ট হিসেবে কাজ করে। একজন সাধারণ ছাত্রের ভলান্টিয়ারিং কাজগুলো তাকে একজন চাকুরীদাতার কাছে পরিশ্রমী, কর্মঠ ও নিবেদিত প্রার্থী হিসেবে তুলে ধরে। তাই রেজিউমি তে ভলান্টিয়ারিং অভিজ্ঞতাগুলো যথেষ্ট গুরুত্বের সাথে তুলে ধরতে হবে। বাংলাদেশের মত একটি উন্নয়নশীল দেশে ক্যাম্পাস ও সামাজিক জীবনে সেচ্ছাশ্রমের যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে।
রেজিউমির শুরুটা কেমন হবে?
রেজিউমির উপরে যথারীতি নাম-ধাম আর কন্টাক্ট ইনফো গুলো লেখার পর মূল অংশের শুরুতেই নিজের সব থেকে সবচেয়ে শক্তিশালী দিকটি তুলে ধরতে হবে। সেটা নিজের ক্লাসের গ্রেড হতে পারে। গ্রেড যদি ভালো না হয় সেক্ষেত্রে ভলান্টিয়ারিং অভিজ্ঞতা দিয়ে শুরু করা যেতে পারে। ক্যাম্পাসে থাকাকালীন অনেকে ক্লাব, প্রজেক্ট, কম্পিটিশনের সাথে যুক্ত থাকে, সেগুলো দিয়ে শুরু করা যেতে পারে। যদি রেজাল্ট আর অভিজ্ঞতা কোনো ক্ষেত্রেই উল্লেখ করার মত কিছু না থাকে, সেক্ষেত্রে নিজের অর্জিত স্কিলগুলোর একটা লিস্ট দিয়ে রেজিউমি শুরু হতে পারে। অনেকেই অনেক সফটওয়্যারে পারদর্শী, অনান্য Soft Skills ও আছে অনেকের; সেগুলো দিয়েও শুরু করা যায়।
রেজিউমি তে শুরুর অংশটা একজন প্রার্থীর জন্য নিজেকে প্রোমোট করার জায়গা, তাই নিজের সব থেকে শক্তিশালী ফিচারগুলো শুরুতেই লিখে দেয়া উচিৎ।
সেকশন গুলোর ক্রম কেমন হবে?
রেজিউমির অনেকগুলো সেকশন থাকে, যেমন- Educational Background, Work Experience, Skills, Hobbies ইত্যাদি। একজন চাকুরীদাতা এই সবগুলো সেকশনেই হয়ত চোখ বুলাবেন। তবে চাকুরীদাতার ডিসিশন মেকিং এর জন্য সবগুলো সেকশন সমান গুরুত্বপূর্ণ নয়। তাই রেজিউমি তে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং সমৃদ্ধ সেকশন সবার আগে রেখে, গুরুত্বের ক্রমানুসারে বাকি সেকশন গুলো সাজাতে হবে। Hobbies বা অন্যান্য তুলনামূলক কম গুরুত্বপূর্ণ সেকশনগুলো সবার শেষে থাকা উচিৎ। তবে কোনো সেকশন যেন বাদ না যায় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
ফিডব্যাক নেয়া
রেজিউমি তৈরি করার পর একাধিক ব্যক্তিকে দেখিয়ে তাদের মতামত ও পরামর্শ নেয়া উচিৎ। বানান ও ব্যকরণগত ভুলগুলো বার বার চেক করে দেখতে হবে। সামগ্রিক ভাবে রেজিউমিটা যেন দেখতে ও পড়তে আকর্ষণীয় হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখা উচিৎ। কাজের অভিজ্ঞতা বৃদ্ধির সাথে সাথে ২/৩ মাস পর পর রেজিউমি আপডেট করতে হবে।
স্যাম্পল রেজিউমি টেমপ্লেট

কিছু বিষয় লক্ষণীয়
১। রেজিউমি একজন ব্যক্তির এডভারটাইজমেন্ট হিসেবে কাজ করে, কাজেই এটাকে সেভাবেই মূল্যায়ন করতে হবে। রেজিউমি তৈরি করা এবং ডিজাইন করায় প্রফেশনাল হতে হবে। একজন চাকুরীদাতা কখনই এমন কোনো রেজিউমি তে আকৃষ্ট হবে না যেটার ফন্ট কালার পিঙ্ক, অথবা Hobby হিসেবে Shopping লিখে রাখা হয়েছে! তাই নিজেকে নিজের কাছে আগে সিরিয়াস হতে হবে, তাহলেই কেবল একজন চাকুরীদাতা সেই রেজিউমি সিরিয়াসলি নিবেন।
২। নিজের উপর আস্থা রাখতে হবে। ক্লাসের বাকিদের চেয়ে নিজেকে এগিয়ে রাখার মত দক্ষতা নিজের আছে- এই বিশ্বাসটুকু নিজের উপর রাখতে হবে!
৩। ছাত্রাবস্থায় পেশাদার কাজের কোনো অভিজ্ঞতা নেই-এর মানে এই নয় যে চাকুরী টা পাওয়া অসম্ভব। নিজের দক্ষতার উপর আস্থা রাখতে হবে।
৪। রেজিউমি তে মিথ্যা তথ্য দেয়ার চেষ্টা করা উচিৎ না, বাড়িয়ে বলারও দরকার নেই। সত্যটুকু সুন্দরভাবে ভাবে লিখে দিতে পারলেই চলবে।
Template Download Link: https://goo.gl/eItdZE
Thanks: WikiHow
- ফেসবুক এডভার্টাইজিং করতে কত টাকা খরচ হয়? - February 18, 2020
- কর্পোরেট ই-লার্নিং এর সুবিধা ও সম্ভাবনা - November 2, 2019
- স্টার্টাপ আইডিয়া মূল্যায়ন করবো কীভাবে? - July 27, 2019