ডিজিটের পরিবর্তে ইমোজি ব্যবহার করে পাসওয়ার্ড??

আচ্ছা যদি এমন হত- স্মার্টফোনে সাধারণ ৪ ডিজিট পিনের বদলে ইমোজি ব্যবহার করতে পারছেন পাসওয়ার্ড হিসেবে! ১২৩৪ বা এধরনের ডিজিট দিয়ে বানানো পিনের তুলনায় এটা আরও সহজ, নিরাপদ আর ইন্টারেস্টিং হত না?

আমরা সাধারণত ইমোজি ব্যবহার করি ইমেইল বা টেক্সট মেসেজে আবেগ-অনুভূতি প্রকাশের জন্য। ২০১৫ সালে একটি ব্রিটিশ কোম্পানি সর্বপ্রথম ব্যাংকের এটিএম কার্ডে নাম্বার পিনের জায়গায় ইমোজি ব্যবহার শুরু করে।

অধিকাংশ স্মার্টফোন ব্যবহারকারী স্ক্রিন লক করে রাখেন এবং প্রতিদিন অগনিত বার এটা আনলক করতে হয়। অনেকেই সংখ্যার কম্বিনেশান ব্যবহার করে। কিন্তু গবেষনায় দেখা গেছে, সংখ্যার চেয়ে ছবি মনে রাখা সহজ। তাছাড়া, PIN এ খুব কম সংখ্যক কম্বিনেশন বানানো যায়। যদিও চাইলে বেশ শক্তিশালি পাসওয়ার্ড তৈরি সম্ভব কিন্তু তা মনে রাখা এবং টাইপ করা কঠিন। অন্যদিকে ইমোজি ব্যবহার করে প্রায় ২৫০০ ধরনের ইমোজি থেকে কম্বিনেশান বানানো সম্ভব, যা ভাঙ্গা বেশ কষ্টসাধ্য বটে।

এ বিষয়ে মিশিগান ইউনিভার্সিটি এর অধীনে একটি পরীক্ষা চালানো হয় সম্প্রতি। এক্ষেত্রে, ৫৩ জনকে এন্ড্রয়েড মোবাইল দিয়ে ২ ভাগে ভাগ করা হয়। প্রথম ভাগে ২৭ জনকে ইমোজি পাসকোড ব্যবহার করতে দেয়া হয়। মোট ১২ ধরনের ইমোজি থেকে সিকুয়েন্স তৈরি করতে বলা হয়। বাকিরা নাম্বার পাসকোড ব্যবহার করে।

দেখা যায়, বেশিরভাগ মানুষ তিন উপায়ে ইমোজি বাছাই করেঃ

১. ইমোজি গুলো কীভাবে কী বোর্ডে সাজান ছিল, তার উপর যেমন কেউ কেউ এক কোনায় উপর থেকে নিচে কোড বেছে নিয়েছে।

২. ব্যক্তিগত পছন্দের ইমোজি

৩. গল্পের ছলে ইমোজি বাছাই। যেমন, একজন লোক গানের লাইন অনুসারে ইমোজি সিলেক্ট করেছে, যাতে গানের লাইনের সাথে মিলে এমন সংকেত ব্যবহৃত হয়েছে।

এরপর ঐ ৫৩ জনকে ১ সপ্তাহ পর যার যার পাসওয়ার্ড আবার টাইপ করতে বলা হয়। সব মিলিয়ে, নাম্বার পিন যাদের ছিল, তারা খুব অল্প পরিমানে বেশি মনে রাখতে পেরেছে। কিন্তু যাদের ইমোজি ছিল তারা আনন্দ পেয়েছে বেশি।

উইন্ডোজের পাসওয়ার্ড ভুলে গেলে কি করবেন? জানতে ক্লিক করুন এখানে…

এদিকে আর এক পরীক্ষায় ৪১ জনের ফোনে ইমেইল অ্যাপ দেয়া হয়, যাদের প্রায় অর্ধেক ইমোজি পাসকোড ব্যবহার করে আর বাকিদের নাম্বার দেয়া হয়। দুই দলই তাদের পাসওয়ার্ড সহজে মনে রেখেছে।

সবশেষে আরেকটা পরীক্ষা চালানো হয়, কোন ধরনের পাসওয়ার্ড চুরি করা বেশি সহজ তা নিয়ে। এবার, পাসওয়ার্ড টাইপের সময়, একজনকে পিছন থেকে গোপনে দেখতে বলা হয়। দেখা গেল, ৬ টা ইমোজি বিশিষ্ট পাসকোড চুরি করা ও মনে রাখা সবচেয়ে কষ্টকর ছিল। অন্যদিকে, ৬ ডিজিটের নাম্বার চুরি করাছিল বেশ সহজ।

ইমোজি পাসওয়ার্ড শুধু শক্তিশালীই নয়, এটা বেশ আনন্দদায়কও। তবে অবশ্যই কিবোর্ডের সিকুয়েন্স হুবহু ব্যবহার করা যাবে না! তো সেদিন বেশি দূরে নয়, যখন আপনিও হয়ত হাসি-কান্নার ইমোজি ব্যবহার করে প্রতিদিন আপনার ডিভাইস আনলক করবেন!

মূলঃ “Why Emojis might be Your Next Password?” by lorian Schaub, University of Michigan, from “The Conversation”

শেয়ার করুন

Leave a Comment