ডিজিটাল মার্কেটিং গাইড: বিগিনারদের জন্য

আপনার ডিজিটাল মার্কেটিং জার্নি শুরু করার জন্য সম্পূর্ণ গাইডলাইন এটি। এ গাইডলাইন থেকে আপনি:

  • ডিজিটাল মার্কেটিং সম্পর্কিত সবচেয়ে বেসিক ও গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো পাবেন
  • ডিজিটাল মার্কেটিং থেকে আয় করার উপায় জানবেন
  • ডিজিটাল মার্কেটিং শেখার উপায় নিয়ে ধারণা পাবেন

আপনি যদি ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে একেবারে নতুন হয়ে থাকেন, তাহলে কিছু পরামর্শও থাকবে আপনার জন্য।

তাহলে শুরু করা যাক।

ডিজিটাল মার্কেটিং গাইড (PDF) ডাউনলোড

৮০০০+ শব্দের এ গাইড সংগ্রহে রাখার জন্য ডাউনলোড করে নিতে পারেন নিচের ফর্মটি পূরণ করে। হাতে সময় থাকলে ব্লগেই পড়া চালিয়ে যান!

ডিজিটাল মার্কেটিং বেসিকস

ডিজিটাল মার্কেটিং কী?

ডিজিটাল মাধ্যমে কোনো প্রোডাক্ট, সার্ভিস ও ব্র্যান্ডের প্রোমোশন চালানোই হলো ডিজিটাল মার্কেটিং। যেমন, আপনি ফেসবুক চালানোর সময় স্পন্সরড পোস্ট দেখতে পান। এ পোস্টগুলো ডিজিটাল মার্কেটিং ক্যাম্পেইনের অংশ।

ফেসবুকের Sponsored পোস্টগুলো ডিজিটাল মার্কেটিং ক্যাম্পেইন থেকে আসে

অবশ্য শুধু অ্যাডভার্টাইজিংয়ের মধ্যে ডিজিটাল মার্কেটিং সীমাবদ্ধ নয়। আপনি যখন গুগলে কোনো কিছু সার্চ করেন, তখন রেজাল্ট পেইজে যে লিংকগুলো দেখা যায়, সেগুলো ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের মাধ্যমেই সম্ভব হয়।

SEO দিয়ে সার্চ রেজাল্টে র‍্যাংক করতে চায় ব্র্যান্ডগুলো

ডিজিটাল মার্কেটিং কেন দরকার?

  • প্রোডাক্ট ও সার্ভিসের সেলস বৃদ্ধি করতে
  • প্রোডাক্ট, সার্ভিস ও ব্র্যান্ডের প্রোমোশন করতে

দরকার অনুযায়ী ছোট, মাঝারি ও বড় সাইজের ব্যবসাগুলো বিভিন্ন ডিজিটাল মার্কেটিং চ্যানেলে নিজেদের প্রোমোশন চালায়। এর বাইরে অন্যান্য ব্র্যান্ড, প্রতিষ্ঠান ও পার্সোনালিটি নিজেদের অনলাইন প্রেজেন্স ঠিক রাখতে ডিজিটাল মার্কেটিং ব্যবহার করেন।

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং

Facebook, Instagram, Twitter-সহ বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া চ্যানেলে প্রোডাক্ট, সার্ভিস ও ব্র্যান্ডের প্রোমোশন চালানো হলো সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং। কম সময়ে ও খরচে কাস্টমারদের কাছে প্রোমোশন করতে সোশ্যাল মিডিয়া চ্যানেলগুলো অত্যন্ত জনপ্রিয়। আমাদের দেশের অধিকাংশ ব্র্যান্ড ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের জন্য এখনো সোশ্যাল মিডিয়ার উপর নির্ভর করে বেশি।

সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন

Google, Bing, Yahoo-সহ বিভিন্ন সার্চ ইঞ্জিনের রেজাল্টে কোনো প্রোডাক্ট, সার্ভিস বা ব্র্যান্ডের র‍্যাংকিং ভালো করার জন্য সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (Search Engine Optimization) বা এসইও (SEO) দরকার হয়।
ইন্টারনেট ইউজাররা প্রতিনিয়ত সার্চ ইঞ্জিনে কোনো না কোনো সার্চ করেন। এসব সার্চ রেজাল্টের একেবারে প্রথম দিকে যেন আপনার প্রোডাক্ট, সার্ভিস বা ব্র্যান্ডের নাম চলে আসে, এসইওর মাধ্যমে সেটাই নিশ্চিত করতে পারবেন আপনি।

পে-পার-ক্লিক (PPC) অ্যাডভার্টাইজিং

সার্চ ইঞ্জিনের রেজাল্টে কোনো প্রোডাক্ট, সার্ভিস বা ব্র্যান্ডের র‍্যাংকিং সবসময় ভালো নাও হতে পারে। সেক্ষেত্রে সার্চ ইউজারদের কাছে সরাসরি বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে প্রোমোশন চালাতে পারবেন পে-পার-ক্লিক অ্যাডভার্টাইজিং দিয়ে। সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং (Search Engine Marketing) বা এসইএম (SEM) নামেও এটি পরিচিত।

কন্টেন্ট মার্কেটিং

ব্র্যান্ডগুলো অনেক সময় এমন সব কন্টেন্ট ব্যবহার করে, যেগুলো প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের সাথে সরাসরি সম্পর্কিত নয়। বরং কাস্টমার ও ইউজারদের আস্থা অর্জনের জন্য এমন কন্টেন্ট কাজে দেয়। এ আস্থাই পরবর্তীতে প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের সেলস বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। কন্টেন্টের এমন স্ট্রাটেজিক ব্যবহারই কন্টেন্ট মার্কেটিং হিসাবে পরিচিত। বাইরের ব্র্যান্ডগুলো, বিশেষ করে বিজনেস-টু-বিজনেস (B2B) ব্র্যান্ডগুলো, এমন মার্কেটিংয়ের জন্য বড় বাজেট রাখে।

ইমেইল মার্কেটিং

ইমেইলের মাধ্যমে প্রোডাক্ট, সার্ভিস বা ব্র্যান্ডের প্রোমোশন চালানোকে ইমেইল মার্কেটিং বলে। বাইরের দেশগুলোতে কাস্টমার বা ইউজারদের কনফিডেন্স অর্জনের জন্য এর ব্যবহার অনেক। তবে আমাদের দেশের ব্র্যান্ডগুলো এখনো ইমেইলের উপর কম জোর দেয়।

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং

অন্য কারো প্রোডাক্ট, সার্ভিস বা ব্র্যান্ডের প্রোমোশনে সাহায্য করে অর্থ উপার্জন করা যায়। এ ধরনের মার্কেটিংই অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং (Affiliate Marketing)। যেমন, Amazon তাদের প্রোডাক্টগুলোর জন্য Amazon Associates নামে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং প্রোগ্রাম চালায়। এর বাইরে অন্য অনেক প্রোডাক্ট আর সার্ভিস কোম্পানিও সেলস কমিশন শেয়ার করে মার্কেটারদের সাথে।

Amazon Associates - Amazon's affiliate marketing program
Amazon Associates – Amazon’s affiliate marketing program

মোবাইল মার্কেটিং

মোবাইল ডিভাইসে প্রোডাক্ট, সার্ভিস ও ব্র্যান্ডের প্রোমোশন চালানোই হলো মোবাইল মার্কেটিং। কাস্টমারের অ্যাপে পুশ নোটিফিকেশন বা নাম্বারে এসএমএস পাঠিয়ে মোবাইল মার্কেটিং চালানো সম্ভব। স্মার্টফোনের জনপ্রিয়তার সাথে সাথে মোবাইল মার্কেটিংয়ের ব্যবহারও বেড়েছে।

ডিজিটাল মার্কেটিং করতে কী কী লাগে?

ডিজিটাল মার্কেটিং করতে আপনার সাধারণত দরকার হবে:

পার্সোনাল কম্পিউটার

ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে আপনাকে প্রায় সময় টেক্সট, ইমেজ, ভিডিও ও অন্যান্য ধরনের কন্টেন্ট ব্যবহার করতে হবে। পাশাপাশি দরকার হবে কয়েকটি টুল। তাই ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের জন্য পার্সোনাল কম্পিউটারই সবচেয়ে ভালো অপশন।

ইন্টারনেট কানেকশন

ব্রডব্যান্ড কানেকশন থাকলে ভালো। তবে মোবাইলের ইন্টারনেট ভালো হলেও কাজ চালাতে পারবেন।

সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট

দরকার অনুযায়ী বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়াতে অ্যাকাউন্ট থাকতে হবে আপনার। যেমন, ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থাকলে একই সাথে ইন্সটাগ্রাম আর হোয়াটসঅ্যাপেও মার্কেটিং করা সম্ভব।

ডিজিটাল মার্কেটিং টুলস

প্রয়োজন অনুসারে আপনাকে বিভিন্ন ডিজিটাল মার্কেটিং টুল ব্যবহার করতে হবে। যেমন:

  • ফেসবুক, ইন্সটাগ্রাম, মেসেঞ্জার ও হোয়াটসঅ্যাপে মার্কেটিং করার জন্য Meta Business Suite
  • ওয়েবসাইটের ইউজার অ্যানালিটিক্স দেখার জন্য Google Analytics
  • ওয়েবসাইটের সার্চ র‍্যাংকিং দেখার জন্য Google Search Console
  • ইমেইল মার্কেটিং সফটওয়্যার (উদাহরণ: Mailchimp)
  • এসএমএস মার্কেটিং সফটওয়্যার

স্মার্টফোন

অধিকাংশ কাস্টমার এখন স্মার্টফোন ব্যবহার করেন। তাদের ডিভাইসে আপনার প্রোমোশন ঠিকভাবে যাচ্ছে কি না, সেটা যাচাই করার জন্য আপনার নিজের স্মার্টফোন থাকা জরুরি।

ভালো উপার্জন করতে

ফ্রিল্যান্সার হিসাবে, বা ডিজিটাল মার্কেটার হিসাবে জব করলে, বা নিজের ব্যবসায় ডিজিটাল মার্কেটিং দিয়ে আপনি ভালো উপার্জন নিশ্চিত করতে পারবেন।

কাজের সুযোগ অনেক

আপনি ফ্রিল্যান্সিং করুন বা ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের জবে যান, কাজ করার প্রচুর সুযোগ পাবেন প্রত্যেক ক্যাটাগরিতেই। এ কারণে অনেকে ১-২ ক্যাটাগরিতে আগে স্কিলড হয়ে অন্য ক্যাটাগরিতে শিফট করেন।

আপনার যদি নিজের ব্যবসা থাকে, তাহলে ডিজিটাল মার্কেটিং শিখে প্রোমোশন স্ট্রাটেজিতে পরিবর্তন আনতে পারবেন।

শেখার সুযোগ অনেক

ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে এত ক্যাটাগরি রয়েছে যে, সব ক্যাটাগরিতে সমানভাবে স্কিল ডেভেলপমেন্ট করা যথেষ্ট সময়ের ব্যাপার। কিন্তু ক্যাটাগরিগুলো নিয়ে স্পষ্ট ধারণা থাকলে আপনি যেকোনো ক্যাটাগরির কাজ আয়ত্ত করতে পারবেন।

ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে কী কী শিখতে হয়?

ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে আপনাকে মূলত ৪টি বিষয় শিখতে হবে:

এ ৪টি বিষয় আয়ত্ত করতে পারলে আপনি যেকোনো ধরনের ডিজিটাল মার্কেটিং ক্যাটাগরিতে কাজ করার কনফিডেন্স পাবেন।

ডিজিটাল মার্কেটিং স্ট্রাটেজি

প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের যেকোনো প্রোমোশনাল ক্যাম্পেইন থেকে ভালো রেজাল্ট পেতে আপনার ডিজিটাল মার্কেটিং স্ট্রাটেজি দরকার হবেই। এ স্ট্রাটেজি ঠিক করে দেবে:

  • ক্যাম্পেইন থেকে আপনি কেমন রেজাল্ট চান
  • আপনি কোন ধরনের কাস্টমারদের কাছে ক্যাম্পেইন চালাবেন
  • আপনি কত দিনের মধ্যে ক্যাম্পেইন থেকে কাঙ্ক্ষিত রেজাল্ট চান
  • কাস্টমারদের কাছে ক্যাম্পেইন চালাতে আপনি কোন মার্কেটিং চ্যানেলে ফোকাস করবেন
  • ক্যাম্পেইনের জন্য কতটুকু বাজেট বরাদ্দ থাকবে
  • ক্যাম্পেইনে কী কী কন্টেন্ট ব্যবহার করবেন

ডিজিটাল মার্কেটিং স্ট্রাটেজি বানানোর জন্য:

  • আপনাকে কাস্টমারদের সমস্যা খুব ভালোভাবে বুঝতে হবে
  • কাস্টমারদের সমস্যাকে আপনার প্রোডাক্ট বা সার্ভিস কীভাবে সমাধান করছে, সে ব্যাপারে পরিষ্কার ধারণা থাকতে হবে
  • আপনার প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের সাথে মিল থাকা মার্কেটের অন্যান্য প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের ব্যাপারে জানা থাকতে হবে

অর্থাৎ, আপনার ডিজিটাল মার্কেটিং স্ট্রাটেজির মূল ফাউন্ডেশন হচ্ছে মার্কেট ও অডিয়েন্স রিসার্চ। তাই ডিজিটাল মার্কেটিং শেখার শুরুতেই স্ট্রাটেজির বেসিকস জানুন।

ডিজিটাল মার্কেটিং টুলগুলোর ব্যবহার

ডিজিটাল মার্কেটিং স্ট্রাটেজিকে আপনি অ্যাপ্লাই করবেন বিভিন্ন টুলের সাহায্যে। ক্যাটাগরি অনুযায়ী টুলের ব্যবহার আলাদা হবে। যেমন, শুধু ফেসবুক মার্কেটিং করতে আপনার জানা দরকার:

  • কীভাবে ফেসবুক পেইজ চালাতে হয়
  • কীভাবে ফেসবুক গ্রুপ চালাতে হয়
  • কীভাবে ফেসবুক শপ চালাতে হয়
  • কীভাবে ফেসবুক পিক্সেল ব্যবহার করতে হয়
  • কীভাবে ফেসবুক অ্যাডস ম্যানেজার ব্যবহার করতে হয়

ব্যাপার হলো, ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের টুলগুলো ডায়নামিক। অর্থাৎ, এগুলোতে প্রতিনিয়ত কোনো না কোনো আপডেট আসে। আবার সময়ের সাথে টুলের ডিমান্ডও বদলে যায়। তাই আপনি যখনই কোনো ডিজিটাল মার্কেটিং টুল শিখবেন, টুলটির বেসিকস খুব ভালোভাবে আয়ত্ত করুন। তাহলে নতুন কোনো ফিচার আসলে তাড়াতাড়ি নিজেকে আপডেটেড রাখতে পারবেন।

কন্টেন্ট কোয়ালিটি সম্পর্কে ধারণা

সাধারণত ক্যাম্পেইনের কন্টেন্ট বানানোর জন্য কোম্পানি ও ব্র্যান্ডগুলোর নির্দিষ্ট টিম থাকে। ডিজিটাল মার্কেটার হবার জন্য আপনাকে কন্টেন্ট ডেভেলপমেন্টে এক্সপার্ট হতে হবে না। কিন্তু কন্টেন্টের কোয়ালিটি যাচাই করার স্কিল দরকার আপনার। কারণ কন্টেন্টের কোয়ালিটি কম হলে সেটা কাস্টমারদের কাছে বাজে ইমপ্রেশন দেয়। আর বাজে ইমপ্রেশন থেকে ভালো ক্যাম্পেইন রেজাল্ট আনা অসম্ভব।

এটা ঠিক যে, কন্টেন্ট কোয়ালিটি সরাসরি মাপা যায় না। তবে ফরম্যাট চিন্তা করলে বেসিক কিছু ব্যাপার ধরে পড়ে। যেমন, একটা ভিডিওতে ঠিকভাবে যদি সাউন্ড না আসে, আপনি কি সেটাকে ভালো কোয়ালিটির ভিডিও বলবেন? অবশ্যই না।

এ ধরনের আরো উদাহরণ রয়েছে। যেমন:

  • ফেসবুক পেইজে দেয়া ছবির সাইজ বেখাপ্পা দেখানো
  • ভুল বানান আর কঠিন ভাষায় লেখা ব্লগ পোস্ট
  • ফেসবুক অ্যাড টাইটেলের গুরুত্বপূর্ণ অংশ কাটা পড়া

কন্টেন্ট কোয়ালিটি যাচাই করার স্কিল ভালো করতে:

  • ইমেজ, ভিডিও, ব্লগ পোস্টসহ বিভিন্ন ফরম্যাটের কন্টেন্ট নিয়ে নিয়মিত ঘাঁটাঘাঁটি করুন
  • কোনো কন্টেন্টের কোয়ালিটি আপনার পছন্দ হলে চিন্তা করুন কী কী কারণে সেটা পছন্দ হয়েছে
  • কোনো কন্টেন্টের কোয়ালিটি অপছন্দ হলে চিন্তা করুন কীভাবে সে কন্টেন্টের কোয়ালিটি ভালো করা যেতো

সবচেয়ে ভালো হয় কন্টেন্ট ডেভেলপমেন্টে আপনার নিজেরই যদি বেসিক লেভেলের স্কিল থাকে – বিশেষ করে লেখালেখির উপর। কারণ শুধু লেখালেখির স্কিল দিয়ে আপনি কয়েক ফরম্যাটের কন্টেন্ট যাচাই করার কনফিডেন্স পাবেন। যেমন:

  • সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টের ক্যাপশন
  • অ্যাডের ক্যাপশন বা কপি
  • ল্যান্ডিং পেইজের কপি
  • ওয়েবসাইটের ব্লগ পোস্ট
  • ভিডিওর স্ক্রিপ্ট

আপনি যদি নিজের ওয়েবসাইট বা অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং থেকে ইনকাম করতে চান, তাহলে আপনাকে আর্টিকেল লেখায় ভালো হতে হবে। পাশাপাশি গ্রাফিক ডিজাইনের বেসিকস জানতে হবে ইমেজ বানানোর জন্য। অবশ্য বাজেট থাকলে কন্টেন্ট ডেভেলপমেন্টের কাজ অন্য কাউকে দিয়ে করাতে পারেন।

ডিজিটাল মার্কেটিং অ্যানালিটিক্স

ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে বিভিন্ন ধরনের ডেটা নিয়ে আপনাকে কাজ করতে হবে। যেমন:

  • আপনার ওয়েবসাইটের ল্যান্ডিং পেইজে কতজন ভিজিটর আসছেন
  • ল্যান্ডিং পেইজের কল-টু-অ্যাকশন (Call-to-action) বাটনে কতজন ভিজিটর ক্লিক করেছেন
  • ফেসবুকে ভিউয়াররা আপনার ভিডিও কতক্ষণ প্লে করেছেন

ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের ডেটা দেখে বোঝা সম্ভব আপনার ক্যাম্পেইন বা কন্টেন্টের পারফরম্যান্স সম্পর্কে। ক্যাম্পেইন বা কন্টেন্ট আপডেট করার জন্যও ডেটা কাজে দেয়। এ কারণে ডিজিটাল মার্কেটিং অ্যানালিটিক্স স্কিল থাকা জরুরি।

ডিজিটাল মার্কেটিং অ্যানালিটিক্সে স্কিলড হবার জন্য আপনাকে জানতে হবে মার্কেটিং মেট্রিক (Marketing Metrics) সম্পর্কে। পাশাপাশি Microsoft Excel বা Google Sheets-এর ফাংশন দিয়ে এসব মেট্রিক হিসাব করার উপায়ও শিখতে হবে। এসব ডেটা পয়েন্ট ক্যাম্পেইন রিপোর্টিংয়ে ব্যবহার করতে হবে আপনাকে।

বেসিক লেভেলের অ্যানালিটিক্স স্কিল থাকলেই আপনি ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের কাজ শুরু করতে পারবেন। তবে মার্কেটিংয়ের অন্যতম চ্যালেঞ্জ হলো, ডেটা অ্যানালিসিসের মাধ্যমে সফল স্ট্রাটেজি ডিজাইন করা। এ কাজটি ১ সপ্তাহ বা ১ মাসে শেখা সম্ভব নয়। বরং রিয়েল-লাইফে প্র্যাকটিস করতে করতে স্কিলটি আপনার আয়ত্তে আসবে। তাই শুরুতেই এতে ফোকাস না করলেও চলবে। 

ডিজিটাল মার্কেটিং শিখতে কত দিন লাগে?

ডিজিটাল মার্কেটিং শিখতে আপনার কমপক্ষে ৪ – ৬ মাস লাগবে। তবে প্র্যাকটিক্যাল অ্যাপ্লিকেশন ভালোভাবে আয়ত্তে আনতে ১ বছর পর্যন্তও সময় দরকার হতে পারে। মূলত আপনি কী কী শিখবেন আর শেখার জন্য কতটা সময় দেবেন, তার ভিত্তিতে হিসাব আলাদা হবে। এ কারণে ৪ – ৬ মাসকে একটা আনুমানিক টাইমলাইন হিসাবে দেখুন।
ডিজিটাল মার্কেটিং শেখার সাথে সময়ের সম্পর্কটা উদাহরণ দিয়ে বোঝা যাক।

কনসেপ্টভিত্তিক ডিজিটাল মার্কেটিং কোর্স করতে যেমন সময় দরকার

আগেভাগে একটা বিষয় শেয়ার করি। ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে সাফল্য পেতে মার্কেটিংয়ের কিছু গুরুত্বপূর্ণ কনসেপ্ট সম্পর্কে জানা জরুরি। কিন্তু কনসেপ্ট বা থিউরির উপর বেশি ফোকাস দেয়া হয়েছে, এমন কোর্স বা লার্নিং ম্যাটেরিয়াল ডিজিটাল মার্কেটিং শেখার জন্য সবসময় উপযুক্ত নয়।

অনলাইন কোর্স প্ল্যাটফর্ম edX-এ একটি প্রফেশনাল সার্টিফিকেট কোর্স প্রোগ্রাম রয়েছে ডিজিটাল মার্কেটিং ফান্ডামেন্টালসের উপর। ইউনিভার্সিটি অফ এডিনবরার প্রোগ্রামে মূলত ডিজিটাল মার্কেটিং স্ট্রাটেজি নিয়ে শেখানো হয়। ২ কোর্সের এ প্রোগ্রামের মেয়াদ ৪ মাস। প্রতি সপ্তাহে ৩ – ৫ ঘণ্টা সময়ের হিসাব করা হয়েছে এর জন্য।

edX-এর অন্য একটি প্রোগ্রামে প্র্যাকটিক্যাল স্কিলের উপর বেশি ফোকাস রয়েছে। কার্টিন ইউনিভার্সিটি পরিচালিত প্রোগ্রামটি ৫টি কোর্স কাভার করে। প্রতি সপ্তাহে ৭ – ৯ ঘণ্টার হিসাবে মেয়াদ ধরা হয়েছে ১ বছর।

উপরের ২টি প্রোগ্রামের একটা বড় অংশ হলো মার্কেটিংয়ের বিভিন্ন কনসেপ্ট। যেহেতু প্রোগ্রামগুলো ভার্সিটির কোর্সের মতো করে বানানো, সেহেতু সিলেবাসও সেভাবে সাজানো। এ ধরনের কোর্স করলে তাই সময় বেশি লাগবে।

প্র্যাকটিক্যাল কাজভিত্তিক ডিজিটাল মার্কেটিং কোর্স করতে যেমন সময় দরকার

ডিজিটাল মার্কেটিং থেকে ইনকাম করতে চাইলে প্র্যাকটিক্যাল কাজভিত্তিক ডিজিটাল মার্কেটিং কোর্সগুলো ভালো অপশন।

Udemy-এর একটি ডিজিটাল মার্কেটিং কোর্স সিলেবাসে মার্কেট রিসার্চের মতো বেসিক কনসেপ্ট যেমন রাখা হয়েছে, তেমনি ইমেইল মার্কেটিং, এসইও আর সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিংয়ের মতো প্র্যাকটিক্যাল কাজও শেখানো হয়। সব মিলিয়ে ২২ ঘণ্টা ৪৩ মিনিটের ভিডিও কন্টেন্ট আছে এতে। লেকচারের সংখ্যা ২৪৭।

ধরা যাক, আপনি কোর্সটিতে এনরোল করেছেন। প্রতি দিন আধা ঘণ্টা করে সময় দিলে ভিডিও দেখা শেষ করতে আপনার সময় লাগবে ১ মাস ১৫ দিন। অন্যদিকে ঘণ্টার হিসাব ছাড়াই প্রতি দিন ১টা লেকচারে ফোকাস করলে ২৪৭ দিন বা ৮ মাস ৭ দিন সময় দরকার হবে আপনার।

Udemy-এর অন্য একটি কোর্সে আছে ৪২ ঘণ্টা ৪৮ মিনিটের ভিডিও কন্টেন্ট। লেকচারের সংখ্যা ৪০০। আগের হিসাব অনুযায়ী শুধু ভিডিও কন্টেন্ট শেষ করতে সময় প্রয়োজন হবে ৮৬ দিন বা ২ মাস ২৬ দিন। ১ লেকচারের হিসাবে সময় ১ বছর ১ মাস ৫ দিন।

একটা ব্যাপার এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন। উপরের হিসাবে আপনার নতুন কিছু শেখার স্কিল, অ্যাসাইনমেন্ট, সাপোর্ট আর পোর্টফোলিও বানানোর সময় বিবেচনায় আনা হয়নি। অর্থাৎ, ডিজিটাল মার্কেটিং শিখতে হলে বাস্তবে কমপক্ষে ২ মাসের বেশিই সময় লাগবে। ব্যাপারটি মাথায় রেখে বহুব্রীহি’র কমপ্লিট ডিজিটাল মার্কেটিং ক্যারিয়ার ট্র্যাক প্রোগ্রামে সময় রাখা হয়েছে ৬ মাস।

ডিজিটাল মার্কেটিং থেকে আয় করার সুযোগ

ডিজিটাল মার্কেটিং থেকে মূলত ৫টি উপায়ে আয় করতে পারবেন আপনি:

  • ফ্রিল্যান্সিং করে
  • ডিজিটাল মার্কেটিং এজেন্সি চালিয়ে
  • নিজের ওয়েবসাইট থেকে
  • নিজের ব্যবসায় ডিজিটাল মার্কেটিং ব্যবহার করে
  • ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের চাকরি করে

ডিজিটাল মার্কেটিং ফ্রিল্যান্সিং থেকে আয়

ডিজিটাল মার্কেটিং ফ্রিল্যান্সিংয়ে আয় কেমন?

ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের ১-২টি ক্যাটাগরিতে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করলে আপনি মাসে গড়ে ৳১০,০০০ – ৳৫০,০০০ পর্যন্ত উপার্জন করতে পারবেন। তবে এটি ক্লায়েন্ট, প্রজেক্টসংখ্যা ও আপনার নির্ধারিত রেটের উপর নির্ভরশীল। তাই ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার আগে এ ব্যাপারে নির্দিষ্ট কোনো প্রত্যাশা না রাখাই ভালো।

ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্ম Fiverr থেকে একটা উদাহরণ নিয়ে দেখা যাক।

ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্ম Fiverr
ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্ম Fiverr

এসইও ব্যাকলিংকের এ সার্ভিসে ১ দিনের ডেলিভারিতে এ ফ্রিল্যান্সার চার্জ করছেন ৫ ডলার। প্রতিদিন তিনি যদি ১টি করে প্রজেক্ট পান, তাহলে সারা মাসে তার উপার্জন হবে ১৫০ ডলার। আবার Fiverr এ আয়ের উপর ২০% ফি কেটে রাখে। অর্থাৎ, ফি কাটার পর মাসিক উপার্জন গিয়ে দাঁড়াচ্ছে ১২০ ডলারে। ডলারের রেট ১০০ টাকা ধরলে এক্ষেত্রে মাসিক আয় ৳১২,০০০।

আরেকটি উদাহরণ দিই। এটি Upwork থেকে নেয়া।

পে-পার-ক্লিক অ্যাডের সার্ভিস দেন টপ লেভেলের এ ফ্রিল্যান্সার। প্রতি ঘণ্টার জন্য তার ফি ৪০ ডলার। সপ্তাহে গড়ে ৩০ ঘণ্টার মতো ফ্রিল্যান্সিং করেন তিনি। অর্থাৎ, Upwork-এর সার্ভিস ফি বাদ দিলে তার সাপ্তাহিক ইনকাম ১২০০ ডলার।

এখানে হিসাবটা কিছুটা জটিল। ক্লায়েন্টের সংখ্যা ও সে ক্লায়েন্ট থেকে ফ্রিল্যান্সারের উপার্জনের উপর Upwork সার্ভিস ফি নির্ধারণ করে। বর্তমান হিসাবের সুবিধার্থে ধরে নিলাম, শুধু ১ জন ক্লায়েন্টের জন্যই তিনি ৩০ ঘণ্টার কাজ ডেলিভারি দিয়েছেন। এক্ষেত্রে প্রথম ৫০০ ডলারের উপর ফি কাটা যাবে ১০০ ডলার (২০%)। পরবর্তী ৭০০ ডলারের উপর সার্ভিস ফি ৭০ ডলার (১০%)। অর্থাৎ, ফি কাটার পর মোট ইনকাম ১০৩০ ডলার বা ১ লক্ষ ৩ হাজার টাকা (১ ডলার = ১০০ টাকা হিসাবে)। 

২ নং উদাহরণে হয়তো আয়ের পরিমাণ যথেষ্ট ভালো। কিন্তু টপ লেভেলের এ ফ্রিল্যান্সার নিশ্চয়ই একবারে Upwork-এর মতো প্ল্যাটফর্মে ৪০ ডলার ফিতে পৌঁছাননি, সেটা মাথায় রাখতে হবে। 

ডিজিটাল মার্কেটিং ফ্রিল্যান্সিং থেকে ভালো আয় করার জন্য আপনাকে তাই নিয়মিত যেমন কাজ পেতে হবে, তেমনি এমন একটি রেট ঠিক করতে হবে যেন প্রজেক্টসংখ্যা কম হলেও আপনার আয় কমে না যায়।  

ডিজিটাল মার্কেটিং ফ্রিল্যান্সিংয়ে কী কাজ করতে হয়?

ডিজিটাল মার্কেটিং ফ্রিল্যান্সিংয়ে আপনার মূল কাজ হলো ক্লায়েন্টের ডিমান্ড অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নির্দিষ্ট কাজের ডেলিভারি দেয়া। যেমন, একটি ফেসবুক মার্কেটিং প্রজেক্টে আপনার কাজ হতে পারে ৩ সপ্তাহের অ্যাড ক্যাম্পেইন চালিয়ে ক্লায়েন্টের জন্য কমপক্ষে ১০০টি কোয়ালিটি লিড নিয়ে আসা। এর জন্য আপনাকে হয়তো:

  • ক্লায়েন্টের সাথে কথা বলে Campaign Objective ঠিক করতে হবে
  • অডিয়েন্স টার্গেটিং ঠিক করতে হবে
  • ক্যাম্পেইন বাজেট নির্ধারণ করতে হবে
  • অ্যাড কোথায় দেখাবেন, সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে হবে
  • অ্যাডের কন্টেন্ট কোয়ালিটি নিশ্চিত করতে হবে
  • ক্যাম্পেইন চলার সময় প্রয়োজন অনুযায়ী অ্যাড পরিবর্তন করতে হবে

অর্থাৎ, ডিজিটাল মার্কেটিং ফ্রিল্যান্সিংয়ে আপনার কাজের ধরন পুরোপুরি প্রজেক্টনির্ভর।

ডিজিটাল মার্কেটিং ফ্রিল্যান্সিং কীভাবে শুরু করবেন?

  • ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের কাজ শিখুন।
  • ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্মে সাইন-আপ করুন।
  • ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্মে নিয়মিত কাজ খুঁজুন।
  • ক্লায়েন্টের ডিমান্ড অনুযায়ী কাজের প্রপোজাল সাবমিট করুন।
  • কাজ পেলে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ঠিকভাবে কাজের ডেলিভারি দিন।
  • নিয়মিত পোর্টফোলিও আপডেট করুন।
  • ক্লায়েন্টের কাছ থেকে রেফারেন্স ও রিভিউ নিন।
  • কীভাবে কাজ করলে আপনি সবচেয়ে ভালো ডেলিভারি দিতে পারেন, সেটি ঠিক করুন।
ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের কাজ শিখুন।

ডিজিটাল মার্কেটিং ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার আগে কাজ শেখার কোনো বিকল্প নেই। আপনি হয়তো মনে করতেই পারেন, “আগে শুরু করি। এরপর একটু একটু শিখে নিলেই হবে।” কিন্তু এভাবে ভালো কাজের ডেলিভারি দেয়া প্রায় অসম্ভব। বরং কাজের কোয়ালিটি খারাপ হলে নতুন কাজ পাবার সম্ভাবনা একেবারে কমে যাবে।

ডিজিটাল মার্কেটিং ফ্রিল্যান্সিংয়ের জন্য যে আপনাকে সব কাজ আগেভাগে পুরোপুরি শিখে নিতে হবে, তা কিন্তু নয়। যে ক্যাটাগরির কাজে আপনি বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন বা যে ক্যাটাগরি নিয়ে তাড়াতাড়ি শিখতে পারেন, সে ক্যাটাগরি দিয়েই শুরু করুন। পরে অন্য ক্যাটাগরিতে ফোকাস করতে পারবেন।

ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্মে সাইন-আপ করুন।

ফ্রিল্যান্সিংয়ের শুরুতে অনেকে একসাথে কয়েকটি প্ল্যাটফর্মে অ্যাকাউন্ট বানান। এতে করে কাজ পাওয়া ও ম্যানেজ করা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। সময়েরও অপচয় হয়। তাই যেকোনো ১টি ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্মে সাইন-আপ করুন। স্কিল আর কনফিডেন্স থাকলে সর্বোচ্চ ২টি প্ল্যাটফর্মে অ্যাকাউন্ট বানিয়ে নিতে পারেন। তবে একবারে ২টি অ্যাকাউন্ট কতটুকু ম্যানেজ করতে পারবেন, সেটা আগে ভাবুন।

ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্মে শুধু সাইন-আপ করাই যথেষ্ট নয়। বরং ভালো কোয়ালিটির প্রোফাইল বানাতে হবে আপনাকে। কারণ, ক্লায়েন্টকে ইমপ্রেস করার জন্য এটিই আপনার সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য উপায়। তাই:

  • সময় নিয়ে খুব ভালোভাবে ও নির্ভুল ভাষায় আপনার প্রোফাইল টাইটেল ও ডেসক্রিপশন লিখুন। কীভাবে আপনার স্কিল ক্লায়েন্টদের প্রজেক্টে সাহায্য করবে, সেটা যেন এ লেখাতে পরিষ্কারভাবে বোঝা যায়, তা নিশ্চিত করুন।
  • ক্লায়েন্টের সাথে আপনি কীভাবে কাজ করবেন, তার ধারণা দিতে পারেন। যেমন, কোন সময়ে আপনার সাথে ক্লায়েন্ট যোগাযোগ করলে সাথে সাথে রেসপন্স পাবেন, সে ব্যাপারে তথ্য দিন।
  • প্ল্যাটফর্মে থাকা স্কিল লিস্ট থেকে স্কিল বাছাই করুন। দরকার হলে পরবর্তীতে আপডেট করুন।
  • প্রফেশনাল প্রোফাইল ছবি ব্যবহার করুন।
  • কাজের অভিজ্ঞতা থাকলে উল্লেখ করুন।
  • স্কিল সার্টিফিকেট থাকলে উল্লেখ করুন।

ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্মে আপনার কাজের পারিশ্রমিক আপনিই ঠিক করবেন। এক্ষেত্রে সবচেয়ে কম রেটের উপর ফোকাস না করে আপনার স্কিলের ভিত্তিতে রেট বেছে নিন।

ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্ম Upwork
ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্ম Upwork
ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্মে নিয়মিত কাজ খুঁজুন।

আপনার স্কিল অনুযায়ী প্রতিনিয়ত আপনাকে ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্মে কাজ খুঁজতে হবে। যত্রতত্র প্রজেক্টে অ্যাপ্লাই না করে ক্লায়েন্টের পোস্ট ভালোভাবে পড়ে প্রজেক্ট সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা নিন। যদি প্রজেক্ট আপনার স্কিলের সাথে যায় ও কোয়ালিটি কাজের ডেলিভারি দেবার কনফিডেন্স থাকে, তাহলেই শুধু কাজের প্রপোজাল পাঠান।

ক্লায়েন্টের ডিমান্ড অনুযায়ী কাজের প্রপোজাল সাবমিট করুন।

কাজের প্রপোজালে ক্লায়েন্টের প্রতিটি ডিমান্ডকে গুরুত্ব দিন। কীভাবে তার সমস্যার সমাধান করবেন, সে সম্পর্কে লিখুন। আগে এ ধরনের কাজ করে থাকলে তার কথাও উল্লেখ করতে পারেন। এতে করে আপনার স্কিল ও অভিজ্ঞতা নিয়ে ক্লায়েন্ট ভরসা পাবেন।

কাজের প্রপোজালে ক্লায়েন্টের প্রতিটি ডিমান্ডকে গুরুত্ব দিন
কাজের প্রপোজালে ক্লায়েন্টের প্রতিটি ডিমান্ডকে গুরুত্ব দিন

ধরা যাক, একজন ক্লায়েন্ট তার Google My Business প্রোফাইল অপটিমাইজড করাতে চান। এক্ষেত্রে আপনার প্রপোজালে যদি শুধু লিংক বিল্ডিংয়ের কথা উল্লেখ করেন, তাহলে সেটা ক্লায়েন্টের ডিমান্ডের সাথে হয়তো মানানসই হবে না।

কাজ পেলে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ঠিকভাবে কাজের ডেলিভারি দিন।

প্রতিটি ফ্রিল্যান্সিং প্রজেক্টের ডেলিভারির জন্য নির্দিষ্ট সময় থাকে। সেটি ১ দিন হতে পারে। আবার ১ মাসও হতে পারে। আপনি যেমন প্রজেক্ট নিয়েই কাজ করুন না কেন, ক্লায়েন্ট নির্ধারিত ডেডলাইনের মধ্যে ডেলিভারি নিশ্চিত করুন। নাহলে পেমেন্ট আটকে যাওয়া ও খারাপ রিভিউসহ বিভিন্ন সমস্যায় পড়তে হবে আপনাকে।

কোনো প্রজেক্টে কাজ করার সময় যদি দেখেন যে নির্ধারিত সময়ের চেয়ে বেশি সময় দরকার, তাহলে ক্লায়েন্টকে ঠিকভাবে বুঝিয়ে বলুন ও ডেডলাইন বাড়ানোর অনুরোধ করুন। এতে করে অযাচিত সমস্যায় পড়তে হবে না।

নিয়মিত পোর্টফোলিও আপডেট করুন।

প্রতিটি ফ্রিল্যান্সিং প্রজেক্ট আপনার জন্য একেকটি নতুন অর্জন। তাই একটি প্রজেক্ট শেষ করার সাথে সাথে আপনার পোর্টফোলিও আপডেট করুন। কারণ আপডেটেড পোর্টফোলিওর ভিত্তিতেই নতুন ক্লায়েন্ট পাওয়া সহজ হবে আপনার জন্য।

ক্লায়েন্টের কাছ থেকে রেফারেন্স ও রিভিউ নিন।

নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ভালো কোয়ালিটির প্রজেক্ট ডেলিভারি দিতে পারলে যেকোনো ক্লায়েন্ট আপনার যোগ্যতায় বিশ্বাস করবেন। তাই আপনার করা প্রজেক্ট ক্লায়েন্টের পছন্দ হলে তার কাছ থেকে রেফারেন্স ও রিভিউ নিয়ে রাখুন। প্রতিটি ভালো রিভিউ ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্মে আপনার ক্রেডিবিলিটি বাড়াবে। ফলে আপনি নিজের সার্ভিস চার্জ বাড়িয়ে নিতে পারবেন।

ক্লায়েন্টের কাছ থেকে নেয়া রেফারেন্স ও রিভিউ
ক্লায়েন্টের কাছ থেকে নেয়া রেফারেন্স ও রিভিউ
কীভাবে কাজ করলে আপনি সবচেয়ে ভালো ডেলিভারি দিতে পারেন, সেটি ঠিক করুন।

ফ্রিল্যান্সিংয়ে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ভালো কাজের ডেলিভারি দেয়া চ্যালেঞ্জিং একটি কাজ, বিশেষ করে একসাথে ২-৩টি প্রজেক্ট নিয়ে কাজ করলে। তাই আপনার স্কিলের লেভেল, কাজ করার স্টাইল, কাজ করার সময় আর প্রজেক্টের ডিমান্ডসহ বিভিন্ন বিষয় মাথায় রেখে একটি ওয়ার্কফ্লো (Workflow) দাঁড় করান। এটি আপনার প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্টকে অনেকাংশে সহজ করে দেবে।

আপনার ওয়ার্কফ্লো বানানোর সময় কয়েকটি প্রশ্ন বিবেচনা করতে পারেন। যেমন:

  • ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের কোন কাজের জন্য আপনি কোন টুল ব্যবহার করেন?
  • ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের একেকটি কাজ করার জন্য আপনার গড়ে কত সময় দরকার হয়?
  • ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের বিভিন্ন কাজের জন্য আপনার রেডিমেড কোনো টেমপ্লেট আছে কি না?
  • দিন/রাতের ঠিক কোন সময়ে কাজের উপর আপনি বেশি ফোকাস রাখতে পারেন?

ডিজিটাল মার্কেটিং এজেন্সি চালিয়ে আয়

আপনার যদি ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের উপর কমপক্ষে ১-২ বছরের কাজের অভিজ্ঞতা থাকে, তাহলে নিজের এজেন্সি দেবার কথা চিন্তা করতে পারেন। দুইভাবে এজেন্সি দিতে পারবেন:

  • পরিচিত অন্য ডিজিটাল মার্কেটারের সাথে পার্টনারশিপ করে
  • সরাসরি নিয়োগ দিয়ে টিম বানানোর মাধ্যমে

ডিজিটাল মার্কেটিং এজেন্সি চালানো মানেই একটি নির্ভরযোগ্য ব্যবসা দাঁড় করানোর চেষ্টা করা। তাই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবার সময় ৫টি বিষয় খুব গুরুত্বপূর্ণ:

  • আপনার অভিজ্ঞতা ও পোর্টফোলিও
  • এজেন্সি চালানোর খরচ
  • আপনার টিম ম্যানেজমেন্ট স্কিল
  • আপনার নেটওয়ার্কিং স্কিল
  • আপনার বিজনেস ডেভেলপমেন্ট স্কিল

উপরের ৫টি বিষয়ে কনফিডেন্স থাকলে ডিজিটাল মার্কেটিং এজেন্সি চালিয়ে ভালো আয়ের সুযোগ রয়েছে আপনার জন্য।

ডিজিটাল মার্কেটিং এজেন্সি চালিয়ে কত আয় করা যায়?

ডিজিটাল মার্কেটিং এজেন্সি চালিয়ে শুরুতে মাসে কয়েক লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয় করা সম্ভব। তবে এটি সম্পূর্ণরূপে ক্লায়েন্টসংখ্যা, সার্ভিসের ধরন ও সার্ভিসের কোয়ালিটির উপর নির্ভরশীল। তাই শুরুতেই মাসিক কয়েক লক্ষ টাকা উপার্জনে যেতে এজেন্সি দেবার আগে থেকে ডিজিটাল মার্কেটার হিসাবে আপনার ও আপনার টিমের ভালো পরিচিতি থাকা জরুরি।

ডিজিটাল মার্কেটিং এজেন্সিতে কী কাজ করতে হয়?

আপনি যদি নিজের ডিজিটাল মার্কেটিং এজেন্সি চালান, তাহলে আপনার মূল কাজ হবে:

  • আপনার ডিজিটাল মার্কেটিং সার্ভিসের ব্যাপারে সম্ভাব্য ক্লায়েন্টদের জানানো – প্রোমোশন চালিয়ে কিংবা সরাসরি ক্লায়েন্টদের সাথে যোগাযোগ করে
  • ক্লায়েন্টের প্রয়োজন অনুযায়ী ডিজিটাল মার্কেটিং সার্ভিসের প্রজেক্ট প্রপোজাল পাঠানো
  • ক্লায়েন্টের সাথে আলোচনা করে ডিজিটাল মার্কেটিং প্রজেক্টের স্কোপ অফ ওয়ার্ক (Scope of Work) বানানো
  • ডিজিটাল মার্কেটিং প্রজেক্টের ভিত্তিতে আপনার টিমের জন্য কাজ নির্ধারিত করে দেয়া
  • ডিজিটাল মার্কেটিং প্রজেক্টের প্রগ্রেস নিয়ে আপনার টিমের কাছ থেকে নিয়মিত আপডেট নেয়া
  • ডিজিটাল মার্কেটিং প্রজেক্ট অনুযায়ী ক্লায়েন্টের কাছে কাজের ডেলিভারি দেয়া
  • ক্লায়েন্টকে ডিজিটাল মার্কেটিং প্রজেক্টের প্রগ্রেস সম্পর্কে নিয়মিত আপডেট জানানো
  • দরকার হলে ডিজিটাল মার্কেটিং প্রজেক্টের উপর রিপোর্ট বানিয়ে ক্লায়েন্টের কাছে পাঠানো
  • প্রজেক্টের আগে-পরে ক্লায়েন্টের সাথে কাজের পেমেন্ট বা বিলিং সংক্রান্ত ব্যাপার সামলানো

ডিজিটাল মার্কেটিং এজেন্সি কীভাবে শুরু করবেন?

  • আপনার ডিজিটাল মার্কেটিং এজেন্সির মাধ্যমে কী কী সার্ভিস দিতে চান, সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিন।
  • ডিজিটাল মার্কেটিং সার্ভিস দেবার জন্য এজেন্সিতে কত জন মার্কেটার দরকার হবে, তা হিসাব করুন।
  • ডিজিটাল মার্কেটিং সার্ভিস দেবার জন্য অন্য মার্কেটারদের সাথে পার্টনারশিপ করবেন নাকি কাউকে নিয়োগ দেবেন, সেটা ঠিক করুন।
  • ডিজিটাল মার্কেটিং সার্ভিসের রেট নির্ধারণ করুন।
  • ডিজিটাল মার্কেটিং সার্ভিসের যাবতীয় তথ্য নিয়ে ক্যাটালগ ও পোর্টফোলিও তৈরি করুন।
  • ডিজিটাল মার্কেটিং এজেন্সির ওয়েবসাইট বানান।
  • ডিজিটাল মার্কেটিং এজেন্সি চালানোর জন্য দরকারি ব্যবসায়িক ডকুমেন্ট (যেমন, ট্রেড লাইসেন্স) সংগ্রহ করুন।

নিজের ওয়েবসাইট থেকে আয়

নিজের ওয়েবসাইট বানিয়ে আয় কেমন?

নিজস্ব ওয়েবসাইট বানানোর প্রথম ৩ – ৬ মাসে কয়েকশো টাকা থেকে কয়েক হাজার টাকা মাসিক আয় হতে পারে আপনার। ওয়েবসাইটের ভিজিটর সংখ্যা আর ভিজিটর কোয়ালিটি ভালো হলে লক্ষ টাকা পর্যন্ত ইনকাম করা সম্ভব।
একটা উদাহরণ দেখা যাক। ওয়েবসাইট থেকে আয় করার জন্য Google AdSense পাবলিশারদের মধ্যে জনপ্রিয়। ভিজিটর সংখ্যা, লোকেশন আর কন্টেন্ট ক্যাটাগরির ভিত্তিতে আপনার সম্ভাব্য ইনকাম কত, সেটার ধারণা দেবার জন্য অ্যাড নেটওয়ার্কটির একটি ক্যালকুলেটর রয়েছে।

AdSense থেকে আপনি কত উপার্জন করতে পারেন দেখুন
AdSense থেকে আপনি কত উপার্জন করতে পারেন দেখুন

ধরে নিলাম, আপনি বাংলাদেশি কাস্টমারদের জন্য গেমিংয়ের উপর বাংলা কন্টেন্ট পাবলিশ করবেন আপনার সাইটে। এক্ষেত্রে মাসে গড় পেইজ ভিউ ৫০,০০০ হলে পুরো বছরে আপনার সম্ভাব্য সর্বোচ্চ ইনকাম হবে ৩৪৮০ ডলার। অর্থাৎ, মাসে সম্ভাব্য সর্বোচ্চ ইনকাম ২৯০ ডলার।

Google AdSense থেকে আপনার সম্ভাব্য বার্ষিক উপার্জন
Google AdSense থেকে আপনার সম্ভাব্য বার্ষিক উপার্জন

বাস্তবতা হলো, বাংলা কন্টেন্টের জন্য আপনি ক্যালকুলেটরে দেখানো ইনকামের ধারেকাছেও যেতে পারবেন না। তাই শুরুতেই ইনকামের আশা কম রাখুন। অবশ্য এটা শুধু বাংলা কন্টেন্টের বেলায় ঘটে না। ইংরেজি কন্টেন্টের ক্ষেত্রেও ইনকামের অনুমান করা কঠিন। এ কারণে Google AdSense যে ফ্যাক্টরগুলো উল্লেখ করে, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে:

  • কন্টেন্ট ক্যাটাগরি
  • ভিজিটরের লোকেশন
  • অ্যাডভার্টাইজারের ডিমান্ড
  • ভিজিটরের ডিভাইস
  • কন্টেন্টের স্ট্রাকচার (Google-এর ভাষায় “Content Vertical”)
  • সিজনালিটি (Seasonality)
  • অ্যাডের সাইজ
  • কারেন্সি এক্সচেইঞ্জ রেট (Currency Exchange Rate)

নিজের ওয়েবসাইট থেকে কীভাবে আয় করবেন?

নিজস্ব ওয়েবসাইট থেকে মূলত ৪টি উপায়ে আয় করতে পারবেন:

  • অ্যাড নেটওয়ার্কের মাধ্যমে
  • অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে
  • অ্যাড স্পেস বিক্রি করে
  • ডিজিটাল প্রোডাক্ট বা সার্ভিস বিক্রি করে
অ্যাড নেটওয়ার্কের মাধ্যমে

আপনার ওয়েবসাইটে নিয়মিত ভিজিটর আসা শুরু করলেই অ্যাড নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ইনকাম বাড়ানোর চেষ্টা করতে পারেন। এর জন্য প্রথমে ভালো কোনো অ্যাড নেটওয়ার্কে সাইন-আপ করুন (যেমন, Google AdSense)। এরপর কোন ধরনের অ্যাড আপনার ওয়েবসাইটে দেখাবেন, সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিন। অ্যাড নেটওয়ার্ক থেকে দেয়া কোড ওয়েবসাইটে ব্যবহার করলে ভিজিটরদের কাছে অ্যাড দেখানো শুরু হবে।

আপনার ওয়েবসাইটে অ্যাড দেখা গেলেই যে সেখান থেকে ইনকাম আসবে, ব্যাপারটা তেমন নয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে ভিজিটরদের ক্লিকও দরকার হবে। অর্থাৎ, আপনাকে যত বেশি সম্ভব ভিজিটর নিয়ে আসার চেষ্টা করতে হবে। আবার ভিজিটররা কোন দেশ বা জায়গা থেকে আসছেন, সেটাও ইনকামে প্রভাব ফেলবে। যেমন, বাংলাদেশের ৫ জন ওয়েবসাইট ভিজিটরের ৫টি ক্লিকের জন্য আপনি যে টাকা পাবেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ১ জন ওয়েবসাইট ভিজিটরের ১টি ক্লিকের জন্য হয়তো ইনকাম তার চেয়েও বেশি হবে। কারণটা হলো, উন্নত দেশের কাস্টমাররা অনলাইনে কেনাকাটা বেশি করেন বলে তাদের জন্য অ্যাডভার্টাইজাররা অ্যাড নেটওয়ার্কগুলোতে বেশি খরচ করে।

অ্যাড স্পেস বিক্রি করে

অ্যাড নেটওয়ার্ক প্ল্যাটফর্মগুলোর মাধ্যমে ইনকাম করার একটা সমস্যা হলো, অ্যাড লিংকে ভিজিটরদের ক্লিক সংখ্যা কম হলে আপনার আয় কম হবে। অর্থাৎ, ক্লিক কম পড়লে প্রতি মাসে ৫০,০০০ ভিজিটর এনেও খুব একটা লাভ হবে না।

শুধু ভিজিটর সংখ্যার ভিত্তিতে ভালো ইনকাম নিশ্চিত করার জন্য অনেকে নিজেদের সাইটের স্পেস বিক্রি করেন কোম্পানি ও ব্র্যান্ডগুলোর কাছে। যেমন, প্রথম আলোর ওয়েবসাইটে এ ধরনের অ্যাড প্লেসমেন্ট দেখা যায়।

অ্যাড স্পেস বিক্রি করে আয়
অ্যাড স্পেস বিক্রি করে আয়

অ্যাড স্পেস বিক্রির জন্য আপনাকে প্রথম আলোর মতো বড় পাবলিশার হতে হবে না। কিন্তু আপনার সাইটে মাসে কমপক্ষে ৩০,০০০ – ৫০,০০০ ভিজিটর না আসলে অ্যাড স্পেস বিক্রি করা কঠিন হয়ে যাবে।

অ্যাড স্পেস বিক্রি করার সুবিধা হলো:

  • অ্যাডে কম ক্লিক পড়লেও একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ ইনকাম করা যায়
  • অ্যাড স্পেসের সাইজ ও দাম আপনিই ঠিক করতে পারবেন
  • অ্যাড স্পেস বিক্রির ইনকাম পুরোটাই আপনার হবে

অ্যাড স্পেস থেকে ইনকাম করার অসুবিধা হলো:

  • আপনাকে নিজে থেকে কোম্পানি ও ব্র্যান্ডগুলোর সাথে যোগাযোগ করতে হবে
  • আপনার ওয়েবসাইটের ট্রাফিক ভালো না হলে অধিকাংশ কোম্পানি ও ব্র্যান্ড অ্যাড প্লেসমেন্টে আগ্রহী না হবার সম্ভাবনা বেশি
  • অ্যাড স্পেসের দাম নিয়ে কোম্পানি ও ব্র্যান্ডগুলোর সাথে আলোচনা করতে হবে
  • অ্যাড ম্যানেজমেন্টের পুরো দায়িত্ব আপনাকে নিতে হবে
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে

আপনার ওয়েবসাইটের কন্টেন্ট ক্যাটাগরি যদি নির্দিষ্ট হয়, তাহলে সেটি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের জন্য উপযুক্ত হবে। এ উপায়ে আয় করার জন্য:

  • মার্কেট রিসার্চ করে লাভজনক কন্টেন্ট ক্যাটাগরি বেছে নিন
  • আপনার বাছাই করা কন্টেন্ট ক্যাটাগরির উপর নিয়মিত কন্টেন্ট ওয়েবসাইটে পাবলিশ করুন
  • ওয়েবসাইটের ভিজিটর সংখ্যা বাড়লে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং প্ল্যাটফর্মগুলোতে অ্যাকাউন্ট বানিয়ে ফেলুন
  • আপনার ওয়েবসাইটের বিভিন্ন কন্টেন্টে অ্যাফিলিয়েট লিংক ব্যবহার করুন

যেসব কন্টেন্ট ক্যাটাগরিতে প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের সংখ্যা বেশি, সেসব কন্টেন্ট অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের জন্য বেশি লাভজনক। যেমন:

  • টেকনোলজি
  • ভ্রমণ
  • ফ্যাশন
  • রান্নাবান্না ও খাবার
  • ফাইন্যান্স
  • স্বাস্থ্য
  • শিক্ষা
  • গেমিং
  • ব্যবসা ও মার্কেটিং

কন্টেন্ট ক্যাটাগরি ঠিক করার আগে আপনাকে অবশ্য প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের সংখ্যার বাইরেও আরো কয়েকটি বিষয় বিবেচনা করতে হবে। যেমন:

  • যে লাভজনক কন্টেন্ট ক্যাটাগরিতে আপনি ফোকাস করতে চাইছেন, সে ক্যাটাগরিতে কেমন কন্টেন্ট ইতোমধ্যে অনলাইনে রয়েছে?
  • যে ক্যাটাগরির কন্টেন্ট আপনি বানাতে চাইছেন, সে ক্যাটাগরি নিয়ে আপনি কতটুকু জানেন?
  • কন্টেন্ট বানানোর জন্য আপনাকে কতটুকু রিসার্চ করতে হবে?
  • কন্টেন্ট বানাতে আপনার কেমন খরচ বা রিসোর্স দরকার হবে?

নামকরা অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং প্ল্যাটফর্মগুলোতে যত্রতত্র অ্যাকাউন্ট বানানো সম্ভব নয়। এর জন্য অ্যাপ্লিকেশন করতে হবে আপনাকে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট সংখ্যক কন্টেন্ট আর ভিজিটর চায় এসব প্ল্যাটফর্ম। তাই অ্যাফিলিয়েট অ্যাকাউন্ট বানানোর আগেই আপনার সাইটের নিয়মিত ভিজিটর থাকা দরকার।

একেক ধরনের কন্টেন্ট ক্যাটাগরির জন্য একেক অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং প্ল্যাটফর্ম ভালো। তাই আপনাকেই রিসার্চ করে দেখতে হবে কোন প্ল্যাটফর্ম থেকে আপনার ইনকাম হবার সম্ভাবনা বেশি। জনপ্রিয় কয়েকটি প্ল্যাটফর্মের মধ্যে রয়েছে:

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং প্ল্যাটফর্মগুলোর বাইরে বহু কোম্পানি ও ব্র্যান্ড নিজস্ব অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং প্রোগ্রাম চালায়। এগুলোতেও সরাসরি অ্যাপ্লাই করা সম্ভব। যেমন, ওয়েবসাইট ডেভেলপমেন্ট ক্যাটাগরিতে ডোমেইন রেজিস্ট্রেশন আর হোস্টিংয়ের উপর অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের সুযোগ বেশি। আবার আপনি যদি ভ্রমণ সংক্রান্ত কন্টেন্ট নিয়ে লিখতে চান, তাহলে Booking.com-এর অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম আপনার ইনকামের জন্য ভালো অপশন হতে পারে।

কোনো অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং প্রোগ্রামে সাইন-আপ করার আগে আরো কিছু বিষয় সম্পর্কে রিসার্চ করুন। যেমন:

  • অ্যাফিলিয়েট লিংক কীভাবে কাজ করে
  • অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং থেকে আপনি কতটুকু সেলস কমিশন পাচ্ছেন
  • ইনকাম করা কমিশন কত দিন পর আপনি পুরোপুরি তুলতে পারবেন
  • ইনকাম করা কমিশন কীভাবে আপনার কাছে পৌঁছাবে

অনেক অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং প্রোগ্রামে কমিশন দেয়া হয় PayPal-এর মাধ্যমে। অথচ আমাদের দেশ থেকে আপনি PayPal অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করতে পারবেন না। অর্থাৎ, পেমেন্ট নিয়ে ঝামেলায় পড়বেন।

ডিজিটাল প্রোডাক্ট বা সার্ভিস বিক্রি করে

নিজস্ব ওয়েবসাইট থেকে ডিজিটাল প্রোডাক্ট বা সার্ভিস বিক্রি করে খুব ভালো ইনকাম করা সম্ভব। তবে এক্ষেত্রে আপনার কাজ শুধু ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে সীমাবদ্ধ থাকবে না। পুরো একটি ব্যবসা চালানোর প্রস্তুতি লাগবে আপনার। অর্থাৎ, আপনার ইনকামের সম্ভাবনা নির্ভর করবে ডিজিটাল প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের মার্কেট ডিমান্ড, কোয়ালিটি, দাম, কাস্টমার সাপোর্টসহ বহু বিষয়ের উপর। এ কারণে অধিকাংশ বিগিনারের জন্য এটি প্রযোজ্য নয়।

আপনার ওয়েবসাইটে কোন ধরনের ডিজিটাল প্রোডাক্ট বা সার্ভিস বিক্রি করবেন, সে সিদ্ধান্ত আপনিই নেবেন। যেমন:

  • ফ্রিল্যান্সিং বা কনসাল্টিং সার্ভিস
  • ইবুক
  • ওয়ার্ক টেমপ্লেট
  • ওয়েবসাইট টেমপ্লেট বা থিম ও প্লাগইন
  • ডিজাইন টেমপ্লেট
  • অনলাইন কোর্স
  • অনলাইন সেমিনার

নিজের ওয়েবসাইট কীভাবে বানাবেন?

সহজে ওয়েবসাইট বানানোর জন্য এখন অনলাইনে বহু টুল পাওয়া যায়। এগুলো ব্যবহার করতে আপনার ওয়েব ডেভেলপমেন্ট জানার কোনো প্রয়োজন নেই। কিছু বেসিক বিষয় জানা থাকলে আর টুলগুলোর ডকুমেন্টেশন ঠিকভাবে ফলো করলে আপনিও স্ট্যান্ডার্ড একটি কন্টেন্ট ওয়েবসাইট বানাতে পারবেন, যেখান থেকে ইনকাম করা সম্ভব।

ওয়েবসাইট বানাতে আপনার দরকার হবে:

  • ডোমেইনের নাম
  • হোস্টিং সার্ভিস
  • কন্টেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম
  • ওয়েবসাইটের থিম বা টেমপ্লেট
  • ওয়েবসাইটের প্লাগইন বা সফটওয়্যার

ডোমেইনের নাম আর হোস্টিং সার্ভিসে কিছু খরচ থাকে বলে অনেকে একেবারে ফ্রি টুল খোঁজেন। যেমন:

  • Blogger
  • Wix-এর ফ্রি ভার্সন
  • Weebly-এর ফ্রি ভার্সন

সম্পূর্ণ ফ্রি এ টুলগুলো হয়তো ওয়েব ডিজাইনের বেসিকস নিয়ে আপনাকে আইডিয়া দেবে। কিন্তু ভালো আয় করার জন্য এসব টুল তেমন সাহায্য করবে না। Blogger প্ল্যাটফর্মের ক্ষেত্রে কাস্টম ডোমেইন ব্যবহার করতে পারলেও ডিজাইনের অপশন সীমিত।

নিজস্ব ওয়েবসাইট চালানোর জন্য যে খরচ হয়, সেটাকে আপনার ডিজিটাল মার্কেটিং স্কিল আর ভবিষ্যৎ ইনকামের উপর একটা বিনিয়োগ হিসাবে বিবেচনা করুন।

ডোমেইনের নাম

আপনার ওয়েবসাইটের জন্য একটি নাম ঠিক করে সেটির জন্য ডোমেইন রেজিস্ট্রেশন করুন।

.com ডোমেইন সবচেয়ে জনপ্রিয়। তাই আপনার ওয়েবসাইটের ডোমেইন ভার্সন .com হলে ভালো।

ডোমেইনের জন্য বছরে আপনার খরচ হবে ৬০০ – ১৫০০ টাকা। উল্লেখ্য যে, .com.bd ভার্সনের বেলায় আপনাকে আলাদাভাবে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। বিটিসিএলের ওয়েবসাইট থেকে সরাসরি .com.bd ভার্সনের ডোমেইন অর্ডার করতে পারবেন। তবে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হতে ২ – ৩ দিন সময় লাগবে।

হোস্টিং সার্ভিস

আপনার ওয়েবসাইটের যাবতীয় কোড, ফাইল, ফোল্ডার আর ডেটাবেইজের জন্য সার্ভারের প্রয়োজন। হোস্টিং সার্ভিসগুলোর কাছে আপনি এমন সার্ভার পাবেন।

হোস্টিং সার্ভিসের জন্য মাসে বা বছরে আপনার কত খরচ হবে, তা বিভিন্ন ফ্যাক্টরের উপর নির্ভর করে। যেমন:

  • কোন ধরনের সফটওয়্যার বা কন্টেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম দিয়ে আপনি ওয়েবসাইট বানাচ্ছেন
  • ওয়েবসাইটে কোন ধরনের কন্টেন্ট আপলোড করছেন
  • ওয়েবসাইট কন্টেন্টের সাইজ
  • ওয়েবসাইট ভিজিটরের সংখ্যা

অর্থাৎ, আপনার ওয়েবসাইটে যত বেশি কন্টেন্ট থাকবে বা ভিজিটরের সংখ্যা যত বাড়বে, খরচও সে অনুযায়ী বাড়বে। শুরুর দিকে অবশ্য মাসে কয়েকশো টাকা দিয়েই ওয়েবসাইট চালাতে পারবেন।

কন্টেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম

কন্টেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (Content Management System) মূলত আপনার ওয়েবসাইটে কন্টেন্ট আপলোড, পাবলিশিং আর আপডেটের কাজকে সহজ করে দেয়।

কন্টেন্ট ম্যানেজমেন্টের জন্য ওয়ার্ডপ্রেস (WordPress.org) সবচেয়ে ভালো অপশন। এর সুবিধা হলো, এটি সম্পূর্ণ ফ্রিতে ব্যবহার করতে পারবেন। আবার সারা বিশ্বে এর ব্যাপক জনপ্রিয়তার কারণে আপনার ওয়েবসাইট বানানোর জন্য অনলাইনে প্রচুর টিউটোরিয়াল আর সাপোর্ট পাবেন। এমনকি ১ দিনের মধ্যে একটি ফাংশনাল ওয়েবসাইট বানানো সম্ভব ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে!

জনপ্রিয় আরো ২টি ফ্রি কন্টেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম হলো:

প্রিমিয়াম ওয়েবসাইট বিল্ডার দিয়ে ওয়েবসাইট বানানোর জন্য ব্যবহার করতে পারেন:

  • Squarespace (যেকোনো ধরনের ওয়েবসাইটের জন্য)
  • Wix-এর প্রিমিয়াম ভার্সন (যেকোনো ধরনের ওয়েবসাইটের জন্য)
  • Weebly-এর প্রিমিয়াম ভার্সন (যেকোনো ধরনের ওয়েবসাইটের জন্য)
  • Shopify (ইকমার্স সাইটের জন্য)
ওয়েবসাইটের থিম বা টেমপ্লেট

কন্টেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম হিসাবে ওয়ার্ডপ্রেস ব্যবহার করলে আপনার ওয়েবসাইটের ডিজাইনের জন্য দরকার হবে থিম (Theme)। ওয়ার্ডপ্রেসের থিম ডিরেক্টরি থেকেই পছন্দ অনুযায়ী ফ্রি থিম সরাসরি ইন্সটল করতে পারবেন।

ওয়ার্ডপ্রেসের প্রিমিয়াম থিম আর প্লাগইনও রয়েছে অনেক। তবে শুরুতে থিম আর প্লাগইনের জন্য কোনো খরচ করার দরকার হয় না সাধারণত।

ওয়েবসাইটের প্লাগইন বা সফটওয়্যার

প্রতিটি কন্টেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমে কিছু বেসিক ফিচার থাকে। যেমন, ওয়ার্ডপ্রেসে সহজে আলাদা আলাদা ক্যাটাগরিতে ব্লগ পোস্ট পাবলিশ করা যায়।

আপনার ওয়েবসাইটকে ডায়নামিক করার জন্য স্পেশাল কিছু ফিচার দরকার হতে পারে। যেমন, আপনি হয়তো ইমেইল মার্কেটিংয়ের জন্য ভিজিটরদের ইমেইল সংগ্রহ করতে চান। এক্ষেত্রে আপনাকে কাস্টম প্লাগইন ব্যবহার করতে হবে।

নিজের ব্যবসায় ডিজিটাল মার্কেটিং

নিজের ব্যবসায় ডিজিটাল মার্কেটিং করার সুবিধা কী কী?

নিজের ব্যবসায় ডিজিটাল মার্কেটিং করলে আপনি যেসব সুবিধা পাবেন, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে:

  • ডিজিটাল মার্কেটিং স্ট্রাটেজি বানানোর সুবিধা
  • ডিজিটাল মার্কেটিং বাজেট নিয়ন্ত্রণের সুবিধা
  • ব্র্যান্ডকে ঠিকভাবে প্রেজেন্ট করার স্বাধীনতা
  • ডিজিটাল মার্কেটিং টিম নিয়োগের সুবিধা

ডিজিটাল মার্কেটিং স্ট্রাটেজি বানানোর সুবিধা: কাস্টমারদের সাথে আপনাকেই হয়তো সবচেয়ে বেশি ইন্টারঅ্যাকশন করতে হয়। ফলে প্রোডাক্ট বা সার্ভিস নিয়ে তাদের মতামত ও চিন্তাভাবনা সম্পর্কে জানার সুযোগ আপনার বেশি, যা ডিজিটাল মার্কেটিং স্ট্রাটেজি বানানোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

ডিজিটাল মার্কেটিং বাজেট নিয়ন্ত্রণের সুবিধা: নিজের ব্যবসার ব্যাপারে দরকারি সিদ্ধান্ত নেবার ক্ষমতা থাকে আপনার। ফলে দরকার অনুযায়ী ডিজিটাল মার্কেটিং বাজেটে পরিবর্তন আনতে পারেন আপনি।

ব্র্যান্ডকে ঠিকভাবে প্রেজেন্ট করার স্বাধীনতা: কাস্টমারদের সামনে আপনার ব্র্যান্ডকে ভালোভাবে তুলে ধরার জন্য সরাসরি সিদ্ধান্ত নেবার স্বাধীনতা থাকে আপনার।

ডিজিটাল মার্কেটিং টিম নিয়োগে সুবিধা: নিজের ব্যবসায় ডিজিটাল মার্কেটিং করলে আপনি যে প্র্যাকটিক্যাল স্কিল ও অভিজ্ঞতা অর্জন করবেন, তা আপনাকে পরবর্তীতে ডিজিটাল মার্কেটিং টিম বা এজেন্সি নিয়োগের সময় সঠিকভাবে যাচাই-বাছাই করতে কাজে দেবে।

নিজের ব্যবসায় কীভাবে ডিজিটাল মার্কেটিং করবেন?

  • আপনার প্রোডাক্ট বা সার্ভিস নিয়ে কাস্টমারদের মতামত ও চিন্তাভাবনা সম্পর্কে যত বেশি সম্ভব জানার চেষ্টা করুন। এটি আপনার কাস্টমার রিসার্চের অংশ।
  • কাস্টমার রিসার্চের ভিত্তিতে ডিজিটাল মার্কেটিং স্ট্রাটেজি বানান।
  • ডিজিটাল মার্কেটিং স্ট্রাটেজি অনুযায়ী ক্যাম্পেইন প্ল্যানিং করুন।
  • ক্যাম্পেইন প্ল্যান অনুসারে ডিজিটাল মার্কেটিং চ্যানেলগুলোতে কন্টেন্ট পোস্ট করুন।
  • ক্যাম্পেইনের পারফরম্যান্স ট্র্যাকিং করুন। Microsoft Excel বা Google Sheets-এর মাধ্যমে পারফরম্যান্সের ডকুমেন্টেশন রাখুন।
  • ক্যাম্পেইন চলার সময় কাস্টমারদের রেসপন্স ও ইন্টারঅ্যাকশনের উপর আলাদাভাবে ফোকাস করুন।
  • পারফরম্যান্স ও কাস্টমার রেসপন্স অনুযায়ী ক্যাম্পেইনে পরিবর্তন নিয়ে আসুন।

ডিজিটাল মার্কেটিং স্ট্রাটেজি বানানোর সময় আপনাকে বেশ কিছু বিষয় বিবেচনা করতে হবে। যেমন:

  • প্ল্যানিংয়ের ধরন
    • পুরো বছরের ক্যাম্পেইন প্ল্যানিং একবারে করবেন নাকি পুরো বছরকে কয়েক ভাগে ভাগ করে ক্যাম্পেইন চালাবেন?
  • ক্যাম্পেইনের উদ্দেশ্য
    •  ক্যাম্পেইন থেকে মূলত আপনার চাওয়া কী? সেলস নাকি ব্র্যান্ডের পরিচিতি?
  • ক্যাম্পেইনের ধরন
    • ক্যাম্পেইন কি অর্গানিক হবে নাকি পেইড? নাকি ২ ধরনের ক্যাম্পেইন একই সাথে চালাবেন?
  • ক্যাম্পেইনের বাজেট
    • ক্যাম্পেইনের বাজেট কি শুরুতেই ঠিক করে নেবেন? নাকি কম বাজেট দিয়ে শুরু করে পারফরম্যান্স ও কাস্টমার রেসপন্স অনুযায়ী বাজেট বাড়াবেন?
  • ক্যাম্পেইনের সময়
    • ঈদ বা এ ধরনের বড় উপলক্ষের কতটুকু আগে বা পরে আপনার অন্য ক্যাম্পেইনগুলো সাজাবেন?
  • ক্যাম্পেইন ম্যাটেরিয়াল
    • পুরো ক্যাম্পেইনের ম্যাটেরিয়াল কীভাবে প্রস্তুত করবেন? নিজের টিম দিয়ে নাকি কোনো এজেন্সির মাধ্যমে?

ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের চাকরি

ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের চাকরিতে বেতন কত?

আমাদের দেশের অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানে এন্ট্রি লেভেলের ডিজিটাল মার্কেটার হিসাবে যোগ দিলে আপনার মাসিক বেতন গড়ে ৳২০,০০০ – ৳৩০,০০০ হবে। অভিজ্ঞতা ও পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে বেতন বাড়বে।

ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের জব সার্কুলারগুলো ঘাঁটাঘাঁটি করলে একটা ব্যাপার লক্ষ করবেন। বেতনের জায়গায় অনেক সময় “Negotiable” লেখা থাকে। বাস্তবতা হলো, ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে আপনার অভিজ্ঞতা না থাকলে বা ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ের ভালো ডিগ্রি না থাকলে এক্ষেত্রে ৳২০,০০০ – ৳৩০,০০০ স্যালারি নিশ্চিত করা কঠিন। তাই এ ধরনের সার্কুলার দেখে অ্যাপ্লাই করার আগে কাজের পোর্টফোলিও বানিয়ে ফেলা ভালো।

উল্লেখ্য যে, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান মূল বেতনের বাইরে আলাদা সুযোগ-সুবিধা দিয়ে থাকে। যেমন:

  • লাঞ্চ
  • যাতায়াতের ব্যবস্থা
  • পারফরম্যান্স বোনাস
  • ঈদ বা এ ধরনের উৎসব ভাতা

ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের চাকরিতে অ্যাপ্লাই করার সময় বেতনের পাশাপাশি এসব সুবিধাও বিবেচনা করুন।

ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের চাকরিতে কী কাজ করতে হয়?

ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের অধিকাংশ এন্ট্রি-লেভেলের চাকরিতে আপনার কাজ হবে:

  • ক্যাম্পেইন প্ল্যান অনুযায়ী প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের প্রোমোশনাল কন্টেন্ট রেডি করা ও কন্টেন্টগুলো বিভিন্ন ডিজিটাল চ্যানেলে পোস্ট করা
  • প্রোমোশনাল কন্টেন্টগুলোর পারফরম্যান্স ট্র্যাক করা
  • প্রোমোশনাল কন্টেন্টগুলোর পারফরম্যান্সের ডেটা অ্যানালিসিস করা ও রিপোর্ট বানানো
  • ক্যাম্পেইন প্ল্যান ও স্ট্রাটেজি বানানোর সময় মার্কেটিং টিমকে সাহায্য করা

সাধারণত ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের ২-১টি ক্যাটাগরিতে আপনার ফোকাস বেশি থাকবে। এক্ষেত্রে সে ক্যাটাগরির দায়িত্বগুলো আপনাকে পালন করতে হবে। যেমন, আপনি যদি সোশ্যাল মিডিয়া এক্সিকিউটিভের পজিশনে থাকেন, তাহলে সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টগুলো ভালোভাবে চেক করার কাজ থাকবে আপনার।

ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের অধিকাংশ এন্ট্রি-লেভেলের চাকরিতে আপনার কাজ যেমন হয়
ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের অধিকাংশ এন্ট্রি-লেভেলের চাকরিতে আপনার কাজ যেমন হয়

ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের চাকরি কীভাবে খুঁজবেন?

পত্রপত্রিকা থেকে শুরু করে অনলাইন জব পোর্টাল – বিভিন্ন জায়গায় ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের চাকরি খুঁজতে পারবেন আপনি। পত্রপত্রিকার চেয়ে অবশ্য অনলাইনেই সার্কুলারগুলো বেশি পাবেন।

আমাদের দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় জব পোর্টাল bdjobs.com সাইটে কীভাবে ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের চাকরি খুঁজবেন, সেটা দেখা যাক।

Bdjobs.com সাইটে গেলে হোমপেইজ থেকেই সরাসরি কীওয়ার্ড দিয়ে সার্চ করতে পারবেন। যেমন:

  • Digital Marketing
  • Social Media
  • SEO
চাকরি খোঁজার ওয়েবসাইট - bdjobs.com
চাকরি খোঁজার ওয়েবসাইট – bdjobs.com

রেজাল্ট পেইজে লাল রং দিয়ে কীওয়ার্ড মার্কড করা থাকে, যেন সহজে চোখে পড়ে।

রেজাল্ট পেইজে লাল রং দিয়ে কীওয়ার্ড মার্কড করা থাকে, যেন সহজে চোখে পড়ে।
রেজাল্ট পেইজে লাল রং দিয়ে কীওয়ার্ড মার্কড করা থাকে, যেন সহজে চোখে পড়ে।

রেজাল্ট পেইজে অ্যাডভান্সড ফিল্টারিংয়ের ব্যবস্থা রয়েছে, যেখান থেকে আপনি কাস্টমাইজড সার্চ করতে পারবেন। যেমন:

  • Category
  • Industry
  • Location
রেজাল্ট পেইজে ফিল্টারিংয়ের ব্যবস্থা রয়েছে
রেজাল্ট পেইজে ফিল্টারিংয়ের ব্যবস্থা রয়েছে

যেহেতু এন্ট্রি-লেভেলের জব ক্যান্ডিডেট হিসাবে আপনি অ্যাপ্লাই করার সুযোগ বেশি চান, সেহেতু অ্যাডভান্সড ফিল্টারিং ব্যবহার না করাই ভালো। বরং সময় নিয়ে মানানসই সার্কুলারগুলো বের করুন।

LinkedIn-এর মাধ্যমে আপনি আরো ভালোভাবে জব সার্কুলার খুঁজে পাবেন। এর সুবিধা হলো, একেবারে ইন্টার্নশিপের মতো এন্ট্রি লেভেলের ডিজিটাল মার্কেটিং জব খোঁজার ব্যবস্থা রয়েছে। এমনকি বিদেশি কোম্পানিগুলোর রিমোট জবেও সরাসরি অ্যাপ্লাই করা সম্ভব। ঠিকভাবে সার্কুলার খুঁজতে LinkedIn-এর অ্যাডভান্সড জব ফিল্টারিং কাজে দেবে।

LinkedIn-এ ডিজিটাল মার্কেটিং জব খোঁজার সময় আপনার প্রোফাইল আপডেট করে ফেলুন। প্রোফাইলের মূল সেকশনগুলোর সাথে অন্য কী সেকশন যোগ করবেন, সে সিদ্ধান্ত আপনার। তবে নিশ্চিত করুন যে:

  • প্রোফাইলে প্রফেশনাল হেডলাইন ব্যবহার করেছেন
  • নিজের প্রফেশনাল ছবি আপলোড করেছেন
  • নির্ভুল ভাষায় প্রোফাইল সামারি লিখেছেন
  • Experience ও Education সেকশনে বিস্তারিত তথ্য দিয়েছেন
  • Skills সেকশনে ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের স্কিলগুলো যোগ করেছেন

ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের চাকরি কীভাবে পাবেন?

  • পত্রপত্রিকা, অনলাইন জব পোর্টাল ও LinkedIn-এ ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের জব সার্কুলারগুলোর নিয়ে নিয়মিত ঘাঁটাঘাঁটি করুন।
  • ইমেইলের মাধ্যমে নতুন সার্কুলারের আপডেট পেতে Google Alerts ও LinkedIn-এর Job Alert চালু করুন।
  • LinkedIn-এ অন্যান্য মার্কেটারদের সাথে যত বেশি সম্ভব নেটওয়ার্কিং করুন। তবে তা যেন প্রফেশনালিজমের বাইরে না যায়। যেমন, যত্রতত্র কাউকে জব দেবার জন্য অনুরোধ করবেন না।
  • ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের জব সার্কুলারগুলোর নিয়ম অনুযায়ী অ্যাপ্লাই করুন।
  • অ্যাপ্লিকেশনের সময় প্রয়োজনে কাস্টমাইজড সিভি ব্যবহার করুন, যেন জব সার্কুলারে চাওয়া যোগ্যতাগুলোর সাথে আপনার সিভি মিলে যায়।
  • ইন্টারভিউর জন্য নির্বাচিত হলে নিয়োগদাতা প্রতিষ্ঠান ও অ্যাপ্লাই করা জবের ব্যাপারে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো সংগ্রহ করুন।
  • ইন্টারভিউর আগে আপনার ডিজিটাল মার্কেটিং স্কিল, অভিজ্ঞতা ও পোর্টফোলিও নিজেই একবার রিভিউ করে নিন, যেন নিজেকে ভালোভাবে প্রেজেন্ট করতে পারেন।
  • দরকার হলে ইন্টারভিউর আগে পরিচিত কোনো প্রফেশনাল ডিজিটাল মার্কেটারের সাথে কথা বলে নিন।
  • সঠিক সময়ে ইন্টারভিউতে অংশগ্রহণ করুন – সেটা অনলাইনে হোক বা অফলাইনে।

ডিজিটাল মার্কেটিং শেখার উপায়

ডিজিটাল মার্কেটিং শেখার জন্য আপনার ভার্সিটি লেভেলের ডিগ্রি থাকার প্রয়োজন নেই। মূলত ৩টি উপায়ে ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের কাজ শিখতে পারেন:

  • নিজে নিজে শেখা
  • ট্রেনিং ইন্সটিটিউট থেকে কোর্স করা
  • অনলাইন কোর্স করা

নিজে নিজে ডিজিটাল মার্কেটিং যেভাবে শিখবেন

সময় নিয়ে ধৈর্য ধরে নিজে নিজেই ডিজিটাল মার্কেটিং শেখা সম্ভব। তবে এক্ষেত্রে কয়েকটি চ্যালেঞ্জ পাবেন আপনি। যেমন:

  • কী কী শিখতে হবে, সে সম্পর্কে কোনো ধারণা না থাকা
  • কোনটা আগে বা কোনটা পরে শিখলে সুবিধা হয়, সে ব্যাপারে কনফিউজড হয়ে পড়া
  • কোন ধরনের লার্নিং ম্যাটেরিয়াল থেকে ভালোভাবে শেখা যাবে, তার উপর গাইডেন্স না পাওয়া
  • লার্নিং ম্যাটেরিয়ালগুলো ঠিকভাবে কাজে লাগানোর উপায় জানা না থাকা
  • শেখার সময় কোনো সমস্যায় পড়লে সাপোর্ট না পাওয়া

নিজে নিজে ডিজিটাল মার্কেটিং শেখার আগে একটা লার্নিং ফ্রেমওয়ার্ক ঠিক করে ফেলা জরুরি। এটি আপনার শেখার প্রগ্রেস সম্পর্কে ধারণা দেবে। লার্নিং ফ্রেমওয়ার্ক বানানোর জন্য এ প্রশ্নগুলো বিবেচনা করুন:

  • ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের কয়টি ক্যাটাগরি নিয়ে আপনি শিখতে চান?
  • ডিজিটাল মার্কেটিং শেখার জন্য আপনি মোট কত দিন সময় বরাদ্দ রাখবেন? ৩ মাস, ৬ মাস নাকি ১ বছর?
  • ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের কোন ক্যাটাগরিতে আপনি কী কী শিখতে চান?
  • ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের কয়টি ক্যাটাগরিতে একবারে ফোকাস করবেন?
  • ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের কোন ক্যাটাগরিতে কতটুকু সময় দেবেন?
  • কোন ধরনের লার্নিং ম্যাটেরিয়াল ব্যবহার করবেন?
  • লার্নিং ম্যাটেরিয়ালের কোয়ালিটি কীভাবে যাচাই করবেন? 
  • লার্নিং ম্যাটেরিয়ালগুলো কীভাবে জোগাড় করবেন?
  • কোন লার্নিং ম্যাটেরিয়াল থেকে কী শিখছেন, সেটার ট্র্যাকিং কীভাবে করবেন?
  • আপনার শেখার প্রগ্রেস কীভাবে যাচাই করবেন?
  • শিখতে গিয়ে কোনো সমস্যায় পড়লে কার কাছ থেকে গাইডেন্স বা সাপোর্ট নেবেন?

নিজে নিজে ডিজিটাল মার্কেটিং শেখার জন্য:

  • ব্লগ পড়ুন।
  • YouTube ভিডিও দেখুন।
  • সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সারদের ফলো করুন।
  • ফ্রি ওয়েবিনার করুন।
  • অনলাইন ফোরাম ভিজিট করুন।
  • নিজের সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইল থেকে প্র্যাকটিস করুন।
  • নিজের ওয়েবসাইট বানিয়ে প্র্যাকটিস করুন।

ব্লগ পড়ুন।

ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের উপর ইন্টারনেটে অসংখ্য ব্লগ ও ওয়েবসাইট রয়েছে। এগুলোতে দরকারি প্রায় সব ধরনের তথ্য পাবেন।

কনটেন্ট ক্যাটাগরি ব্লগ/ওয়েবসাইট
মার্কেটিং (সব ক্যাটাগরি)
  • HubSpot Blog
  • Digital Marketing Institute Blog
  • সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং
  • Buffer Blog
  • Hootsuite Blog
  • সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন
  • Search Engine Journal
  • Google Search Central Blog
  • কন্টেন্ট মার্কেটিং
  • Content Marketing Institute Blog
  • ইমেইল মার্কেটিং
  • MailChimp Resources
  • AWeber Blog
  • YouTube ভিডিও দেখুন

    ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের বেসিকস জানার জন্য YouTube-এ প্রচুর ভিডিও পাবেন বাংলা ও ইংরেজিতে। তবে যত্রতত্র ভিডিও না দেখে আগে ঠিক করুন কোন বিষয়গুলো নিয়ে আপনি জানতে চান। সে অনুযায়ী সার্চ করে ভিডিও বাছাই করুন।

    YouTube-এর সুবিধা হলো, আপনি যে ভিডিও দেখছেন, সে ভিডিওর মতো আরো ভিডিও সাজেস্ট করবে প্ল্যাটফর্মটি।

    সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সারদের ফলো করুন।

    ইনফ্লুয়েন্সার বলতে এখানে কোনো ফেসবুক বা TikTok সেলিব্রিটি বোঝানো হচ্ছে না। বরং সোশ্যাল মিডিয়াতে মার্কেটিং নিয়ে পরামর্শ আর অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন, এমন পার্সোনালিটি আর ব্র্যান্ডের কথা বলা হচ্ছে।

    সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার খুঁজে পাবার একটা ভালো জায়গা হলো LinkedIn। সার্চ বারে হ্যাশট্যাগ দিয়ে সার্চ করলে ট্রেন্ডিং পোস্টগুলো দেখতে পাবেন। সেখান থেকেই পছন্দের ইনফ্লুয়েন্সারকে ফলো করতে পারবেন।

    LinkedIn-এ অবশ্য বারবার হ্যাশট্যাগ দিয়ে সার্চ করার দরকার নেই। হ্যাশট্যাগ ফলো করলেই আপনার ফিডে ট্রেন্ডিং পোস্টগুলো চলে আসবে।

    ফ্রি ওয়েবিনার করুন।

    ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের ওয়েবিনারগুলোতে প্রফেশনাল এক্সপার্টদের কাছ থেকে সরাসরি আপনার প্রশ্নের উত্তর জানার সুযোগ থাকে। তাই সম্ভব হলে ফ্রি ওয়েবিনারে অংশ নিন। তবে রেজিস্ট্রেশনের আগে নিশ্চিত হয়ে নিন ওয়েবিনারে মূলত কী নিয়ে আলোচনা করা হবে। কারণ টপিক অ্যাডভান্সড লেভেলের হলে আপনার না বোঝার সম্ভাবনা বেশি।

    অনলাইন ফোরাম ভিজিট করুন।

    ডিজিটাল মার্কেটিং করার সময় কোনো সমস্যায় পড়লে বা কোনো কিছু জানার দরকার হলে অনলাইন ফোরামগুলোতে প্রশ্ন করেন অনেকে। প্রায় সময় অন্যান্য মার্কেটাররা কমেন্ট করে সমাধান জানিয়ে দেন। আপনিও এ ধরনের অনলাইন ফোরাম থেকে সাপোর্ট নিতে পারেন।

    যেসব জায়গায় ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে দেশ-বিদেশের বহু প্রফেশনালের সাথে কথাবার্তা বলার সুযোগ পাবেন, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে:

    • LinkedIn গ্রুপ
    • Facebook গ্রুপ 
    • Reddit কমিউনিটি
    • Quora গ্রুপ

    Slack, Discord-এর মতো প্ল্যাটফর্মগুলোতেও মার্কেটিংয়ের অনলাইন কমিউনিটি চালায় অনেকে। তবে এসব কমিউনিটি সাধারণত প্রাইভেট হয়।

    নিজের সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইল থেকে প্র্যাকটিস করুন।

    নিজে নিজে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং শেখার জন্য আপনার প্রোফাইল থেকেই নিয়মিত পোস্ট করতে পারেন। তবে ব্যক্তিগত প্রোফাইলের চেয়ে ব্র্যান্ড পেইজ বা এ ধরনের বিজনেস ফিচার ব্যবহার করা বেশি সুবিধাজনক। এতে করে সোশ্যাল মিডিয়া টুলস যেমন তাড়াতাড়ি শিখতে পারবেন, তেমনি অ্যানালিটিক্স সম্পর্কেও প্র্যাকটিক্যাল ধারণা পাবেন।

    নিজের ওয়েবসাইট বানিয়ে প্র্যাকটিস করুন।

    এসইও নিয়ে কাজ করতে চাইলে বা নিজের ওয়েবসাইট থেকে ইনকাম করার জন্য সবচেয়ে ভালো উপায় হলো পার্সোনাল ওয়েবসাইট বানিয়ে প্র্যাকটিস চালানো। এর মাধ্যমে ওয়েবসাইট ডিজাইন ও কন্টেন্ট ম্যানেজমেন্ট নিয়ে যেমন প্র্যাকটিক্যাল স্কিল আয়ত্ত করতে পারবেন, তেমনি পোর্টফোলিও হিসাবে আপনার ওয়েবসাইটকে ব্যবহার করতে পারবেন।

    ট্রেনিং ইন্সটিটিউট থেকে যেভাবে ডিজিটাল মার্কেটিং শিখবেন

    ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের উপর এখন বহু ইন্সটিটিউট ট্রেনিং দিয়ে থাকে। এগুলোতে ট্রেনিং নেবার সুবিধা হলো, লার্নিং ম্যাটেরিয়ালগুলো এক জায়গায় পেয়ে যাবেন। তবে কোনো ট্রেনিং ইন্সটিটিউটে ভর্তি হবার আগে কয়েকটি বিষয় খেয়ালে রাখুন:

    • কোর্স বা ট্রেনিংয়ের ফি কত?
    • কোর্স বা ট্রেনিংয়ে কী ধরনের কন্টেন্ট দিয়ে শেখানো হবে?
    • কোর্স বা ট্রেনিংয়ের সময় বা শেষে পরীক্ষা নেয়া হবে কি না?
    • কোর্স বা ট্রেনিংয়ে কেমন সময় দিতে হবে?
    • কোর্স বা ট্রেনিংয়ের মেয়াদ কত দিনের?
    • কোর্স বা ট্রেনিংয়ের পর সার্টিফিকেট দেয়া হবে কি না?
    • কোর্স বা ট্রেনিং থেকে কী কী সাপোর্ট দেয়া হবে?
    • কোর্স বা ট্রেনিং নিয়ে পুরানো স্টুডেন্টদের মতামত কী?
    • ট্রেনিং ইন্সটিটিউটে যাওয়া-আসা করতে আপনার কেমন সময় বা খরচ লাগবে?

    অনলাইন কোর্স করে যেভাবে ডিজিটাল মার্কেটিং শিখবেন

    ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে অনলাইন কোর্স করার সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো, শুধু ইন্টারনেট কানেকশন থাকলে যেকোনো জায়গা থেকে দেশি-বিদেশি প্ল্যাটফর্মে ডিজিটাল মার্কেটিং শেখা সম্ভব। আবার যাতায়াতের জন্য আলাদা সময় বা খরচের দরকার হয় না।

    অনলাইনে ডিজিটাল মার্কেটিং কোর্স করার সিদ্ধান্ত নেবার সময় নিচের ফ্যাক্টরগুলো বিবেচনা করুন:

    • কোর্স করার সুবিধা
    • কোর্স ফি
    • কোর্সের লার্নিং ম্যাটেরিয়ালের ফরম্যাট
    • কোর্সের ভাষা
    • কোর্সের মেয়াদ
    • কোর্স অ্যাসাইনমেন্টের ধরন
    • কোর্স চলাকালীন ও কোর্স-পরবর্তী সাপোর্ট
    • কোর্সের সার্টিফিকেট
    • কোর্স ও প্ল্যাটফর্ম নিয়ে কাস্টমারদের রিভিউ

    ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে অনলাইন কোর্স করা মানেই যে টাকা খরচ করতে হবে, তা কিন্তু নয়। ফ্রিতে ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের বেসিকস শেখার জন্য বেশ কয়েকটি অপশন রয়েছে আপনার জন্য। যেমন:

    কোর্স কোর্সের ভাষা
    বহুব্রীহির ডিজিটাল মার্কেটিং বেসিকস ফ্রি কোর্স বাংলা
    Google Digital Garage -এর ‘Fundamentals of Digital Marketing’ কোর্স ইংরেজি
    Google Analytics Academy-এর কোর্স ইংরেজি
    Meta Blueprint কোর্স ইংরেজি
    Ahrefs Academy-এর কোর্স ইংরেজি
    Semrush Academy-এর মার্কেটিং কোর্স ইংরেজি

    ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে ভুল ধারণা

    ফেসবুক মার্কেটিং মানেই ডিজিটাল মার্কেটিং।

    আমাদের দেশে ফেসবুকের ব্যাপক জনপ্রিয়তার কারণে কোম্পানি ও ব্র্যান্ডগুলোর কাছে এটি মার্কেটিংয়ের একটি বড় চ্যানেল। তাই শুধু ফেসবুক মার্কেটিংকেই ডিজিটাল মার্কেটিং হিসাবে ধরেন অনেকে।

    শুধু অ্যাড চালালেই ডিজিটাল মার্কেটিং হয়।

    অধিকাংশ কোম্পানি ও ব্র্যান্ড তাদের ডিজিটাল মার্কেটিং বাজেটের একটা বড় অংশ সেলসের জন্য খরচ করে। এ কারণে ফেসবুক বা গুগলে অ্যাড চালানোকে অনেকে ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের মূল কাজ বলে মনে করেন।

    আপওয়ার্ক-ফাইভারে অ্যাকাউন্ট খুললেই ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের কাজ পাওয়া যায়।

    যেহেতু আপওয়ার্ক-ফাইভারে অল্প টাকার বহু ছোট কাজ থাকে, সেহেতু ডিজিটাল মার্কেটিং দিয়ে ইনকামের সহজ রাস্তা হিসাবে ফ্রিল্যান্সিংয়ের কথা বলেন অনেকেই। অথচ কাজ পাবার জন্য আপনার যে ভালো কোয়ালিটির একটা প্রোফাইল আর পোর্টফোলিও দরকার, সেটা হয়তো আপনাকে কেউ বলে নি। তাই ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্মগুলোতে অ্যাকাউন্ট বানানোর আগেই নিজেকে রেডি করুন।

    ডিজিটাল মার্কেটিং ফ্রিল্যান্সিং করে মাসে লক্ষ লক্ষ টাকা ইনকাম করা যায়।

    ফ্রিল্যান্সিং আর ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের বহু সেমিনারে লক্ষ লক্ষ টাকা ইনকাম করার স্বপ্ন দেখানো হয়। অথচ এ ধরনের ইনকামের জন্য একজন স্কিলড আর স্মার্ট ফ্রিল্যান্সার অনেক সময় দেন, পরিশ্রম করেন আর নিজেকে আপডেটেড রাখেন। লক্ষ টাকা ইনকাম করার আগে তাকে হয়তো ঘণ্টায় ৫-১০ ডলারের কাজই করতে হয়েছে মাসের পর মাস। তাই ডিজিটাল মার্কেটিং ফ্রিল্যান্সিং করে ভালো ইনকামের স্বপ্ন দেখার সময় অন্তত মাথায় রাখুন যে, আপনাকেও পরিশ্রম করতে হবে। ৪ মাস, ৬ মাস বা ১ বছর কাজ করার পরেই হয়তো আপনার মাসিক ইনকাম লক্ষ টাকায় পৌঁছাবে। আবার ইনকাম যে সবসময় সমান বা বাড়তে থাকবে, তাও নয়। 

    ডিজিটাল মার্কেটিং করতে ডেটা অ্যানালিসিস জানার দরকার নেই।

    একটা মার্কেটিং ক্যাম্পেইন কোনো প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের জন্য সরাসরি কতটা লাভ-ক্ষতি নিয়ে আসছে, একটা সময় সেটা হিসাব করা যেতো না। এতে করে মার্কেটিংয়ের বড় ফোকাস ছিলো প্রোমোশনাল ম্যাটেরিয়ালের উপর। এখনো আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে ডেটা-ড্রিভেন (Data-driven) ডিজিটাল মার্কেটিং তুলনামূলকভাবে নতুন। তাই ডিজিটাল মার্কেটিং করতে ডেটা অ্যানালিসিস কতটা জরুরি, সেটা অনেকের জানা নেই।

    বাস্তবতা হলো, আপনি ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের যে কাজই করেন না কেন, আপনাকে কোনো না কোনো ডেটা পয়েন্ট নিয়ে ভালোভাবে জানতে হবে। এর জন্য আপনাকে ডেটা এক্সপার্ট হতে হবে না। এমনকি Microsoft Excel আর Google Sheets-এর সব ফাংশনও জানার প্রয়োজন নেই। একদম বিগিনার লেভেলে আপনাকে শুধু জানতে হবে একটা ডিজিটাল মার্কেটিং ক্যাম্পেইনের মেট্রিকগুলো ঠিকভাবে হিসাব করতে হয়।

    শুধু মোবাইল দিয়ে ডিজিটাল মার্কেটিং করা সম্ভব।

    সোশ্যাল মিডিয়াতে আমরা যেসব কন্টেন্ট দেখি, সেগুলোর একটা বড় অংশ হলো মোবাইল ফোন দিয়ে এডিট করা ফটো আর ভিডিও। এ কারণে অনেকের ধারণা, শুধু স্মার্টফোন দিয়েই ডিজিটাল মার্কেটিং করা যায়। কিন্তু ব্যাপার হলো, ঠিকভাবে ডিজিটাল মার্কেটিং করার জন্য পার্সোনাল কম্পিউটারের কোনো বিকল্প নেই।

    ডিজিটাল মার্কেটিং খুবই সহজ।

    অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের টুলগুলো এখন প্রায় সবার হাতের নাগালে। যেমন, যে কেউ চাইলে কয়েক মিনিটের মধ্যে ফেসবুকে ব্র্যান্ড পেইজ বা গ্রুপ বানিয়ে ফেলতে পারেন। এমনকি দরকার হলে ব্র্যান্ড পেইজ থেকে সরাসরি অ্যাড চালানো সম্ভব। তাই অনেকে মনে করেন যে, কন্টেন্ট বানানো আর পোস্টিং শিখতে পারলেই ডিজিটাল মার্কেটিং শেখা হয়ে গেলো। এ ভুল ধারণার জন্য ডিজিটাল মার্কেটিংকে সহজ মনে করেন তারা।

    ডিজিটাল মার্কেটিং খুবই কঠিন।

    আগেভাগে কাজ না শিখে ডিজিটাল মার্কেটিং করতে গিয়ে অনেকে হতাশ হয়ে পড়েন।

    হয়তো অ্যাডে খরচ বেশি করার পরও সেলস তেমন বাড়ে না।

    সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টগুলোতে এনগেজমেন্ট থাকে না।

    ওয়েবসাইটের অর্গানিক ট্রাফিক খুব কম থাকে।

    এমন পরিস্থিতিতে ডিজিটাল মার্কেটিংকে খুবই কঠিন মনে হওয়া স্বাভাবিক। কোন ক্যাটাগরিতে ফোকাস করলে ভালো রেজাল্ট আসবে, সে ব্যাপারেও কনফিউশন দেখা দেয়।

    এটা ঠিক যে, ডিজিটাল মার্কেটিং সহজ নয়। তাই বলে একে কঠিন মনে করে নিরাশ হবারও কিছু নেই। সময় নিয়ে ধৈর্য সহকারে শিখলে আপনি ডিজিটাল মার্কেটিং করে ভালো ইনকাম নিশ্চিত করতে পারবেন।

    একবার ডিজিটাল মার্কেটিং শেখাই যথেষ্ট।

    ডিজিটাল মার্কেটিং একবার শিখে ফেললে একে বিভিন্ন উপায়ে আপনি অ্যাপ্লাই করতে পারবেন। কিন্তু প্রতিনিয়ত আপনার স্কিলকে ভালো করার চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। নাহলে ইনকামের সুযোগ একটা সময় কমে যাবে। তাই ডিজিটাল মার্কেটিং করার পাশাপাশি নিয়মিত নতুন কিছু শেখার চেষ্টা করুন।

    ডিজিটাল মার্কেটিং শিখতে নতুনদের জন্য পরামর্শ

    • কী কারণে ডিজিটাল মার্কেটিং শিখতে চান – চাকরির জন্য নাকি ব্যবসার জন্য নাকি ফ্রিল্যান্সিংয়ের জন্য, সেটা ঠিক করুন।
    • ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে কী কী শিখতে হয়, সে ব্যাপারে স্পষ্ট ধারণা নিন।
    • কোন ধরনের ডিজিটাল মার্কেটিং দিয়ে শুরু করবেন, তা ঠিক করুন।
    • নিজে নিজে শিখবেন নাকি কোনো ডিজিটাল মার্কেটিং কোর্স করবেন, সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিন।
    • ডিজিটাল মার্কেটিং শেখার জন্য আপনি আসলেই সময় দিতে পারবেন কি না, সে ব্যাপারে নিশ্চিত হোন।
    • ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে নিজেকে আপডেটেড রাখুন।

    কী কারণে ডিজিটাল মার্কেটিং শিখতে চান – চাকরির জন্য নাকি ব্যবসার জন্য নাকি ফ্রিল্যান্সিংয়ের জন্য, সেটা ঠিক করুন।

    একেক জায়গায় ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের কাজ আর শেখার সুযোগ একেক রকম। আপনার উদ্দেশ্য অনুযায়ী তাই শেখার ধরনও আলাদা হবে।

    আপনি যদি নিজের ব্যবসার জন্য ডিজিটাল মার্কেটিং করতে চান, তাহলে আপনার এক্সপেরিমেন্ট করার স্বাধীনতা বেশি থাকে। তাই কোনো স্কিল একবারে আয়ত্ত না করলেও চলে। দরকার অনুযায়ী নিজের স্কিল ডেভেলপ করতে পারবেন।

    আবার ফ্রিল্যান্সিংয়ের ক্ষেত্রে আপনাকে খুব নির্দিষ্ট প্রজেক্টে ফোকাস করতে হয়। ভুল করলে সেটা তাৎক্ষণিকভাবে ইনকাম কমিয়ে দিতে পারে। তাই নির্দিষ্ট স্কিল ভালোভাবে আয়ত্ত করে তবেই অন্য স্কিলে সময় দেয়া উচিত।

    ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে কী কী শিখতে হয়, সে ব্যাপারে স্পষ্ট ধারণা নিন।

    ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে কী কী শেখা দরকার, সে ব্যাপারে একদমই জানা না থাকলে স্কিল ডেভেলপমেন্টের জন্য সময় বেশি লাগবে। আবার কোন স্কিল কতটুকু আয়ত্ত করা যথেষ্ট, সেটাও জানা জরুরি।

    কোন ধরনের ডিজিটাল মার্কেটিং দিয়ে শুরু করবেন, তা ঠিক করুন।

    ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের সব কাজ আপনি একবারে শিখতে পারবেন না। আবার একেক কাজ থেকে ইনকামের সুযোগও আলাদা। তাই যে ক্যাটাগরির স্কিল সবচেয়ে কম সময়ে আয়ত্ত করে ইনকাম নিশ্চিত করতে পারবেন, সে ক্যাটাগরি দিয়েই শুরু করুন।

    নিজে নিজে শিখবেন নাকি কোনো ডিজিটাল মার্কেটিং কোর্স করবেন, সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিন।

    আপনাকেই ঠিক করতে হবে কীভাবে ডিজিটাল মার্কেটিং শিখলে আপনার সুবিধা হবে। নিজে নিজে শিখলে হয়তো টাকা খরচ করতে হবে না তেমন। কিন্তু লার্নিং ম্যাটেরিয়াল নিয়ে অনেক ঘাঁটাঘাঁটি করতে হবে। আবার কোর্স করলে সময়ে বাঁচলেও খরচের ব্যাপার আছে। তাই ডিজিটাল মার্কেটিং শেখার আগে নিজের পরিস্থিতি নিয়ে ভাবুন।

    ডিজিটাল মার্কেটিং শেখার জন্য আপনি আসলেই সময় দিতে পারবেন কি না, সে ব্যাপারে নিশ্চিত হোন।

    নিজে নিজে শিখুন বা কোর্স করুন, আপনাকে ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের উপর নিয়মিত সময় দিতে হবে। অন্তত প্রথম কয়েক মাসের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো আয়ত্ত করতে হবে। তাই প্রতিদিন যদি কমপক্ষে ২-৩ ঘণ্টা সময় ম্যানেজ করতে না পারেন, তাহলে ডিজিটাল মার্কেটিং শেখা কঠিন হয়ে যাবে আপনার জন্য।

    ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে নিজেকে আপডেটেড রাখুন।

    ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে সাফল্য পাবার উপায় নিয়ে আপনাকে প্রতিনিয়ত ভাবতে হবে। সারা বিশ্বের কোম্পানি আর ব্র্যান্ডগুলো কীভাবে ডিজিটাল মার্কেটিং কাজে লাগাচ্ছে, সেটা জানা থাকলে আপনার প্রোমোশনে নতুনত্ব নিয়ে আসতে পারবেন। তাই ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের ব্লগ, ভিডিও, সেমিনার, কেস স্টাডিসহ বিভিন্ন রিসোর্স নিয়মিত ব্যবহার করুন। 

    ডিজিটাল মার্কেটার হতে চান?

    ডিজিটাল মার্কেটিং এক্সিকিউটিভ হিসাবে ক্যারিয়ার শুরু করার জন্য যা কিছু প্রয়োজন, তার সবকিছু শিখে নিন বহুব্রীহির অনলাইন কোর্স থেকে। প্রিরেকর্ডেড ভিডিও আর লাইভ সেশনের কোর্সটি ৬ মাসের মধ্যে শেষ করতে পারবেন।

    এ কোর্সে পাচ্ছেন:

    • কেস স্টাডি ও প্র্যাকটিক্যাল প্রজেক্টের মাধ্যমে ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের দরকারি টুলগুলোর (ফেসবুক, গুগল, ইউটিউব ও ইমেইল) ব্যবহার শেখার সুযোগ
    • ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে আপনার দক্ষতা যাচাইয়ের ব্যবস্থা ও ইন্ডাস্ট্রি প্রফেশনালের কাছ থেকে সরাসরি ফিডব্যাক
    • ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে চাকরির প্রস্তুতি সংক্রান্ত নির্দেশনা
    কোর্সে ভর্তি হোন
    শেয়ার করুন

    1 thought on “ডিজিটাল মার্কেটিং গাইড: বিগিনারদের জন্য”

    Leave a Comment